March 13, 2025, 5:53 pm
করোনা ভাইরাসের কারণে মৌসুমের শুরুতে ঢাকাসহ বাইরের পাইকাররা বাজারে না আসায় আম পেড়ে বিপাকে পড়েছেন চাষিরা। আম বাজারে দাম কম থাকায় নেমেছে ধস। উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, তালা উপজেলায় এবার আম চাষ করা হয়েছে ৭১ হেক্টর জমিতে। লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ১২৮৭০ মেট্রিক টন আম। ইতোমধ্যে আম পাড়ার সরকারি নিষেধাজ্ঞা উঠে গেছে। অন্যদিকে গাছে থাকা প্রতিটি আমই ৫০ থেকে ৭৫ ভাগ পেকে গেছে। তবে প্রাকৃতিক দুর্যোগ ঝড়-বৃষ্টির হাত থেকে পরিপক্ক আম রক্ষা করতে উপজেলার আমচাষিরা ক্রেতা ও বাজারের অবস্থা না জেনেই যে যার মতো আম পাড়তে শুরু করেন। এ কারণে আকস্মিকভাবে একসঙ্গে বাজারে আমের আমদানি বেশি পেয়েছে। ক্রেতাশূন্য বাজারে চাহিদার তুলনায় জোগান বেশি হওয়ায় এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে বলে মনে করছেন স্থানীয় পাইকাররা।
আম ব্যবসায়ী এজাহার আলী বলেন, ‘আম পেকে পড়ে যাচ্ছে, গাছে আম রাখা যাচ্ছে না। বাধ্য হয়েই আম পেড়ে বাজারে নিয়ে আসতে হচ্ছে। আম নিয়ে এখন বিপদে আছি। আম বিক্রি না হলে পচে যাবে।’
জুজখোলা গ্রামের আম ব্যাবসায়ী মফিদুল বলেন, ‘আম নিয়ে সকাল থেকে বসে আছি। বাইরের ক্রেতা নেই। কেউ দাম বলছে না। দুই হাজার টাকার আম ৯০০ টাকায় বিক্রি করছেন ক্ষুদ্রচাষিদের অনেকেই। গাছ থেকে আম পেড়ে বিপদে আছি।’ লকডাউনের কারণে আম ঢাকা বা অন্য কোনো জেলায় পাঠানো যাচ্ছে না ।
তিনি বলেন, ‘গত ২০ বছরের মধ্যে এবারই আমের দাম সর্বনি¤œ। আজ গোপালভোগ আম ৯০০ থেকে ১২০০ টাকা ও হিমসাগর ১৪০০ থেকে ২০০০ টাকা মণ দরে বিক্রি হয়েছে। অনেকে আম বিক্রি করতে না পেরে আড়তে রেখে চলে গেছেন।’
তালা উপজেলা আম ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি বলেন, ‘সরকারি নির্দেশনা থাকায় মে মাসের ১৭ তারিখের পর হিমসাগর আম বাজারজাত করার কথা।ঈদের ছুটির পর হঠাৎ করেই প্রথম দিনের বাজারে শত শত টন আম নিয়ে আসেন বাগান মালিকরা। লকডাউনের কারণে যানবাহন চলাচল বন্ধ থাকায় দেশের অন্য অঞ্চল থেকে ক্রেতা আসছে না। বাজারে চাহিদার তুলনায় জোগান বেশি হওয়ায় চাষিরা কাক্সিক্ষত দাম পাননি। ফলে চাষি ও স্থানীয় আম ব্যবসায়ীরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন।’
তালা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা হাজিরা বেগম বলেন, ‘সরকারি নির্দেশনা থাকায় এবার ১৭ মে থেকে হিমসাগর আম পাড়া শুরু হয়েছে। তীব্র গরমে গাছের আম দ্রুত পেকে যাওয়ায় চাষিরা একযোগে গাছ থেকে আম পেড়ে বিক্রি শুরু করেছেন। ২০১৯ সালে তালা উপজেলা হতে ৮০০ কেজি দেশের বাহিরে গিয়েছিল।
এবারও আম দেশের বাহিরে যাবে কিনা বলতে পারছি না। চলমান লকডাউনে বাজারে এবার ক্রেতা কম থাকায় চাষিরা আমের সঠিক দাম পাচ্ছেন না। তবে বাজার পরিস্থিত ভালো হলে চাষিরা আমের ন্যায্যমূল্য পাবেন।’
Comments are closed.