December 26, 2024, 12:54 pm
নিজস্ব প্রতিবেদক: মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সরকারের অন্যতম স্লোগান হচ্ছে গ্রাম হবে শহর। এজন্য অসহায় নেতা কর্মীদের বাড়িতে সৌর বিদ্যুৎ দেওয়ার পাশাপাশি ইউনিয়নের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সড়কের মোড়ে, স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসা, মসজিদ, মন্দির, কররস্থান মোড় ও শ্মশান ঘাটের জন্য প্রতি বছর অসংখ্য সোলার স্ট্রীট লাইট স্থাপনের সিদ্ধান্ত নেয় সরকার। আশাশুনি উপজেলার জন্য বরাদ্দকৃত সোলার স্ট্রীট লাইটের একটি বড় অংশ অন্য ইউনিয়নকে বঞ্চিত করে আশাশুনি উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শম্ভু চরণ মণ্ডল তার নিজের ইউনিয়ন শোভনালীতে অসংখ্য বেশি স্ট্রীট লাইট স্থাপন করেন। তার পছন্দের মানুষের বাড়ির সামনে থেকে শুরু করে যেখানে কোন গণ-মানুষের চলাচল নেই সেখানেও স্থাপন করা হয়েছে। এছাড়াও তিনি তার গ্রামের বাড়ি মজগুর খালিতে বাড়ির ছাঁদে ১০০ শক্তির ৮ টি সোলার প্যানেল বসানো আছে, যার ছবি দৈনিক সাতনদী পত্রিকার হাতে এসেছে। শুধু তাই নয়, তার গ্রামের বাড়ির উঠানে ও তার থেকে ৫০০ ফুট সামনে আরো একটি স্ট্রীট লাইট স্থাপন করেছেন সম্পূর্ণ ক্ষমতায় অপ্রব্যবহার করে। এছাড়াও তিনি গত কয়েক বছর আগে বদরতলা বাজারে কয়েকটি দোকান ও বদরতলা কলেজের পিছনে কয়েক বিঘা জমি ক্রয় করে নতুন বাংলো বানিয়েছেন বলে তিনি নিজেই গল্প করে থাকেন। বদরতলা বাজারে কয়েকটি দোকান মৎস্য আড়ত হিসেবে তার ভাইপোদের দিয়ে ব্যবসা করেন এবং তার পাশে একটি নিজের কার্যালয় বানিয়ে সেখানেও সরকারের এই সোলার স্ট্রীট লাইট স্থাপন করেন নিজের ক্ষমতার দাপট দেখানোর জন্য। বদরতলা বাজার থেকে কাটাখালীতে গত দুই বছর আগে একটা বাড়িসহ ঘের ক্রয় করেন। সেই ঘেরের বাসার সামনেও সোলার স্ট্রীট লাইট স্থাপন করেছেন তিনি। অথচ আশাশুনি উপজেলার অসংখ্য খেয়াঘাট ও গুরুত্বপূর্ণ সড়কের মোড়ে স্ট্রীট লাইট নাই বলে অনেকে আপসোস করেন। বিছট, গোরালী, কোলা, কাকবুশিয়া, চেউটিয়া, পুইজালা, বলাবাড়িয়াতে অসংখ্য খেয়াঘাট আছে, যেখান থেকে অসংখ্য মানুষ রাতে নৌকা যোগে পার হয়ে যাতায়াত করেন উপজেলার বিভিন্ন স্থানে। কিন্তু শম্ভুর একক আধিপত্যের কারণে শোভনালী ইউনিয়নে অপ্রয়োজনীয় স্থানে সোলার স্ট্রীট লাইট স্থাপন করার কারণে গুরুত্বপূর্ণ স্থান বাদ পড়ে যাচ্ছে বলে তৃণমূল নেতাকর্মী অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন। এছাড়াও সরকারি টিউবওয়েল ও ৩ হাজার লিটারের সুপেয় পানির ট্যাংকি নিয়ে অভিযোগের শেষ নাই। সে তার ইউনিয়ন বেশি টিউবওয়েল ও ট্যাংকি নেওয়ার কারণে আশাশুনির উপকূলে যেখানে পানির জন্য হাহাকার সেখানে এগুলো পাচ্ছে না। আশাশুনি উপজেলার এক আওয়ামী লীগ নেতা ও কয়েক বার নির্বাচিত চেয়ারম্যান বলেন যে শম্ভু যদি এগুলো সরকারি যে খরচ সেটা নিয়ে যদি তার ইউনিয়নে বণ্টন করতেন তাহলে সে হয়তো সদ্য ইউপি নির্বাচনে কিছু সংখ্যক ভোট পেতো, কিন্তু সেটা না করে ট্যাংকি ৫ হাজার টাকা ও সরকারি টিউবওয়েল জন প্রতি ১২ হাজার থেকে ১৫ হাজার টাকা পর্যন্ত নিয়েছেন। এজন্য সদ্য ইউপি নির্বাচনে নৌকা প্রতীক পেয়েও নেতা কর্মীদের অসন্তোষের মুখে পড়ে অনেক ভোট কম পেয়েছেন। তাছাড়া প্রতাপনগর ইউনিয়নে চেয়ারম্যান ও ঐ ইউনিয়নে আওয়ামী লীগের সভাপতি জাকির হোসেনকে বাদ দিয়ে গত দেড় বছর আগে শম্ভুর সাথে সেই সময়ে পরিচিত হওয়া মিলন বিশ্বাসের দিয়ে ১৭ টি টিউবওয়েল বিক্রি করে ঐ এলাকায়। এই বিষয় নিয়ে উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শম্ভু চরণ মণ্ডলের সাথে সেই সময়ে শেখ জাকির হোসেনের সাথে তার সম্পর্ক নষ্ট হয়ে যায় বলে জানিয়েছেন অনেকে। আশাশুনি উপজেলা এক যুবলীগ নেতা আক্ষেপ করে বলেছেন যে, আমাকে তিন বছর আগে একটি ট্যাংকি দিবে বলে জানান। পরবর্তীতে যখন তার কাছে ৫ হাজার টাকা জমা দিতে বলেন তখন আমার মন খারাপ হয়ে যায়।” সেই যুবলীগ নেতা জনস্বার্থ প্রকৌশল অধিদপ্তর থেকে জানতে পারে যে, সরকারি অফিসে মাত্র ১৬ শ টাকা জমা দেওয়া লাগে, বাকিটা শম্ভুর পকেটে চলে যায়। এ বিষয়ে শম্ভু চরণ বলেন, আমি এগুলা রুহুল হক স্যারের কাছ থেকে চেয়ে নিয়েছি।
Comments are closed.