উৎসবের নগরিতে পরিনত বেনাপোল
- Update Time :
Wednesday, July 17, 2019
-
259 দেখা হয়েছে
অনেক জল্পনা কল্পনার অবসান ঘটিয়ে উৎসব আনুষ্টানিকতায় ঢাকা-বেনাপোল নতুন রেল বেনাপোল এক্সপ্রেস উদ্বোধন করা হয়েছে। বুধবার ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গণভবন থেকে পতাকা নেড়ে শুভ উদ্বোধন করেন। ঢাকা-বেনাপোল নতুন রেল বেনাপোল এক্সপ্রেস উদ্বোধন অনুষ্টানে বেনাপোল রেল ষ্টেশনে উপস্থিত ছিলেন এমপি শেখ আফিল উদ্দিন, মেজর জেনারেল নাসির উদ্দিন এমপি, রেল মহাপরিচালক মো: সামসুজামান, কাষ্টম কমিশনার বেলাল হুসাইন চৌধুরীসহ প্রশাসন জনপ্রতিনিধি রাজনৈতিক নেতাকর্মিসহ বিভিন্ন এলাকা থেকে আসা কয়েক হাজার মাুনষ। উদ্বোধন অনুষ্টান নানান শ্রেণী পেশার মানুষের মিলন মেলায় পরিনত হয়। বেলা ১টায় বেনাপোল থেকে ঢাকার উদ্দেশ্যে ছেড়ে যায় রেল টি। এসময় হাত নেড়ে অভিবাদন জানান স্থাণীয়রা।প্রধানমন্ত্রীর সাথে ভিডিও কনফারেন্সে স্থানীয় ব্যবসায়ি ও শিক্ষার্থীরা কথা বলেন। সপ্তাহে ৬দিন চলবে রেলটি। স্বল্প সময়ে অল্প খরচে রেল ভ্রমন করতে পাবে দেশ বিদেশের মানুষ। বিশেষ করে বেনাপোল দিয়ে ভারতের সাথে যোগাযোগ ব্যবস্থায় আরো উন্নতি ঘটবে। সম্প্রসারিত হবে রেল যোগাযোগ সহ যশোর বেনাপোল রেল লাইন ও ষ্টেশন। বেনাপোলে একটি ওয়াগন ষ্টেশনের দাবী কাষ্টম কর্মকর্তারা। বেনাপোল থেকে ছেড়ে যাওয়া পুরো রেল গাড়িটি সাজানো হয় ফুল ও রঙিন কাপড় দিয়ে। খুশি এলাকার মানুষ। স্বাগত ও ধন্যবাদ জানান প্রধানমন্ত্রীকে।
কাষ্টম হাউজ বেনাপোল কমিশনার বেলাল হোসেন চৌধুরী বলেন দু দেশের মধ্যে বানিজ্যকে আরো এগিয়ে নিতে কন্টিনার ষ্টেশন নির্মাণ দরকার। বেনাপোলে বন্দর কাষ্টম বিজিবি আনসার আর্মড পুলিশ সহ বিভিন্ন সুযোগ সুবিধা রয়েছে। কন্টিনার ষ্টেশন চালু হলে বাড়বে রাজস্ব। ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে বাড়বে আমদানি রপ্তানি। সৃষ্টি হবে নতুন নুতন ক্ষেত্র। বাংলাদেশ রেল মহা পরিচালক মো: সামসুজামান বলেন পদ্মা সেতুর কাজ শেষ হলেই ২০২৩ সাল নাগাদ অনেক কিছুর পরিবর্তন হবে। যশোর বেনাপোল রেল লাইন ও ষ্টেশন আধুনিক করা পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে বলে জানান তিনি।উল্লেখ্য, আনন্দঘন পরিবেশে ব্যাপক উৎসাহ উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে উদ্বোধনের পর পরই আনুষ্ঠানিকভাবে যাত্রা শুরু করল বেনাপোল-ঢাকা রুটে দেশের প্রথম প্রতিবন্ধী বান্ধব বিরতিহীন ট্রেন ‘বেনাপোল এক্সপ্রেস’। বুধবার বেলা ১২টা২২ মিনিটে ঢাকার গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সে যুক্ত হয়ে নতুন এই ট্রেনের উদ্বোধন করলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বেনাপোল রেলওয়ে স্টেশনে স্থানীয় সংসদ সদস্য শেখ আফিল উদ্দিন, ঝিকরগাছার এমপি ডা অধ্যাপক নাসির উদ্দিন, বাংলাদেশ রেলওয়ের মহাপরিচালক শামসুজ্জামান, রেলপথ মন্ত্রণালয়ের সচিব মোফাজ্জেল হোসেন, শার্শা উপজেলা চেয়ারম্যান সিরাজুল হক মঞ্জুসহ আওয়ামী লীগ নেতৃবৃন্দ ও ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সংযুক্ত ছিলেন। উদ্বোধনের পর বেলা একটায় ট্রেনটি বেনাপোল থেকে ঢাকার উদ্দেশে ছেড়ে গেল। তবে এই যাত্রায় বাংলাদেশ রেলওয়ের মহাপরিচালক শামসুজ্জামানের নেতৃত্বে সরকারি কর্মকর্তারা ছিলেন। বেলা সাড়ে ১২টা পর্যন্ত ১০৪টি টিকিট বিক্রি হয়েছে বলে বেনাপোল রেল ষ্টেশন মাস্টার সাইদুজ্জামান জানিয়েছেন। ইতিহাসের সাক্ষী হিসেবে ট্রেনটির চালক ছিলেন বেনজির আহম্মদ। বেনাপোল এক্সপ্রেসে রয়েছে নতুন ১২টি কোচ, তার মধ্যে দুটি শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত। প্রচলিত সুইং ডোরের পরিবর্তে এসব কোচে রয়েছে নিরাপদ স্লাইডিং দরজা। দেশের প্রথম প্রতিবন্ধী বান্ধব এই ট্রেনে প্রতিবন্ধী যাত্রীদের জন্য হুইল চেয়ারের ব্যবস্থা রয়েছে।বাংলাদেশ রেলওয়ের পশ্চিমাঞ্চলের প্রধান পরিবহন তত্ত্বাবধায়ক মোহাম্মদ শাহ নেওয়াজ বলেন, ৮৯৬ আসনের এই ট্রেন প্রতিদিন বেনাপোল স্টেশন থেকে ছেড়ে যশোর, ঈশ্বরদী জংশন ও ঢাকা বিমানবন্দরে যাত্রী ওঠানো-নামানোর জন্য সাময়িক বিরতি দিয়ে শেষ গন্তব্যস্থল কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশনে গিয়ে থামবে। এ ট্রেনের শোভন চেয়ারের ভাড়া ৫৩৪ টাকা, তাপানুকূল চেয়ার ১০১৩ টাকা, তাপানুকূল প্রথম শ্রেণি ১২১৩ টাকা এবং তাপানুকূল বার্থ টিকেটের দাম রাখা হয়েছে ১৮৬৯ টাকা।শাহ নেওয়াজ বলেন, নতুন এই ট্রেনে ঢাকা থেকে বেনাপোল যেতে সময় লাগবে আট ঘণ্টা। বেনাপোল থেকে দুপুর ১টায় ট্রেনটি ছাড়বে, ঢাকায় পৌঁছাবে রাত ৯টায়। আবার রাত ১২টা ৪০ মিনিটে ঢাকার কমলাপুর থেকে ছেড়ে সকাল ৮টা ৪৫ মিনিটে বেনাপোল পৌঁছাবে।ট্রেনের যাত্রী নাভারনের মোখলেছুর রহমান, রুমেল সরদার ও বেনাপোল পৌর কাউন্সিলার মিজানুর রহমান বলেন, এটি একটি যুগান্তরকারি পদক্ষেপ। পরিবহনের (বাস) চেয়ে ট্রেনে যাতায়াত নিরাপদ ও আরামদায়ক। ট্রেনে যাতায়াত করতে সবাই স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করেন। এই ট্রেনের যাত্রী হতে পেরে নিজেকে গর্বিত মনে হচ্ছে।বেনাপোলের বিশিষ্ট সিএন্ডএফ ব্যবসায়ী হাফিজুর রহমান বলেন, ইতিহাসের স্বাক্ষী হতেই এই ট্রেনের যাত্রী হয়েছি।রেলে চড়ে খুশি যাত্রীরা। এধরনের রেল বৃদ্ধি করলে বেনাপোল দিয়ে ভারত বাংলাদেশ যাত্রী গমনাগমন সহ ব্যাবসা বাড়বে বরে জানান সিএন্ডএফ ব্যবসায়ি মতিয়ার রহমান ও মফিজুর রহমান সজন। তবে রেল ভবন আধুনিকায়ন ও জায়গা সম্প্রসারণ চান তারা।