মি. রাজু স্টাফ রিপোর্টাসঃএসিড সন্ত্রাসের শিকার নারী পুরুষ সমাজের বোঝা নয়। তাদেরকে যথাযথ পুনর্বাসনের মাধ্যমে সমাজের এক একজন কর্মীর হাত হিসেবে গড়ে তোলা সম্ভব। একই সাথে এসিড সন্ত্রাসকারীদের কোনো ক্ষমা নয়। তাদের সাথে আপোষ মীমাংসাও নয়। আইনে যথাযথ বিচারের আওতায় আনাই জরুরি।বৃহস্পতিবার সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবে এসিড আক্রান্তদের নিয়ে ‘সেতু বন্ধন গড়ি নেটওয়ার্ক’এর এক সাধারণ সভায় এসব কথা বলেন আয়োজকরা। তারা বলেন, যারা এসডি সন্ত্রাস সৃষ্টি করে ফায়দা লুটবার চেষ্টা করে তারা সমাজ রাষ্ট্র ও জনগণের শত্রু। তাদের চিহ্নিত করে আইন আমলে আনাটা খুবই জরুরী। বর্তমান সময়ে সাতক্ষীরায় এসিড সন্ত্রাস হ্রাস পেয়েছে জানিয়ে সভায় বলা হয় ২০০১ সাল থেকে ২০১২ সাল পর্যন্ত সাতক্ষীরা জেলায় ১৫৮টি এসিড হামলার ঘটনা ঘটেছে। এতে শারীরিকভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছেন ১১১ নারী ও ৪৭ জন পুরুষ। প্রেম ভালবাসা, জমিজমা কিংবা অন্য কোনো বিষয়ে ঈর্ষান্বিত হয়ে সন্ত্রাসীরা এই হামলা চালায়। সাতক্ষীরার আদালতে এখন পর্যন্ত ২১টি মামলা নিষ্পত্তির অপেক্ষায় রয়েছে জানিয়ে বক্তারা বলেন, একটি প্রভাবশালী মহল এই সন্ত্রাসের নৃশংস শিকারদের মীমাংসার জন্য চাপ প্রয়োগ করে। এমন অবস্থায় সামাজিক ও পারিবারিক চাপের মুখে পড়ে যায় এসিড আক্রান্তরা। ফলে বিচার হয়ে পড়ে বিলম্বিত।সভায় আরও বলা হয় ভারত থেকে বাংলাদেশে এসিড চোরাচালান বন্ধে কড়াকড়ি ব্যবস্থা নিতে হবে। এ ছাড়া বাজারে এসিডের সহজলভ্যতা দুর করতে হবে। বিশেষ করে ব্যাটারি তৈরি ও জুয়েলারিতে এসিডের ব্যবহার আইনগতভাবে নিয়ন্ত্রণ করা জরুরি।সেতু বন্ধন নেট ওয়ার্ক সভাপতি শেখ আজহার হোসেনের সভাপতিত্বে সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবের শহিদ স. ম আলাউদ্দিন মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত সভায় আরও বক্তব্য রাখেন অধ্যক্ষ আবদুল হামিদ, সাতক্ষীরা প্রেসক্লাব সভাপতি অধ্যাপক আবু আহমেদ, অ্যাকশন এইডের ম্যানেজার প্রিয়ংবদা পিয়া চাকমা, প্রেসক্লাব সেক্রেটারি মমতাজ আহমেদ বাপী, প্রথম আলোর কল্যান ব্যনার্জি, সমাজ সেবা অফিসার শেখ শহিদুর রহমান, সমাজ কল্যাণ বিভাগের মো. মিজানুর রহমান, এড. নাজমুন নাহার ঝুমুর, স্বদেশ পরিচালক মাধব চন্দ্র দত্ত, সাবেক পৌর কাউন্সিলর ফরিদা আকতার বিউটি, এসিড আক্রান্ত ওয়াহেদ আলি প্রমূখ।সভায় আরও বলা হয় এসিড আক্রান্তরা যাতে সমাজের মূলধারা থেকে পিছিয়ে না পড়ে সেজন্য সকলকে কাজ করতে হবে। তাদেরকে ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্পে সহযোগিতা দিতে হবে। একই সাথে শিক্ষাগত যোগ্যতা অনুযায়ী তাদের চাকরিও নিশ্চিত করতে হবে। এমনকি তারা যাতে গবাদি পশু পালন, মাছচাষ, কৃষি ফসল উৎপাদন, হাঁস মুরগি পালনসহ আত্মকর্ম সংস্থানের মাধ্যমে নিজেকে ও তার পরিবারকে বাঁচিয়ে রাখতে পারে সে সহায়তাও দিতে হবে।