October 12, 2024, 4:49 pm
নিয়োগবিধি সংশোধন করে বেতন বৈষম্য নিরসনের দাবিতে আগামী বৃহস্পতিবার (২৬ নভেম্বর) থেকে কর্মবিরতিতে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন সারাদেশের স্বাস্থ্য পরিদর্শক, সহকারী স্বাস্থ্য পরিদর্শক ও স্বাস্থ্য সহকারীরা। দাবি পূরণে প্রজ্ঞাপন না হওয়া পর্যন্ত কর্মবিরতি অব্যাহত থাকবে। শুক্রবার (২০ নভেম্বর) জাতীয় প্রেস ক্লাবে সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশ হেলথ্ অ্যাসিসট্যান্ট অ্যাসোসিয়েশন এ ঘোষণা দেয়।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন সংগঠনের আহ্বায়ক শেখ রবিউল আলম খোকন। তিনি বলেন, ‘সত্তরের দশকে পরীক্ষামূলকভাবে সব স্বাস্থ্য সহকারীর শুধু বসন্ত ও ম্যালেরিয়া রোগ নিয়ন্ত্রণের দায়িত্ব এককভাবে প্রদান করা হয়। স্বাস্থ্য সহকারীদের ঐকান্তিক প্রচেষ্টার ফলে দেশ থেকে বসন্ত নির্মূল ও ম্যালেরিয়া রোগ দূর হয়েছে। ১৯৭৯ সালে ৭ এপ্রিল চালু করা হয় সম্প্রসারিত টিকাদানর কর্মসূচি (ইপিআই)। এ কর্মসূচির আওতায় দেশের এক লাখ ২০ হাজার আউটরিচ রুটিন টিকাদান কেন্দ্রের কর্মসূচি এককভাবে স্বাস্থ্য সহকারীদের ওপর ন্যস্ত করা হয়। টিকাদান কর্মসূচির মাধ্যমে স্বাস্থ্য সহকারীরা বর্তমানে ১০টি মারাত্মক সংক্রামিত রোগের (শিশুদের যক্ষ্মা, পোলিও, ধনুষ্টংকার, হুপিংকাশি, ডিপথেরিয়া, হেপাটাইটিস-বি, হিমোফাইলাস ইনফুয়েঞ্জা, নিউমোনিয়া ও হাম-রুবেলা) টিকা প্রদান করেন। আমাদের স্বাস্থ্য সহকারীরাই ২০১৩ সালে ২৫ জানুয়ারি ৯ মাস থেকে ১৫ বছর কম বয়সের ৫ কোটি ২০ লাখ শিশুকে এক ডোজ হাম-রুবেলা টিকা সফলভাবে প্রদান করেন।’
তিনি বলেন, ‘প্রজাতন্ত্রের পদোন্নতি বিধি অনুযায়ী একজন সরকারি কর্মকর্তা বা কর্মচারী ৩ থেকে ৭ বছর পর পর পদোন্নতি পান। কিন্তু একজন স্বাস্থ্য সহকারী ২০ থেকে ২৫ বছরে পদোন্নতি পেয়ে সহকারী স্বাস্থ্য পরিদর্শক হতে পারেন না। যদিও পদোন্নতি পান, তবুও স্বাস্থ্য পরিদর্শক হতে কমপক্ষে ৫ থেকে ৭ বছর অপেক্ষা করতে হয়। অনেকে এমন সময় পদোন্নতি পান, যখন চাকরির বয়স বাকি থাকে মাত্র ৫ থেকে ৬ মাস। আবার পদোন্নতি হলেও বেতন বাড়ে না এক পয়সাও। এ অবস্থায় আমাদের দাবি মেনে নেওয়া না হলে আমরা ২৬ নভেম্বর থেকে কর্মবিরতি পালন করবো।’
স্বাস্থ্য সহকারীদের দাবি, নিয়োগবিধি সংশোধনসহ ক্রমানুসারে স্বাস্থ্য পরিদর্শক, সহকারী স্বাস্থ্য পরিদর্শক ও স্বাস্থ্য সহকারীদের বেতন গ্রেড ১৬তম থেকে যথাক্রমে ১১, ১২ ও ১৩তম গ্রেডে উন্নীতকরণ।
স্বাস্থ্য পরিদর্শক, সহকারী স্বাস্থ্য পরিদর্শক ও স্বাস্থ্য সহকারীদের এই কর্মবিরতির ফলে আগামী ৫ ডিসেম্বর শুরু হতে যাওয়া হাম-রুবেলা ক্যাম্পেইনসহ দেশের এক লাখ ২০ হাজার আউটরিচ রুটিন টিকাদান কর্মসূচি বন্ধ থাকবে বলে তারা জানায়।
এ সময় আরও বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ স্বাস্থ্য বিভাগীয় পরিদর্শক সমিতির সভাপতি দিনেশ চন্দ্র মণ্ডল, বাংলাদেশ স্বাস্থ্য বিভাগীয় মাঠ কর্মচারী অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি আসাদুজ্জামান পান্না, বাংলাদেশ হেলথ ইন্সপেক্টর সেক্টরাল অ্যাসোসিয়েশনের ক্রীড়া সম্পাদক মির আব্দুল কাদের, হেলথ্ অ্যাসিসট্যান্ট অ্যাসোসিয়েশন কেন্দ্রেীয় পরিষদের প্রধান উপদেষ্টা আবুল ওয়ারেশ পাশা পলাশ, কেন্দ্রীয় দাবি বাস্তবায়ন পরিষদের সদস্য সচিব ওয়াসিউদ্দীন রানা, সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক জিয়াউল হাসান কাবুল, সাংগঠনিক সম্পাদক নেজাম উদ্দীন, মুখপাত্র জাকির হোসেন জগলুসহ দেশের ৬৪ জেলা কমিটির নেতারা।
Comments are closed.