ছাত্রলীগের পিটুনিতে নিহত বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদকে তার মা অনেক ত্যাগ ও কষ্টের বিনিময়ে বড় করেছেন বলে তাদের প্রতিবেশী আ আত্মীয়া মাহবুবা খন্দকার জানিয়েছেন। নিহত আবরার ফাহাদ কুষ্টিয়া শহরের পিটিআই রোডের কুষ্টিয়া-৩ সদর আসনের সংসদ সদস্য মাহবুব উল আলম হানিফের বাড়ির পেছনের বাসিন্দা অবসরপ্রাপ্ত ব্র্যাককর্মী বরকত উল্লাহ-রোকেয়া খাতুন দম্পতির বড় ছেলে। তাদের গ্রামের বাড়ি কুমারখালী উপজেলার কয়া ইউনিয়নের রায়ডাঙ্গা গ্রামে।ফাহাদের মা রোকেয়া খাতুন শিক্ষকতা পেশায় যুক্ত। তার সঙ্গে দেখা করে এসে সোমবার মাহবুবা খন্দকার ফেসবুক স্ট্যাটাসে লেখেন,’আবরার ফাহাদ রাব্বি, তোর মাকে দেখতে গিয়েছিলাম ভাই। আমাকে জড়িয়ে এমন কান্নাটা না কেঁদেছে আর বলেছে “১০ দিন বাড়ি ছিল গতকাল আমি ছেলেটাকে নিজে বাসে তুলে দিয়ে এলাম আর বললাম যে খাবারগুলো দিয়ে দিলাম খেয়ে নিস বাবা। পৌঁছে আমাকে ফোন দিয়েছিল। রাত ১০ টার পরে ফোন দিয়ে ওকে পাইনি,ভেবেছি জার্নি করায় ঘুমিয়ে পড়েছে। আমার ছেলে যদি কিছু করেই থাকে আমাকে বললি না কেন, আমি ওকে বুঝিয়ে বলতাম। ও যে আমার কত বাধ্য ছেলে।”কি বলে তাকে সান্ত্বনা দেবো – আমি যে দেখেছি ছেলেদের জন্য সে কী দৌড়াদৌড়ি করেছে, স্কুল, কোচিংসেন্টার, স্যারের বাড়ি। মাস্টার্স ডিগ্রী পাশ করেও চাকরি করেনি ছেলে দুইটা মানুষ করার জন্য। মানুষও করেছে কিন্তু এভাবে তাকে কাঁদতে হবে তা কখনো ভেবেছে কি??ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মেধা তালিকায় ১৩তম, মেডিক্যাল কলেজে ভর্তি হয়েছিল, তারপর বুয়েটে চান্স পেয়ে অন্যগুলো বাদ দিয়েছে। পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়েছে। লেখাপড়া ভিন্ন অন্যচিন্তা যার নেই সেই সন্তানের মা হওয়া কতই না গর্বের। আল্লাহ তোকে জান্নাতবাসী করুন দোয়া করি মনেপ্রাণে। ছোটবেলার তোর ঐ আধো আধো বোল ভীষণ মনে পড়ছে রে।এমন শান্তশিষ্ট ভদ্র প্রখর মেধাবী ছেলেকে যারা হত্যা করেছে তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবী করছি।’পরে ওই স্ট্যাটাসের মন্তব্যের ঘরে তিনি আবরারে মায়ের উদ্ধৃতি দিয়ে আরো লেখেন, ‘আমার ছেলেকে যখন পিটিয়েছে না জানি ও মা মা বলে কতবার চিৎকার দিয়েছে।’