April 20, 2024, 8:51 am
এসিডদগ্ধ সোনালী এবার এসএসসি পরীক্ষায় ৪.৯৬ পয়েন্ট পেয়ে এ গ্রেডে উত্তীর্ণ হয়েছে। সে ২০২ সালের এসএসসি পরীক্ষায় পাটকেলঘাটার কুমিরা পাইলট বহুমুখী উচ্চ বালিকা বিদ্যালয় থেকে এসএসসি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে। সোনালি খাতুন (১৯)। তার বয়স এখন ১৯ বছর। মাত্র ১৮ দিন বয়সে মা-বাবার সাথে এসিড আক্রান্ত হয়েছিল ছোট্ট শিশু সোনালী। ১৮ দিনের শিশু সোনালী মা-বাবার কোলের মধ্যে ঘুমিয়ে ছিল রাতে। দূর্বৃত্তরা রাতে অন্ধকারে এসিড ছোড়ে সোনালীর মা ও বাবার শরীরে পিতা-মাতার সাথে এতটুকুন শিশু সোনালীর মুখ, শরীর ঝলসে যায় সেদিন। রাতে। জমিজমা সংক্রান্ত বিষয়কে কেন্দ্র করে সোনালী ও তার বাবা-মা এসিড সন্ত্রাসের শিকার হয়। ২০০২ সালের ১৯ নভেম্বর রাতে ঘটে সোনালীর পুরো পরিবারের উপর এসিড আক্রমণ। সে দিনের সেই ছোট্ট সোনালী পাটকেলঘাটা থানার কুমিরা পাইলট গার্লস হাইস্কুল থেকে এবার (২০২২ সাল) উচ্চ মাধ্যমিক (এসএস)ি পরীক্ষা দিচ্ছে। সোনালী সাতক্ষীরা জেলার তালা উপজেলার নকাটি গ্রামের নুর ইসলাম খোদেজা দম্পতির সন্তান। সোনালির বাবা নুর ইসলামের বাবা এবং চাচা দুই ভাই। নুর ইসামামের চাচার জমির বাঁশঝাঁড় প্রতিবেশির জমিতে পড়া এবং সেই বাঁশ কাটাকে কেন্দ্র করে গোলোযোগের সৃষ্টি হয়। এক পর্যায়ে ওই বাঁশ কাটাকে কেন্দ্র করে তৈরি হওয়া বিরোধে থানায় মামলা হয়।
মামলা করার পরিপ্রেক্ষিতে ঘটনার দিন রাত আনুমানিক ১২টার দিকে দূর্বৃৃত্তরা সোনালী ও তার বাবা-মাকে এসিড নিক্ষেপ করে। এতে তার চোখ-মুখ, মাথা ও ঘাড় ঝলসে যায়, পুড়ে শরীরের একটি বড় অংশ। সোনালীর জীবনে ঘটে যাওয়া সেই ভয়ঙ্কর দিনে তার বয়স ছিল মাত্র ১৮ দিন। তার শরীরের ক্ষত স্থান এখনও চুলকায় ও চোখ দিয়ে পানি ঝরে। সোনালি বর্তমানে দশন শ্রেণির শিক্ষার্থী। রাত ১২টায় এসিড আক্রান্ত হওয়ার পর বাবা-মার সাথে সোনালীকে প্রথমে স্থানীয় মির্জাপুর হাসপাতালে নিয়ে চিকিৎসা দেওয়া হয়। পরে সেখান থেকে তাদেরকে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে তাদের দীর্ঘ মেয়াদী চিকিৎসা হয়। সোনালীকে ঢাকায় এক বছর উন্নত চিকিৎসার আওতায় আনা হয়। এ ঘটনায় থানায় মামলা হয়। মামলার আসামিরা দীর্ঘদিন জেল খাটে। মামলাটি নিষ্পত্তি হয়ে গেছে। মানবাধিকার কর্মী ও স্বদেশ’র নির্বাহী পরিচালক মাধব চন্দ্র দত্ত বলেন, একশনএইড বাংলাদেশ, স্বদেশ ও সেতুবন্ধন গড়ি নেটওয়ার্কের (এসবিজিএন) এবং দেশ-বিদেশের যেসব ব্যক্তি ও সংগঠন এসিড সারভাইভার সোনালীকে এই পর্যন্ত আসতে সহযোগিতা করেছে তাদের প্রতি স্বদেশ’র পক্ষ থেকে কৃতজ্ঞতা। সোনালীর এই সাফল্যে তিনি ও তাঁর সংগঠন সোনালীর উচ্চ শিক্ষালাভে স্বদেশ সবসময় পাথে থাকবে।
Comments are closed.