December 13, 2024, 6:37 pm
আজ ভয়াল ১২ নভেম্বর। দেশের স্বাধীনতা অর্জনের আগের বছর ১৯৭০ সালের এই দিনে ভোলাসহ উপকূলীয় অঞ্চলে আঘাত হানে মহা-প্রলয়ঙ্করী ঘূর্ণিঝড় ও জলোচ্ছ্বাস। প্রকৃতির নির্মম ধ্বংসযজ্ঞে প্রাণ হারায় লাখ লাখ মানুষ। সেদিনের সেই নির্মম স্মৃতি নিয়ে আজও টিকে আছে বাংলাদেশ। স্বজন হারানো সেই বিভীষিকাময় দিনটির কথা মনে পড়লে আজও আঁতকে উঠে উপকূলের মানুষ।
ভারতীয় উপমহাদেশের প্রাকৃতিক দুর্যোগগুলোর মধ্যে ১৯৭০ সালের ভয়ঙ্কর সেই ঘূর্ণিঝড়েই সবচেয়ে বেশি মানুষ প্রাণ হারান। ধারণা করা হয়, ১২ নভেম্বরের সেই দুর্যোগে প্রাণ হারিয়েছিল প্রায় ১০ লাখ মানুষ। তার মধ্যে শুধু ভোলা জেলাতেই লক্ষাধিক মানুষের প্রাণহানি ঘটে। অবস্থা স্বাভাবিক হলে সেই সময়কার মেঘনা নদী আর তার শাখা-প্রশাখাগুলো যেন হয়ে উঠে লাশের নদী। সেই ভয়াবহ দৃশ্য আজও ভোলেনি বাংলাদেশ।
জানা গেছে, ১৯৭০ সালের ১২ নভেম্বর ছিল বৃহস্পতিবার। কিন্তু ১১ নভেম্বর বুধবার সকাল থেকেই গুড়িগুড়ি বৃষ্টি হচ্ছিলো উপকূলীয় এলাকাগুলোতে। ১২ নভেম্বর পরিস্থিতি হঠাৎ করেই ভয়ংকর রূপ ধারণ করে। ওই দিন দিবাগত রাতেই ফুঁসে উঠে সমুদ্র। ‘পাহাড়সম’ উঁচু ঢেউ তীব্র বেগে ধেয়ে আসে লোকালয়ের দিকে। প্রায় ৩০/৪০ ফুট উঁচু সেই ঢেউয়ের আঘাতে লণ্ডভণ্ড হয়ে যায় লোকালয়। মুহূর্তেই ভেসে যায় মানুষ, গবাদিপশু, ঘরবাড়ি, ক্ষেতের ফসল। সমুদ্র শান্ত হলে পথে-প্রান্তরে যেখানে-সেখানে পড়ে থাকতে দেখা যায় শুধু লাশ আর লাশ।
সেই ভয়াল ঘূর্ণিঝড়ের নাম দেয়া হয়েছিল গোর্কি। সেদিন কিছু বুঝে উঠার আগেই আঘাত হানে প্রলয়ঙ্কারী এই ঘূর্ণিঝড়। মৃত্যু উপত্যকায় পরিণত হয় উকূলীয় জনপদ। কাফন ছাড়াই দাফন হয় লাখো মানুষের। কোথাও কোথাও একই গর্তে ফেলা হয় মানুষ আর গবাদি-পশুর লাশ। বিরান হয়ে যায় মাঠের পর মাঠ, গ্রামের পর গ্রাম। সেই দুঃসহ ১২ নভেম্বর আজ। জাতীয় জীবনের এক চরম বিভীষিকাময় দিন।
Comments are closed.