October 31, 2024, 3:12 am
এমবিবিএস ২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষের ভর্তি পরীক্ষায় ঈর্ষণীয় সাফল্য পেয়েছে ঠাকুরগাঁও সরকারি কলেজের শিক্ষার্থীরা। প্রতিষ্ঠানটি থেকে এ বছর ১৫ জন মেডিকেলে ভর্তির সুযোগ পেয়েছেন।রোববার (১১ ফেব্রুয়ারি) এমবিবিএস প্রথম বর্ষের ভর্তি পরীক্ষার ফল প্রকাশের পর কলেজ সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে। জানা যায়, চলতি বছর ঠাকুরগাঁও সরকারি কলেজ থেকে এইচএসসি পরীক্ষায় বিজ্ঞান বিভাগ থেকে ৩৫০ জন শিক্ষার্থী অংশ নিয়ে জিপিএ-৫ পান ১৫১ জন। এর মধ্যে এবার ১৫ জন শিক্ষার্থী সরকারি মেডিকেল কলেজে ভর্তির সুযোগ পেয়েছেন। মেডিকেলে ভর্তির সুযোগ পাওয়া শিক্ষার্থীরা হলেন- খুশি আক্তার (ঢাকা মেডিকেল কলেজ), মো. সিয়াম (ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ), মো. মাহমুদুল হাসান (ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ), মো. মাশরাফী (সিলেট মেডিকেল কলেজ), মোছা. মাইসার (রাজশাহী মেডিকেল কলেজ), উৎপল রায় (যশোর মেডিকেল কলেজ), মোছা. মিতু আক্তার (রংপুর মেডিকেল কলেজ), উম্মে রুবাইয়া (শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ), প্রাপ্তি (কুষ্টিয়া মেডিকেল কলেজ), নুপুর (রাজশাহী মেডিকেল কলেজ), শিমু (বঙ্গবন্ধু মেডিকেল কলেজ, সুনামগঞ্জ), মমতাজ আক্তার (রংপুর মেডিকেল কলেজ), মনা (কুষ্টিয়া মেডিকেল কলেজ), মিরাজ চৌধুরী (সিলেট মেডিকেল কলেজ) এবং সুরফা (আব্দুল মালেক উকিল মেডিকেল কলেজ, নোয়াখালী)। উম্মে রুবাইয়া বলেন, আমাদের কলেজের অধ্যক্ষের সঠিক নির্দেশনায় আমাদের স্যাররা নিয়মিত ক্লাস নিতেন এবং ক্লাসেই বিভিন্ন ধরনের কুইজের ব্যবস্থা করতেন। যার ফলে আমাদের যে শিক্ষার মান সেটা অনেক ভালো ছিল। সেজন্য আমাদের কলেজ থেকে এবার ১৫ জন শিক্ষার্থী মেডিকেল কলেজে চান্স পেয়েছে। এই চান্স পাওয়ার পেছনে আমাদের শিক্ষক, মা-বাবাসহ সবারই অবদান রয়েছে।
মিরাজ চৌধুরী বলেন, আমাদের কলেজের প্রথম বর্ষ থেকেই ভালো করে পড়াত। শিক্ষকরা মূল বই বেশি করে পড়াতেন। যার জন্য আমাদের মেডিকেলে পরীক্ষা দেওয়াটা অনেক সহজ হয়েছে। কলেজটি থেকে প্রতি বছর উত্তীর্ণ বিপুলসংখ্যক শিক্ষার্থী শুধু মেডিকেল কলেজ নয় রুয়েট, কুয়েট ও চুয়েটসহ বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়েও ভর্তির সুযোগ পান। এবার রেকর্ড পরিমাণ শিক্ষার্থী মেডিকেল কলেজে ভর্তির সুযোগ পাওয়ায় ঠাকুরগাঁও সরকারি কলেজের শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের মধ্যে আনন্দ বিরাজ করছে। ঠাকুরগাঁও সরকারি কলেজের রসায়ন বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মো. হুমায়ুন কবীর বলেন, ১৫ জন শিক্ষার্থী ঠাকুরগাঁও সরকারি কলেজ থেকে বিভিন্ন মেডিকেল কলেজে চান্স পেয়েছে। এটা আমাদের জন্য একটি গর্বের বিষয়। আর এটা সম্ভব হয়েছে আমাদের অধ্যক্ষ মহোদয়ের বিশেষ দিকনির্দেশনায়। তিনি ৩০ জনের গ্রুপ করে যত্নসহকারে পড়াতেন। এ ছাড়া আমরা (শিক্ষক) যারা রয়েছি তারা শিক্ষার্থীদের বিভিন্নভাবে দিকনির্দেশা দিয়েছি। ঠাকুরগাঁও সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর মো. আব্দুল জলিল বলেন, ঠাকুরগাঁও সরকারি কলেজ উত্তরবঙ্গের ঐতিহ্যবাহী একটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। বরাবরই এই কলেজের শিক্ষার্থীরা ভালো ফল করেন। বিশ্ববিদ্যালয়, মেডিকেল ও ইঞ্জিনিয়ারিংসহ বিভিন্ন পাবলিক পরীক্ষায় শিক্ষার্থীরা মেধার স্বাক্ষর রাখেন। সুশৃঙ্খল পরিবেশ, পাঠদানে শিক্ষকদের আন্তরিকতা এবং কঠোর তদারকির ফলে এ বছর আমাদের কলেজ থেকে ১৫ জন শিক্ষার্থী মেডিকেলে পড়ার সুযোগ পেয়েছে। মূলত শিক্ষার্থী, শিক্ষক ও অভিভাবকদের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় এ বছর মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষায় এ সফলতা অর্জন সম্ভব হয়েছে। প্রসঙ্গত, ঠাকুরগাঁও সরকারি কলেজটি উত্তরাঞ্চলের একটি ঐতিহ্যবাহী শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। এটি জেলার প্রাণকেন্দ্রে অবস্থিত। বেসরকারিভাবে কলেজটি ১৯৫৯ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়। পরে ১৯৮০ সালের ১ মার্চ সরকারিকরণ হয়। এখানে ১৯৬২ সালে উচ্চ মাধ্যমিক ও ১৯৬৩ সালে পূর্ণাঙ্গ ডিগ্রি পাস কোর্স চালু হয়। এই কলেজে উচ্চ মাধ্যমিক মানবিক, বিজ্ঞান, ব্যবসায় শিক্ষা এবং ডিগ্রি পাস (বিএ/বিএসএস/বিএসসি ও বিবিএস) কোর্সসহ ১৯৯৭-১৯৯৮ শিক্ষাবর্ষে ৪টি (অর্থনীতি, গণিত, হিসাববিজ্ঞান ও রাষ্ট্রবিজ্ঞান), ১৯৯৮-১৯৯৯ শিক্ষাবর্ষে ছয়টি (বাংলা, ইংরেজি, ব্যবস্থাপনা, ইসলামের ইতিহাস, উদ্ভিদবিজ্ঞান এবং প্রাণিবিজ্ঞান), ২০১০-২০১১ শিক্ষাবর্ষে দুইটি (ইতিহাস ও দর্শন) এবং ২০১১-২০১২ শিক্ষাবর্ষে দুইটি (পদার্থবিজ্ঞান ও রসায়ন)-সহ মোট ১৪টি বিষয়ে অনার্স কোর্স চালু আছে। বিভিন্ন পর্যায়ে বর্তমানে কলেজটিতে ১২ হাজার ছাত্র-ছাত্রী পড়ালেখা করছে।
Comments are closed.