December 11, 2023, 11:16 pm

শিরোনাম:
তালার জেয়ালায় এমপি প্রার্থী সৈয়দ দিদার বখত্ এর নির্বাচনী পথ সভা কালিগঞ্জে জনপ্রতিনিধির বাড়িসহ ৩ বাড়িতে চুরি ধরা ছোঁয়ার বাইরে চোরচক্রের সদস্যরা পাইকগাছায় পেঁয়াজের মূল্য বৃদ্ধিতে দুই ব্যবসায়ীকে জরিমানা ডিবি পুলিশের অভিযানে ফেন্সিডিলসহ যুবক আটক কালিগঞ্জের মানুষের ভালোবাসায় সিক্ত হলেন বিদায়ী ইউএনও রহিমা সুলতানা বুশরা বিআরটিএ সাতক্ষীরার উদ্যোগে পেশাজীবী গাড়ি চালকদের প্রশিক্ষণ কর্মশালা আমি সেবক হিসেবে সকলের পাশে থাকতে চাই: এস এম কামাল খুলনায় অভিযান, জরিমানাতেও কমছে না পেঁয়াজের দাম ইলেকট্রিক মোটরযান প্রশিক্ষণ ও ইজিবাইক সার্ভিস লিমিটেডের অফিস উদ্বোধন সাতক্ষীরা সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে ফুলেল শুভেচ্ছা
দেবহাটায় চাঞ্চল্যকর জুয়েল হত্যাকান্ডের রহস্য দেড় মাসেও উদঘাটন হয়নি

দেবহাটায় চাঞ্চল্যকর জুয়েল হত্যাকান্ডের রহস্য দেড় মাসেও উদঘাটন হয়নি

সাতক্ষীরার দেবহাটার চাঞ্চল্যকর জুয়েল হত্যাকান্ডের দেড় মাস অতিবাহিত হলেও এখনও পর্যন্ত হত্যার মোটিভ উদঘাটন বা জড়িত কাউকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী। হত্যার রহস্য উদঘাটনে চলছে তদন্ত। তদন্ত কার্যক্রম তরান্বিত করতে সাতক্ষীরা পুলিশ সুপার শনিবার (১৭ জুলাই) ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। তবে চলমান তদন্তের শুরু থেকেই সন্দেহের তীর নিহতের স্বজনদের দিকেই রয়ে গেছে বলে পুলিশের একাধিক দায়িত্বশীল সূত্র জানিয়েছে।

প্রসঙ্গতঃ গত ২জুন বুধবার রাতে দেবহাটা থানা থেকে মাত্র এক কিলোমিটারের মধ্যে নিজ বাড়ির পুকুরপাড়ে বসে থাকাবস্থায় দুর্বৃত্তদের হাতে নৃশংসভাবে খুন হন আশিক হাসান জুয়েল (৩২)। পরে রাতেই পার্শ্ববর্তী আরেকটি পুকুর থেকে জুয়েলের লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। হত্যাকান্ডের শিকার জুয়েল দেবহাটা সদর পোস্ট অফিস সংলগ্ন এলাকার অন্যতম ধর্ণাঢ্য ব্যক্তি মৃত আনিছুর রহমানের ছেলে।

প্রায় ৩০ বিঘা জমির ভুতুড়ে ভিটাবাড়িসহ অঢেল অর্থ-সম্পদের মালিক জুয়েল বরাবরই বেপরোয়া জীবনযাপন করতেন। মাদকে আসক্তসহ ছিল সঙ্গদোষও। দাম্পত্য জীবনের অবসান ঘটায় মা ও ছোট্ট শিশুপুত্র আরিয়ান (৭)কে নিয়ে বসবাস করতেন ওই বাড়িটিতেই। জুয়েলের বেপরোয়া জীবনযাপন ও একগুয়েমি স্বভাবের কারণে প্রতিনিয়তই সংসারে কলহ লেগেছিল। তার বড়ভাই আর্কিটেক্ট ইঞ্জিনিয়ার মেহেদী হাসান রাজু চাকরি ও ব্যবসার সুবাদে বসবাস করেন ঢাকাতে। জুয়েলকে হত্যার পর তার ভাই রাজু বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা আসামী করে দেবহাটা থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করে।

ঘটনার পরপরই পুলিশ হত্যার সাথে জড়িত সন্দেহে জুয়েলের অন্যতম সহযোগী ইমরোজ আলী ওরফে চোর ইমরোজকে গ্রেপ্তার করে। পাশাপাশি জুয়েলের মা, ভাই রাজু, মামা মনি, স্থানীয় আ’লীগ নেতা ভোলা সহ তার সংস্পর্শে থাকা বাড়ির কাজের ছেলে আলিম, গৃহপরিচারিকা রওশন আরা, কোমরপুরের মিনহাজ, নওয়াপাড়ার হারুন বিশ্বাসসহ ড’জন খানেক ব্যক্তিদের থানায় নিয়ে দফায় দফায় জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিশ।

পুলিশের একাধিক সূত্র জানায়, বেপরোয়া জীবনযাপনের পাশাপাশি নিজের মা, ভাই ও মামার সাথে সবসময় দুর্ব্যবহার করতো জুয়েল। এতে করে সবসময় পারিবারিক কলহ লেগে থাকায় জুয়েলকে নিয়ে বেকায়দায় ছিল তার পরিবারের সদস্যরা। এসব থেকে পরিত্রাণ পেতে একাধিকবার তার মামা মনিসহ পরিবারের লোকজন স্থানীয় চেয়ারম্যান মেম্বরের দ্বারস্থও হচ্ছিলেন। হত্যার পর জুয়েলের আত্মীয় স্বজনসহ তার সংস্পর্শে থাকা সন্দেহভাজন প্রত্যেককে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। পারিবারিক অস্থিরতার কারণে হত্যাকান্ডটি সংঘটিত হয়েছে কিনা তাও পুলিশের পক্ষ থেকে তদন্তে খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলে জানায় সূত্রটি।

পুলিশের অপর একটি সূত্র জানায়, বর্তমানে কারাগারে থাকা ইমরোজ আলী জুয়েল হত্যাকান্ডের অন্যতম প্রধান সন্দেহভাজন। এছাড়া দফায় দফায় জিজ্ঞাসাবাদে জুয়েলের মামা, সাবেক মেম্বর মনি ও স্থানীয় আ’লীগ নেতা ভোলার আচরণ অনেকটা সন্দেহজনক মনে হয়েছে। তবে তাদের বিরুদ্ধে নিহতের পরিবারের কোন অভিযোগ না থাকায় প্রত্যেকবার জিজ্ঞাসাবাদ পূর্ণ হওয়ার আগেই তাদেরকে ছেড়ে দিতে হচ্ছে। এছাড়া মামলার তদন্তকালে নিহতের পরিবারের পক্ষ থেকে অসহযোগিতা দেখা যাচ্ছে বলে মনে করে সূত্রটি।

অপরদিকে এসব অভিযোগ ভিত্তিহীন উল্লেখ করে নিহতের ভাই রাজু বলেন, আমরা তদন্তের অগ্রগতি সম্পর্কে নিয়মিত পুলিশের সাথে যোগাযোগ রেখেছি। কিন্তু হত্যার দেড়মাস অতিবাহিত হলেও অদ্যাবধি আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী হত্যার মোটিভ উদঘাটন বা জড়িতদের কাউকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি।

এদিকে শনিবার (১৭ জুলাই) হত্যাকান্ডের ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন সাতক্ষীরা পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মোস্তাফিজুর রহমান। পরিদর্শনকালে তিনি নিহতের পরিবারের সদস্যদের সাথে কথা বলেন এবং মামলার তদন্ত কার্যক্রম সম্পর্কে খোঁজখবর নেন।

পুলিশ সুপার বলেন, ক্লু-লেস হত্যাকান্ডটির জট খুলতে বিভিন্ন বিষয়কে সামনে রেখে পুলিশ তদন্ত কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে। নিহতের পরিবার থেকে হত্যাকান্ডের বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ তেমন কোন তথ্য না পাওয়ায় এবং কোন প্রত্যক্ষদর্শী না থাকায় হত্যার রহস্য উদঘাটন বিলম্বিত হচ্ছে। তবে দ্রুত সময়ের মধ্যে মোটিভ উদঘাটন সহ হত্যাকারীদের আইনের আওতায় আনতে পুলিশের সর্বোচ্চ প্রচেষ্টা অব্যাহত রয়েছে বলেও তিনি জানান।

এসময় দেবহাটা সার্কেলের সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার এসএম জামিল আহমেদ, মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা পুলিশ পরিদর্শক ফরিদ আহমেদ উপস্থিত ছিলেন।


Comments are closed.

© সাতক্ষীরা প্রবাহ
Design & Developed BY CodesHost Limited