April 26, 2024, 2:58 am

সাংবাদিক আবশ্যক
সাতক্ষীরা প্রবাহে সংবাদ পাঠানোর ইমেইল: arahmansat@gmail.com
নৃশংসতম ক্ষমতার পালাবদল

নৃশংসতম ক্ষমতার পালাবদল

২০০১ সালের আজকের দিনে বিএনপি জামায়াত জোট সরকার ক্ষমতা গ্রহণ করেছিল। গণতান্ত্রিক রাজনীতিতে ক্ষমতার পালাবদল হয় শান্তিপূর্ণভাবে সৌহার্দর মধ্যে দিয়ে। বিরোধী দল সরকারি দলকে ক্ষমতা দিয়ে বিদায় নেয় এবং একটি গণতান্ত্রিক সহমর্মিতা, ভ্রাতৃত্ব এবং সহাবস্থান গণতন্ত্রের জন্য সৌন্দর্য্য। কিন্তু ২০০১ সালের ১ অক্টোবরের পর বাংলাদেশে যে ভাবে ক্ষমতার পালাবদল হয়েছিল তাকে নৃশংসতম ক্ষমতার পালাবদল বলা যায়।

২০০১ সালে আওয়ামী লীগ প্রথম সরকার যারা শান্তিপুর্ণভাবে ক্ষমতা হস্তান্তর করেছিল। আওয়ামী লীগ তার ক্ষমতা শেষ করে জুলাই মাসে র্নিদলীয় নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের হাতে ক্ষমতা দিয়ে দেয়। বিচারপতি লতিফুর রহমান ছিলেন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান এবং বঙ্গভবনে আনুষ্ঠানিক অনাড়ম্বর অনুষ্ঠানের মাধ্যমে এ ক্ষমতার পালাবদল হয়। বাংলাদেশের ইতিহাসে এটি প্রথম একটি সরকার শান্তিপূর্ণভাবে ক্ষমতা হস্তান্তর করে চলে যায়। এর আগে এই ইতিহাস কখনো ছিল না। কিন্তু বিএনপি জামায়াত জোট এই ক্ষমতা হস্তান্তরকে একটি ষড়যন্ত্র হিসেবে ব্যবহার করেছিল। সেটি আওয়ামী লীগতো দূরের কথা দেশবাসিও জানতো না।

লতিফুর রহমান দায়িত্ব গ্রহণের সাথে সাথে বিএনপি জামায়েতের নির্দেশিত পথে দেশ পরিচালনা শুরু করেন। একযোগে ১৩ জন সচিবকে বদলি করা হয় মাত্র ১৩ মিনিটের মধ্যে। এর পর শুরু হয় সারাদেশের আওয়ামী লীগ নেতা কর্মীদের মধ্যে স্টীমরোলার চালানো। বিভিন্ন জায়গায় গ্রেফতার নির্যাতন হয়। নির্বাচনের লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নষ্ট করে দেয়া হয়। এই পরিস্থিতিতে আওয়ামী লীগ ১ অক্টোবরের নির্বাচনে অংশ গ্রহণ করে এবং এই কৌশলের নির্বাচনে বিএনপি জামায়াত জোট বিজয়ী হয়।

পহেলা অক্টোবরের নির্বাচনের ফলাফলের পর ১০ই অক্টোবর বিএনপি জামায়াত জোট শপথ নেন এবং বিচারপতি শাহাবউদ্দিন আহমেদ যিনি আওয়ামী লীগের মনোনিত রাষ্ট্রপতি হিসেবে দায়িত্ব নিয়েছিলেন। তিনি এই শপথ বাক্য পাঠ করান। কিন্তু বাংলাদেশে ১ থেকে ১০ অক্টোবর ছিল একটি কালো অধ্যায়। এ নির্বাচনের ফলাফলের পর থেকে ক্ষমতা গ্রহণের পর পর্যন্ত সময়ে বিএনপি-জামায়াত জোট সারাদেশে ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করে। হাজার হাজার আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীর ওপর নির্যাতন চালানো হয়, হত্যা করা হয়। ধর্ষিত হয় বহু মা বোন। এবং এই সময় সংখ্যালঘু সম্প্রদয় ছিল বিএনপি জামায়াতের টার্গেট। কারন তারা আওয়ামী লীগকে ভোট দেয় এই বিবেচনায় সংখ্যালঘু নিধনেরও এক মহাযজ্ঞ করা হয়। এরকম এক পরিস্থিতে আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের কাছে মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধের জন্য বিচার চাওয়া হয় তখন তারা নিরবতার ভূমিকা পালন করে।

১০ অক্টোবর বেগম খালেদা জিয়া প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব গ্রহণের পর এই অত্যচার নির্মমতা বন্ধ হয়নি। এরপর অপারেশন ক্লিনহার্টসহ নানা রকম অভিযানের মাধ্যমে প্রতিপক্ষ রাজনৈতিক শক্তিকে দমনের যে নৃশংসতম অধ্যায় তা ইতিহাসে একটি কালো অধ্যায় হয়ে থাকবে। এই সময়ে ১০ অক্টোবর বিএনপি জামায়াত ক্ষমতা দখল করে চিরস্থায়ী ক্ষমতায় থাকার বন্দোবস্ত করেছিল। এজন্য একরে পর এক আইন এমনকি সংবিধান সংশোধন করেছিল। কিন্তু ইতিহাসের র্নিমমতায় ১০ অক্টোবরের যে নৃশংসতা সে নৃশংসতার চরম মূল্যে দিতে হয়েছে বিএনপিকে। জনগণের ওপর নিপীড়ন এবং নির্যাতনের ফল এখন বিএনপি ভোগ করছে। এটাই হলো ইতিহাসের র্নিমম শিক্ষা। কেউ জনগণের ওপর বর্বরতা চালালে তার পরিণতি যে কি হয় আজকের বিএনপি হয়তো তার সবচেয়ে বড় প্রমাণ।


Comments are closed.

ইমেইল: arahmansat@gmail.com
Design & Developed BY CodesHost Limited
Raytahost Facebook Sharing Powered By : Raytahost.com