July 27, 2024, 7:00 am
সরকারি হাসপাতালে প্রথমবারের মত প্রচলিত ওপেন হার্ট সার্জারির পরিবর্তে বুকের পাঁজরের হাড় না কেটে ১২ বছরের নূপুরের হৃদযন্ত্রে থাকা জন্মগত ছিদ্রের চিকিৎসার পর এবার একই পদ্ধতিতে এক রোগীর হার্টে সফলভাবে বাইপাস সার্জারি করেছেন চিকিৎসকরা।৪০ বছর বয়সী মো. মতিন নামের এক রোগীর হার্টে থাকা দুটি ব্লকের চিকিৎসায় ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব কার্ডিওভাসকুলার ডিজিজ (এনআইসিভিডি) হাসপাতালে মিনিমাল ইনভেসিভ কার্ডিয়াক সার্জারির (এমআইসিএস) মাধ্যমে এ বাইপাস সার্জারি করা হয়। এবারের সার্জারিতেও অংশ নেন নূপুরের অস্ত্রোপচারে অংশ নেওয়া বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা।ডা. আশ্রাফুল হক সিয়ামের নেতৃত্বে মিনিমাল ইনভেসিভ কার্ডিয়াক সার্জারির (এমআইসিএস) মাধ্যমে পাঁজরের হাড় না কেটে একটি ছিদ্রের মাধ্যমে ওই রোগীর মিনিমাল ইনভেসিভ ডিরেক্ট করোনারি আর্টারি বাইপাস করা হয়। সোমবার (০২ সেপ্টেম্বর) এ অপারেশনের মাধ্যমে রোগী মো. মতিনের হার্টে থাকা দুটি ব্লকের জন্য বাইপাস সম্পন্ন হয়।অপারেশনের পর মো. মতিন ভালো আছেন বলে বাংলানিউজকে জানান চিকিৎসক আশ্রাফুল হক সিয়াম। তিনি বলেন, রোগী অনেক ভালো আছেন, হাঁটতে ও চলাফেরা করতে পারছেন।ডা. সিয়াম বলেন, অপারেশনের তিন দিনের মাথায় রোগী বাসায় চলে যাওয়ার উপযোগী ছিলেন। তবে বাড়তি সর্তকতা হিসেবে হাসপাতালে ছিলেন তিনি। শনিবার (০৭ সেপ্টেম্বর) সকালে মো. মতিন হাসপাতাল থেকে রিলিজ নিয়ে বাসায় যাবেন।এর আগে মৌলভীবাজারের মো. মতিন তার হার্টে (হৃদযন্ত্র) থাকা দুটি ব্লক নিয়ে জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউট হাসপাতালে ভর্তি হনমতিনের অপারেশনে ডা. আশ্রাফুল হক সিয়ামের সঙ্গে অংশ নেওয়া চিকিৎসকরা হলেন ডা. আসিফ, ডা. রুমু, ডা. শাহরিয়ার, ডা. ইসরাত, ডা. ওয়াহিদা, ডা. মনজুর, ডা. মইনুল ও ডা. আহসানারা। পারফিউশানে (রক্তসঞ্চালন) ছিলেন ডা. রুবাইয়াত এবং এনেস্থেসিয়ায় (অচেতন করা) ছিলেন ডা. আজাদ ও ডা. রাজু।এর আগে গত ২৫ আগস্ট (রোববার) প্রচলিত ওপেন হার্ট সার্জারির পরিবর্তে বুকের হাড় না কেটে হার্টে (হৃদযন্ত্র) অপারেশন করা হয়েছিল ১২ বছরের বালিকা নূপুরের। বাংলাদেশের কোনো সরকারি হাসপাতালে প্রথমবারের মত ওই সফল অস্ত্রোপচারের পর মাত্র চারদিনের মাথায় হাসিমুখে বাসায় ফেরে নূপুর। তার হার্টের ওপরের দু’টি চেম্বারে জন্মগত ছিদ্র ছিল।মিনিমাল ইনভেসিভ কার্ডিয়াক সার্জারি (এমআইসিএস) হলো কার্ডিয়াক সার্জারির সবচেয়ে আধুনিক চিকিৎসা। এ প্রক্রিয়ায় বুকে ওপেন হার্ট সার্জারির পরিবর্তে ছোট একটি ছিদ্রের মধ্য দিয়ে অস্ত্রোপচার করা হয়। এক্ষেত্রে, চিকিৎসকরা বুকের হাড় অর্থাৎ স্টানার্ম না কেটে পাঁজরের দু’টি হাড়ের (রিবস) মধ্য দিয়ে অস্ত্রোপচার করেন। এতে সাধারণত ইনফেকশনের ঝুঁকি কম থাকে, রক্তক্ষরণের ঝুঁকিও কম, অস্ত্রোপচার পরবর্তী অস্বস্তি কম হয়, ক্ষত দ্রুত চলে যায়, রোগী তাড়াতাড়ি হাসপাতাল থেকে রিলিজ নিয়ে বাসায় যেতে পারেন।
Comments are closed.