March 28, 2024, 8:14 pm

Notice :
সাতক্ষীরা প্রবাহ পত্রিকায় নিউজ পাঠানোর ইমেইল: arahmansat@gmail.com
পাসপোর্ট সঙ্কটে ভোগান্তি চরমে

পাসপোর্ট সঙ্কটে ভোগান্তি চরমে

পাসপোর্ট ভোগান্তি চলছেই। দেশ-বিদেশে সমানতালে এ সঙ্কট। পাসপোর্ট অধিদফতরের সার্ভারের যান্ত্রিক ত্রুটি ও বইয়ের অভাবের দরুন সাময়িকভাবে প্রবাসীদের জন্যও পাসপোর্ট সেবা বন্ধ রয়েছে। ফলে চরম দুর্ভোগে পড়েছেন প্রবাসীরা। আপাতত করোনার ওপর সব দায় চাপানো হলেও প্রকৃত ঘটনা হচ্ছে- সঠিক সময়ে সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে না পারার কারণেই এ সঙ্কট তৈরি হয়েছে। কবে নাগাদ তার সুরাহা হবে সেটাও অনিশ্চিত। যদিও বহিরাগমন ও পাসপোর্ট অধিদফতরের নতুন মহাপরিচালক (ডিজি) মেজর জেনারেল মোহাম্মদ আইয়ুব চৌধুরীর দৃষ্টিতে এটা তেমন কোন সঙ্কট নয়, সাময়িক। নানা কারণে এ ধরনের সঙ্কট হতে পারে। এটা কেটে যাবে।

জানা গেছে, গত জুলাই মাস থেকে বিদেশে বাংলাদেশের মিশনগুলোতে নতুন পাসপোর্ট ইস্যু কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে। এমআরপি সার্ভার সঠিক সময়ে হালনাগাদ না করায় পাসপোর্ট তৈরির কাজ থমকে গেছে। একটি সার্ভারে এই পাসপোর্ট ছাপানো হতো। জুন মাসে পাসপোর্ট অধিদফতরের এই ধারণ ক্ষমতা তিন কোটির বেশি সীমা পার হয়। এ কারণে পাসপোর্ট প্রিন্ট বন্ধ। ফলে সৌদি আরব, মালয়েশিয়া, কুয়েত, কাতার, ওমান, জাপান, দক্ষিণ কোরিয়া, সিঙ্গাপুর, মালদ্বীপ, লেবাননসহ সারাবিশ্বে ছড়িয়ে থাকা প্রবাসীদের অনেকেরই পাসপোর্টের মেয়াদ শেষ হয়ে গেলেও আবেদন করেও পাসপোর্ট পাচ্ছেন না। ফলে পাসপোর্টের মেয়াদ উত্তীর্ণ হওয়ার কারণে ভিসার মেয়াদও বাড়াতে পারছেন না। এতে তাদের সেই দেশে গ্রেফতার করা হতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন তারা। আবার পাসপোর্ট না পেয়ে কাজের মেয়াদ বৃদ্ধি করার আবেদনও করতে পারছেন না। কেউ কেউ ছুটিতে দেশে আসতে পারছেন না। রাস্তায় চলাচল থেকে কর্মস্থলেও পড়ছেন ঝামেলায়। উপায়ান্তর না পেয়ে সৌদি আরবে বাংলাদেশ দূতাবাসে মেয়াদোত্তীর্ণ পাসপোর্টের মেয়াদ বাড়ানো হচ্ছে হাতে লিখে। এই পরিস্থিতিতে একের পর এক বিভিন্ন দূতাবাস থেকে জরুরী বিজ্ঞপ্তি দিয়ে প্রবাসীদের কাছে দুঃখ প্রকাশ ও ক্ষমা চাওয়া হচ্ছে। এমন কঠিন সঙ্কটেও সম্প্রতি পাসপোর্ট অধিদফতর থেকে বলা হয়েছে- তেমন কোন সঙ্কট নেই। সবই ঠিক হয়ে যাচ্ছে। অথচ আগারগাঁওয়ে সরেজমিন পরিদর্শনে শত শত মানুষের অভিযোগ পাওয়া যায় পাসপোর্ট নিয়ে। কেউ বলছেন, সার্ভার স্লো হয়ে যাওয়ায় সঠিক সময়ে সেবা মিলছে না। কেউ বলছেন ই-পাসপোর্ট ও এমআরপি উভয়টাতেই সঙ্কট। কেউই স্বাভাবিক গতিতে পাসপোর্ট হাতে পাচ্ছেন না। সাভারের রফিকুল ইসলাম এমন একজন ভুক্তভোগী যিনি দ্রুত সময়ে সৌদি আরবে যাওয়ার জন্য পাসপোর্ট করাতে এসেছিলেন। কিন্তুু সারাদিন অপেক্ষা করে ই-পাসপোর্ট করাতে পারেননি। সার্ভার ডাউন থাকায় সারাদিন অপেক্ষা করার শেষ মুহূর্তে ছবি ও ফিঙ্গার প্রিন্ট দিতে পারেননি তিনি। ফলে আবারও তাকে সাভার থেকে পাসপোর্ট অফিসে আসতে হয়। মানিকগঞ্জের এক যুবক নাম না প্রকাশের শর্তে বলেন-আপনারা সাংবাদিকরা পাসপোর্টের কর্তাব্যক্তিদের সঙ্গে কথা বললে মনে হবে দেশে কোন পাসপোর্ট সঙ্কট নেই। কিন্তু দেখেন কিছুক্ষণ দাঁড়িয়ে পরিস্থিতি কেমন। এখানে উপচেপড়া ভিড়। ভিড় সামলাতে বাধ্য হয়ে অফিসের গেট বন্ধ করা হয়। আবার খোলা হয়। হতে পারে স্বল্প জনবল দিয়ে হঠাৎ করে বেশি মানুষকে সেবা দিতে হিমশিম খাচ্ছেন সংশ্লিষ্টরা।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়- দেশের মতো বিদেশী মিশনগুলোতেও পাসপোর্ট নবায়ন সেবা বন্ধ হয়ে গেছে। এতে বিপাকে পড়েছেন প্রবাসী বাংলাদেশীরা। তাঁরা বলছেন- পাসপোর্টের মেয়াদ না থাকলে মধ্যপ্রাচ্যের দেশ ও মালয়েশিয়ায় যেমন বাংলাদেশী শ্রমিকদের আটক হওয়ার আশঙ্কা থাকে, তেমনি মেয়াদ উত্তীর্ণ পাসপোর্ট নিয়ে ভ্রমণ করা যায় না। জানা গেছে- গত জুনের মাঝামাঝি থেকে এমআরপি সার্ভারে কার্যত কোন তথ্য অন্তর্ভুক্ত করা সম্ভব হচ্ছে না। এতে পাসপোর্ট নবায়ন করা যাচ্ছে না। এতেই বিপাকে পড়েন প্রবাসীরা। এ বিষয়ে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একাধিক সূত্র জানায়-এ সঙ্কট পাসপোর্ট অধিদফতর থেকে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে কিছু জানানো হয়নি। ফলে মন্ত্রণালয়ও মিশনগুলোতে কোন নির্দেশনা পাঠাতে পারেনি। যে কারণে মিশনগুলোও নিজেদের মতো করে বিজ্ঞপ্তি প্রচার করে পাসপোর্ট সেবা বন্ধ রাখার কথা জানিয়েছে। লেবাননে বাংলাদেশ দূতাবাস গত ২৮ জুন এবং চলতি মাসের শুরুর দিকে জাপান, মালয়েশিয়া ও মালদ্বীপে বাংলাদেশের মিশন পাসপোর্ট নবায়নে দেরির বিষয়টি জানিয়ে বিজ্ঞপ্তি দেয়। কবে নাগাদ এ সেবা মিলবে সেটাও জানতে পারছে না প্রবাসীরা। এমনই এক ভুক্তভোগী মালয়েশিয়া প্রবাসী শহীদুল গণমাধ্যমকে জানান- তিনি এ বছরের শুরুতে কুয়ালালামপুরে বাংলাদেশ হাইকমিশনে পাসপোর্ট নবায়নের জন্য আবেদন করেছিলেন। গত ১৮ মার্চ তাঁর নতুন পাসপোর্ট পাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু তিনি এখনও পাসপোর্ট বুঝে পাননি। কবে পাসপোর্ট পাবেন সেটা নিশ্চিত হতে পারছেন না। তার মতো অনেকেই পাসপোর্ট নবায়ন করাতে দিয়ে মাসের পর মাস অপেক্ষায় রয়েছেন।

জানা গেছে, পাসপোর্ট নিয়ে সঙ্কট হঠাৎ একদিনে হয়নি। বিষয়টি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের নজরে আসে গত মাসের প্রথম সপ্তাহে। পাসপোর্টের ক্ষেত্রে এ ধরনের সমস্যা নতুন নয়। আগেও এমনটা হয়েছে। এ বিষয়ে পাসপোর্ট অধিদফতরের একজন দায়িত্বশীল কর্মকর্তা দৈনিক জনকণ্ঠকে বলেন-নীতি নির্ধারকরা সঠিক সময়ে সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে না পারায় এ সঙ্কট তৈরি হয়েছে। প্রতিবছর পাসপোর্টের কি পরিমাণ চাহিদা দেখা দেয় তার বিপরীতে কি পরিমাণ সর্বক্ষণিক প্রস্তুত রাখতে হবে- যান্ত্রিক বা সার্ভার সঙ্কটে পরিস্থিতি কিভাবে মোকাবিলা করতে হয়- সেটার কোন পরিকল্পনা করা হয়নি। এমনকি করোনা চলছে দু’বছর ধরে। এসময়ে পৃথিবীব্যাপী সঙ্কট থাকবে এটা গত বছরের মার্চেই জানা গিয়েছিল। তারপরও আপদকালীন সঙ্কট মোকাবেলায় কি করতে হবে এমন চিন্তাই নীতিনির্ধাকরদের মাথায় আসেনি। যার খেসারত দিতে হয়েছে এখন সাধারণ মানুষকে।

এদিকে বিধিনিষেধের কারণে দীর্ঘদিন বন্ধ থাকার পর আবার পাসপোর্ট অফিসে পুরোদমে কার্যক্রম শুরু হয়। এতে প্রথমদিন অতিরিক্ত মানুষের চাপ সামলাতে দুপুরের দিকে প্রধান ফটক বন্ধ করে দেয়া হয়। পরদিন মানুষের ভিড় আরও বাড়ে। এদিনও একপর্যায়ে মেইন গেট বন্ধ করে দেয়া হয়। আবার তিনদিন বন্ধ থাকার পর শুরু হয় স্বাভাবিক কার্যক্রম। কিন্তু দীর্ঘ সময় সার্ভার ডাউন থাকায় ভোগান্তিতে পড়েন অনলাইনে ই-পাসপোর্ট আবেদনকারীরা। নগরীর জিগাতলা থেকে আসা আরিফুল ইসলাম বলেন, অনলাইনে ই-পাসপোর্ট আবেদন করতে পারিনি আগেরদিন। পরের দিনও একই সমস্যা। জানিনা কখন পাব।

এদিকে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, বর্তমানে যে সঙ্কট তা মূলত যান্ত্রিক। যদিও কর্তৃৃপক্ষ দাবি করেছে-সার্ভার ডাউন যাতে আর না হয় সে বিষয়ে পদক্ষেপ নেয়া হবে। ইমিগ্রেশন ও পাসপোর্ট অধিদফতরের পরিচালক (ই-পাসপোর্ট প্রকল্প) মোঃ সাইদুর রহমান বলেন- লকডাউন ও সাপ্তাহিক ছুটির কারণে মানুষের ভিড় বেশি। ই-পাসপোর্টে মানুষের আগ্রহ অনেক বেশি। সবাই ই-পাসপোর্ট করতে চায়। আমরাও আমাদের সাধ্যমতো সেবা দিয়ে যাচ্ছি। সার্ভার ডাউন প্রসঙ্গে সাইদুর রহমান বলেন, যান্ত্রিকভাবে এটা হয়েছে। এর জন্য আমরা দুঃখিত। সার্ভারে সমস্যা হলে এটা তাৎক্ষণিকভাবে সমাধান করা যায় না। সবাই মিলে কাজ করে এটা সমাধান করা হয়। তবে সামনে এমন সমস্যা যাতে না হয় সেই বিষয়ে পদক্ষেপ নেয়া হবে।

ভুক্তভোগীদের সাথে আলাপ করে জানা যায়- এত সাধের ই-পাসপোর্ট নেয়ার জন্য এত আগ্রহ নিয়ে আসার পরও মিলছে না সময়মতো। বলা হচ্ছে সার্ভার সমস্যা। যার কোন কৈফিয়ৎ নেই কারোর কাছে। যান্ত্রিক ত্রুটির কথা বলা হলে আর কি করার থাকে। এদিকে ই-পাসপোর্ট ছাড়াও মেশিন রিডেবল পাসপোর্ট (এমআরপি) নিয়ে জটিলতা রয়েছে। প্রায় এক দশ আগে এ কাজটি পেয়েছিল মালয়েশীয় প্রতিষ্ঠান আইরিস করপোরেশন। সেখানে তিন কোটি পাসপোর্টের চুক্তি ছিল। তবে সম্প্রতি সেই তিন কোটি আঙুলের ছাপ ছাড়িয়ে যাওয়ার পর নতুন করে আর পাসপোর্ট ছাপা যাচ্ছিল না। ফলে সার্ভারের ত্রুটির কথা উল্লেখ করে সৌদি, কুয়েত, মালয়েশিয়া, মালদ্বীপ, লেবানন, সিঙ্গাপুরসহ কয়েকটি দেশের পাসপোর্ট সেবা সাময়িক বন্ধ রাখার ঘোষণা দেয় সেখানকার হাইকমিশন। পাসপোর্ট অধিদফতরের কর্মকর্তারা বলছেন, ই-পাসপোর্ট উদ্বোধনের পর ধারণা করা হচ্ছিল এই সময়ের মধ্যে পুরোটাই ই-পাসপোর্টে চলে যাবে। কিন্তু করোনার কারণে বিভিন্ন দেশে ই-পাসপোর্টের মেশিন বসাতে না পারায় এখন বাড়তি সময় এমআরপি দিয়ে কার্যক্রম চালাতে হবে। তাই ধারণ ক্ষমতার বেশি পাসপোর্ট ইস্যুর আবেদন পড়ায় নতুন করে প্রিন্ট করা যাচ্ছিল না।

এ বিষয়ে ফোনে জানতে চাওয়া হলে বহিরাগমন ও পাসপোর্ট অধিদফতরের মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মোহাম্মদ আইয়ুব চৌধুরী বলেন- কোন্ সঙ্কট সম্পর্কে জানতে চান। ই-পাসপোর্ট নাকি এমআরপি। সবই চলছে। দুটোতেই কিছু জটিলতা ও কিছুটা ধীরতা রয়েছে। যারা পাচ্ছেন না সময়মতো- হয়ত তাদের নামের বানান ভুল, জন্ম তারিখ ঠিক নেই ইত্যাদি। আবার সার্ভারে কিছুটা ধীরগতিও রয়েছে। এটা তো ন্যাশনাল সার্ভারেও হয়ে থাকে।

পাসপোর্ট অধিদফতরের ব্যাখ্যা ॥ এদিকে পাসপোর্ট অধিদফতরের এক ব্যাখায় বলা হয়- পাসপোর্ট সমস্যা নিয়ে কিছু কিছু বৈদেশিক মিশন বিজ্ঞপ্তি দিয়ে বিদেশে অবস্থানরত বাংলাদেশীদের মধ্যে এবং মিডিয়ায় এ বিষয়ে অতিরঞ্জিত করে প্রকাশ করা হয়েছে। যা অনাকাক্সিক্ষত বলে দাবি করেছে পাসপোর্ট অধিদফতর। এতে আতঙ্কিত হওয়ার মতো কিছুই ছিল না। সফটওয়ার আইডেন্টিফিকেশন সিস্টেমটি পুরোপুরিভাবে কখনও বন্ধ হয়নি-শুধু গতি হ্রাস পেয়েছিল।

বিভিন্ন গণমাধ্যমে পাঠানো ওই ব্যাখ্যায় বলা হয়- অতি পুরাতন এমআরপি সিস্টেমের এ ধরনের সাময়িক প্রতিবন্ধকতা আগে অনেকবার হয়েছে। সেটা সমাধানও করা হয়েছে। ই-পাসপোর্ট পূর্ণ চালু না করা পর্যন্ত মাঝে মাঝে এ ধরনের সাময়িক সমস্যা হওয়া অবান্তর নয়। ইমিগ্রেশন ও পাসপোর্ট অধিদফতর এ বিষয়টি মনিটর করছে। ভবিষ্যতেও করবে এবং এর সমাধানে সর্বক্ষণিক তৎপর রয়েছে। এতে আরও বলা হয়- ই-পাসপোর্ট চালুর লক্ষ্যে জুলাই ২০১৯ সালে ভেরিডোস জিএমবিএইচ, জার্মানির সঙ্গে চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। চুক্তি অনুযায়ী দেশে অবস্থিত ৭২টি অফিস এবং বিদেশস্থ ৮০টি বাংলাদেশ মিশন থেকে ই-পাসপোর্ট ১৮ মাসের মধ্যে চালুর লক্ষ্যমাত্রা ছিল। দেশে অবস্থিত ৭২ অফিসে ই-পাসপোর্ট চালু করা সম্ভব হলেও বিশ্বব্যাপী কোভিড-১৯ মহামারীর কারণে বিদেশস্থ ৮০টি বাংলাদেশ মিশনে কোনটিতেই অদ্যাবধি ই-পাসপোর্ট চালু করা সম্ভব হয়নি। ফলে মিশনসমূহ থেকে মেশিন রিডেবল পাসপোর্ট প্রদান করতে হচ্ছে। এছাড়া মেশিন রিডেবল পাসপোর্ট (এমআরপি) করা হয় এপ্রিল ২০১০ সালে। ফলে স্থাপিত যন্ত্রপাতি ও সিস্টেমসমূহ ১১ বছরের অধিক পুরনো হওয়ায় ওয়ারেন্টি পিরিয়ড ব্যবহার উপযোগিতা অনেক পূর্বেই অতিক্রান্ত হয়। অতি পুরাতন এই এমআরপি সিস্টেমটিকে সচল রাখতে অনেক প্রকার আপগ্রেডেশন কার্যক্রম পরিচালনা করতে হচ্ছে। সিস্টেমটি সচল রাখার জন্য সফটওয়্যার আপগ্রেডেশন, যন্ত্রাংশ আমদানিকরণসহ অনেক রক্ষণাবেক্ষণ কাজ করতে হয়েছে। যেমন ওরাকল সফটওয়্যাার মেইনটেন্যান্স, এমআরপি, এমআরভি সফটওয়্যার মেইনটেন্যান্স, এমআরপি বুকলেট প্রিন্টিংয়ের জন্য পার্সোনালাইজেশন মেশিন মেইনটেন্যান্স, ডাটাবেজ মেইনটেন্যান্স, ডিজাস্টার রিকভারি মেইনটেন্যান্স, নেটওয়ার্ক মেইনটেন্যান্স, সার্ভার মেইনটেন্যান্স, পাসপোর্ট প্রিন্টিং মেশিন মেইনটেন্যান্সয়ের স্পেয়ার পার্টস ক্রয়,পাসপোর্ট প্রিন্টিংয়ের জন্য আইপিআই ক্লিক ও কনজুম্যাবল আইটেম ক্রয় করা হয়েছে।

ফিঙ্গারপ্রিন্ট আইডেন্টিফিকেশনের জন্য এফিস সফটওয়্যার আপগ্রেডেশন এবং পরবর্তী সময়ে রক্ষণাবেক্ষণের জন্য চুক্তি করা হয়েছে। তাছাড়া বিদেশে পাসপোর্ট প্রদানের জন্য অতিরিক্ত ৪০ লাখ এমআরপি বুকলেট সম্প্রতি আমদানি করা হয়েছে। এমআরপি সিস্টেমটি পুরাতন হয়ে যাওয়ায় সময়ে সময়ে যন্ত্রপাতি ও সফটওয়্যার আপগ্রেডেশনের প্রয়োজন হয়। গত মাসের প্রথমদিকে এফিস সফটওয়্যার সিস্টেমে কোটা পূরণ হয়ে সিস্টেমটির গতি হ্রাস পেতে থাকায় এ বিষয়ে জানতে চেয়ে আইআরআইএস করপোরেশন বেরহাদ, মালয়েশিয়াকে চিঠি দেয়া হয়। তখন আইআরআইএস জানায়- সিস্টেমটি পূর্ব হতে সতর্ক সংকেত না দেয়ায় তারা বিষয়টি জানতে পারেনি। তাছাড়া কোভিড-১৯ মহামারীর কারণে তাদের অফিস বন্ধ ছিল। তৎক্ষণাৎ ইমিগ্রেশন ও পাসপোর্ট অধিদফতর থেকে এফিস সফটওয়্যার সিস্টেমটি আপগ্রেডেশন করার জন্য আইআরআইএসের কাছ থেকে প্রস্তাব চাওয়া হয়। প্রস্তাব পাওয়ার পর সকল প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে চুক্তি স্বাক্ষরের লক্ষ্যে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অনুমতি গ্রহণ করা হয়। অনুমতি পাওয়ার পর ঐদিনেই আইআরআইএসের অনুকূলে নোটিফিকেশন অব এ্যাওয়ার্ড ও খসড়া চুক্তিপত্র পাঠানো হয়। কিন্তু আইআরআইএস এই চুক্তির সঙ্গে পূর্ববর্তী কিছু বিষয় সংশ্লিষ্ট করে এবং বিষয়গুলো সমাধান না হওয়া পর্যন্ত চুক্তি স্বাক্ষরে কিছুদিন বিলম্ব করে। অধিদফতরের সর্বক্ষণিক বিভিন্ন সংস্থার সঙ্গে যোগাযোগ ও বার বার প্রতিষ্ঠানটির শীর্ষ পর্যায়ের প্রতিনিধির সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে বিষয়টি নিষ্পত্তি হয়েছে। গত ১১ আগস্ট ইমিগ্রেশন ও পাসপোর্ট অধিদফতর এবং আইআরআইএস কর্পোরেশনের সঙ্গে ভার্চুয়ালি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে। গত ১২ আগস্ট প্রায় ৫ হাজার ও ১৩ আগস্ট ৬ হাজারের অধিক আবেদনপত্র এফিস সফটওয়্যার সিস্টেমে প্রসেস করা হয়েছে। ১৬ আগস্ট এবং ১৭ আগস্ট ২১ হাজার ৬০টি আবেদনপত্রসহ আনুমানিক ১ লাখ ৫০ হাজার আবেদনপত্রের মধ্যে ৪ দিনে সর্বমোট ৩২ হাজার ৬০টি এমআরপি আবেদনপত্র এফিস সফটওয়্যার সিস্টেমে প্রসেস করা হয়েছে। আগামী এক সপ্তাহের মধ্যেই সকল পেন্ডিং আবেদনপত্র নিষ্পত্তি ও এ বিষয়ে আরও অগ্রগতি হবে বলে আইআরআইএস জানিয়েছে।


Comments are closed.

© সাতক্ষীরা প্রবাহ ইমেইল: ‍arahmansat@gmail.com
Design & Developed BY CodesHost Limited
Raytahost Facebook Sharing Powered By : Raytahost.com