October 31, 2024, 3:13 am

সাংবাদিক আবশ্যক
সাতক্ষীরা প্রবাহে সংবাদ পাঠানোর ইমেইল: 1linenewsagency@gmail.com
গণতন্ত্রের ধারাবাহিকতা আছে বলেই দেশের উন্নতি হচ্ছে: সংসদে প্রধানমন্ত্রী

গণতন্ত্রের ধারাবাহিকতা আছে বলেই দেশের উন্নতি হচ্ছে: সংসদে প্রধানমন্ত্রী

প্রধানমন্ত্রী ও সংসদ নেতা শেখ হাসিনা বলেছেন, গণমানুষের সমর্থন নিয়ে আমরা পদ্মা সেতুর নির্মাণ নিজেদের অর্থায়নে করতে পেরেছি। এভাবেই বাংলাদেশ এগিয়ে যাবে। আর কখনো অন্যের মুখাপেক্ষী হতে হবে না। কারো কাছে হাত পেতে চলতে হবে না। গণতন্ত্রের ধারাবাহিকতা আছে বলেই দেশের উন্নতি হচ্ছে। তিনি এ সময় সরকারের ভবিষ্যত পরিকল্পনা তুলে ধরে বলেন, ‘আমি ২১০০ সালের ডেল্টা প্ল্যান করে দিয়েছি। ২০৪১ সালে উন্নত সমৃদ্ধ দেশ যাতে হয় সেই পরিকল্পনাও তৈরি করে দিয়েছি। এই ধারাবাহিকতা নিয়ে দেশ চলতে থাকলে এদেশের অগ্রযাত্রা আর কেউ থামাতে পারবে না। রুখতে পারবে না।’

ঐতিয্যবাহী রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগের ৭৩তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে অনির্ধারিত আলোচনার সূত্রপাত করেন অভিজ্ঞ পার্লামেন্টারিয়ান তোফায়েল আহমেদ। আলোচনায় আরও অংশ নেন বর্ষিয়ান রাজনীতিবিদ আমির হোসেন আমু। স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর এ সময় সভাপতিত্ব করেন। আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠার ইতিহাস ও প্রেক্ষাপট তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘পাকিস্তান সৃষ্টির সাত মাসের মধ্যে পূর্ব পাকিস্তান সম্পর্কে একটি বৈরি মনোভাব দেখা যায়। বাংলা ভাষায় কথা বলার অধিকার কেড়ে নেওয়ার প্রচেষ্টাসহ আর্থ-সামাজিকভাবে আমাদের শোষণ, নির্যাতন-নিপীড়ন শুরু করে। এ প্রেক্ষাপটে জাতির পিতা ছাত্রলীগ প্রতিষ্ঠা করেন। আওয়ামী লীগ প্রতিষ্ঠিত হয়। সৃষ্টিলগ্ন থেকেই আওয়ামী লীগ এদেশের মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠার সংগ্রাম করে যাচ্ছে।’

তিনি বলেন, ‘জনগণের দল আওয়ামী লীগ সব সময়ই এদেশের শোষিত, বঞ্চিত, নির্যাতিত মানুষের অধিকারের জন্য সংগ্রাম করেছেন। এই সংগ্রাম করতে গিয়ে আওয়ামী লীগের বহু নেতাকর্মীকে জীবন দিতে হয়েছে। কত পরিবার কষ্ট পেয়েছে। কত মানুষ আত্মত্যাগ করেছে।’ শেখ হাসিনা বলেন, ‘পাকিস্তান নামক দেশটি যেভাবে আমাদের শোষণ করে যাচ্ছিল, ২৩ বছরের সংগ্রাম ও জাতির পিতার নেতৃত্বে আমরা স্বাধীনতা অর্জন করেছি। স্বাধীন জাতি হিসেবে মর্যাদা পেয়েছি। বাংলাদেশ নামটিও বঙ্গবন্ধুর দেওয়া। ’

তিনি বলেন, ‘দলটিকে অসাম্প্রদায়িক চেতনায় গড়ে তোলার জন্য ১৯৫৫ সালের কাউন্সিলে মুসলিম শব্দটি বাদ দিয়ে নাম দেওয়া হয়। আর স্বাধীন বাংলাদেশে কাউন্সিল অধিবেশনে আওয়ামী লীগের নাম বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ হিসেবে প্রতিষ্ঠা লাভ করে।’ স্বাধীন বাংলাদেশ গঠনের আওয়ামী লীগের ভূমিকার কথা তুলে ধরে দলটির সভাপতি শেখ হাসিনা বলেন, ‘আওয়ামী লীগ নামের সঙ্গে যেমন স্বাধীনতা ও অধিকার জড়িত। মাতৃভাষায় কথা বলার অধিকার এবং একটি যুদ্ধবিধ্বস্ত প্রদেশকে রাষ্ট্রে উন্নীত হয়ে সংবিধান দিয়েছিলেন জাতির পিতা। অতি অল্প সময়ের মধ্যে মাত্র সাড়ে তিন বছরের মধ্যে জাতিসংঘ স্বল্পোন্নত দেশের মর্যাদা দেওয়া হয়। ১৯৭৫ সালেই বাংলাদেশ স্বল্পোন্নত দেশের মর্যাদা পায়।’

বঙ্গবন্ধু হত্যার প্রসঙ্গ টেনে তার জ্যেষ্ঠ কন্যা প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘পচাত্তরের ১৫ আগস্ট আমরা কেবল জাতির পিতাকে হারাইনি। বাংলাদেশের মানুষের ভাগ্য পরিবর্তনের সম্ভাবনাকেও হারিয়েছিলাম। মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস বিকৃতি হয়েছিল। জয়বাংলা স্লোগান নির্বাসিত হয়েছিল। ইতিহাস থেকে বঙ্গবন্ধুর নাম মুখে ফেলা হয়েছে। কিন্তু ২১ বছর পর আওয়ামী লীগ সরকারে আসে। পরবর্তীতে দ্বিতীয়বার সরকারে আসে। সরকারে আসার পর আজকে বাংলাদেশ সারা বিশ্বে একটা মর্যাদা পেয়েছে। আমরা উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদা পেয়েছি। জনগণের সেবা করার সুযোগ পেলে অবশ্যই আগামীতে উন্নত সমৃদ্ধ দেশ হিসেবে গড়ে তোলা সম্ভব হবে।’ শেখ হাসিনা বলেন, ‘আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী ঝড় বৃষ্টি, বন্যা-খরাসহ প্রাকৃতিক দুর্যোগে সব সময় দেশের মানুষের পাশে আছে। সরকারে থাকি আর বিরোধী দলে থাকি- যখনই বাংলার মানুষ কোনো সমস্যায় পড়েছে, তখন আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা ঝাঁপিয়ে পড়েছে এবং মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছে। এবারের সিলেট সুনামগঞ্জের বন্যায়ও সবার আগে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী গিয়েছে। তাদের সাহায্য করেছে। এটা আমাদের আদর্শ। এটাই মুক্তিযুদ্ধের চেতনা।’

বিভিন্ন গণতান্ত্রিক আন্দোলনে নিহত আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের স্মরণ করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘আওয়ামী লীগের অগণিত মানুষের আত্মত্যাগের মধ্যদিয়ে জনগণের সেবা করার অধিকার পেয়েছি। গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করতে পেরেছি। আজকে ধারাবাহিক গণতন্ত্র আছে বলেই বাংলাদেশের উন্নতি হচ্ছে। পদ্মা সেতুর নির্মাণ নিজেদের অর্থায়নে করতে পেরেছি। সেটাও গণমানুষের সমর্থন নিয়ে আমরা করেছি। ঠিক এভাবেই বাংলাদেশ এগিয়ে যাবে। আর কখনো পরমুখাপেক্ষী হবে না। কারো কাছে হাত পেতে চলবে না। চলবে আত্মমর্যাদা নিয়ে বাংলাদেশ বিশ্বের বুকে মাথা উচুঁ করে। বাংলাদেশের জনগণকে আমি স্যালুট করি। আওয়ামী লীগের অগণিত নেতাকর্মীদের প্রতি কৃতজ্ঞতা ও ধন্যবাদ জানাই।’ শেখ হাসিনা আরও বলেন, ‘বাবা-মা-ভাই সব হারিয়ে আমি ফিরে এসেছিলাম। আওয়ামী লীগ আমাকে সভানেত্রী নির্বাচিত করেছিল। পাশাপাশি জনগণের আশ্রয়ই আমি এসেছিলাম। তাদের মাঝে আমি খুজে পেয়েছিলাম হারানো বাবা-মায়ের স্নেহ। হারানো ভাইয়ের স্নেহ। কাজেই এদেশের মানুষের জন্য যে কোনো আত্মত্যাগে আমি সবসময় প্রস্তুত। আওয়ামী লীগ অর্থ বাংলাদেশের স্বাধীনতা। আওয়ামী লীগ অর্থ বাংলা ভাষায় কথা বলা, আওয়ামী লীগ অর্থ বাংলাদেশ। আওয়ামী লীগ অর্থ, উন্নত সমৃদ্ধ সোনার বাংলা।’


Comments are closed.

ইমেইল: arahmansat@gmail.com
Design & Developed BY CodesHost Limited
Raytahost Facebook Sharing Powered By : Raytahost.com