July 27, 2024, 3:18 am

সাংবাদিক আবশ্যক
সাতক্ষীরা প্রবাহে সংবাদ পাঠানোর ইমেইল: arahmansat@gmail.com
চীনা রকেটের ধ্বংসাবশেষ অনিয়ন্ত্রিতভাবে পৃথিবীর দিকে ধেয়ে আসছে

চীনা রকেটের ধ্বংসাবশেষ অনিয়ন্ত্রিতভাবে পৃথিবীর দিকে ধেয়ে আসছে

অনলাইন ডেক্স রিপোর্ট: রকেটটি চীনের তিয়ানহে মহাকাশ কেন্দ্রের মূল মডিউলটি বহন করছিল। চীনা রকেটের ধ্বংসাবশেষ এই সপ্তাহের মধ্যেই অনিয়ন্ত্রিতভাবে পৃথিবীতে ভেঙে পড়তে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। তবে ঠিক কখন এবং পৃথিবীর কোন অংশে রকেটটির ধ্বংসাবশেষ আছড়ে পড়বে সেটা এখনও বলা যাচ্ছে না। বিজ্ঞানীরা ধারণা করেছেন, রকেটটি মে মাসের ১০ তারিখে অথবা এর দুই দিন আগে বা পরে পৃথিবীতে এসে পড়তে পারে। শেষ পর্যন্ত রকেটটি ঠিক কোথায় এসে পড়বে – সেটা ধসে পড়ার এক ঘণ্টা আগেই বলা যাবে। গত ২৯শে এপ্রিল চীনের নতুন স্পেস স্টেশনটির একটি মডিউল কক্ষপথে বহন করতে এই রকেটটি উৎক্ষেপন করা হয়েছিল। মহাকাশে এই রকেটের দেহটিএখন পৃথিবী প্রদক্ষিণ করছে এবং এটি যেকোন সময়, বায়ুমণ্ডলের নিম্ন স্তরে প্রবেশ করতে পারে। ১৯৯০ সালে ইচ্ছাকৃতভাবে ১০ টন ওজনের একটি রকেট কক্ষপথে ছেড়ে দেয়া হয়েছিল, যেটা অনিয়ন্ত্রিতভাবে পৃথিবীতে আছড়ে পড়ে। এরপর থেকে আর কখনোই এতো ওজনের কোন বস্তু কক্ষপথে ছাড়া হয়নি। তবে আগামী কয়েক দিনের মধ্যে, ২১ টন ওজনের লং মার্চ ফাইভ-বি রকেটটি পৃথিবীতে এসে পড়বে। এটি হবে পৃথিবীতে ধসে পড়া সবচেয়ে বড় রকেটের ধ্বংসাবশেষের একটি। রকেটটি ৩০ মিটার বা ৯৮ ফুট লম্বা এবং প্রায় ৫ মিটার বা ১৬ ফুট চওড়া। এটি এখন কক্ষপথের মধ্যে দিয়ে পৃথিবীর দিকে ঘণ্টায় প্রায় ২৭,৬০০ কিলোমিটার গতিতে ধেয়ে আসছে। বিবিসির সায়েন্সের সংবাদদাতা জোনাথন আমোস বলেছেন, রকেটটি বিষুবরেখার উত্তর ও দক্ষিণে ৪১ ডিগ্রি অঞ্চলের মধ্যে আছে – উত্তরে নিউইয়র্ক, ইস্তাম্বুল এবং বেইজিং, এবং দক্ষিণে ওয়েলিংটন ও চিলির ওপর দিয়ে ছুটছে। তিনি বলেন: “আপনি যদি এই অঞ্চলের উত্তর বা দক্ষিণে বাস করেন, তবে এই রকেট আপনার উপর ধসে পড়বে না এবং আপনি যদি সেই অঞ্চলের মধ্যে বাস করেন, বিষুবরেখা অঞ্চলের কাছাকাছি, আপনার উপর কিছু ধসে পড়ার আশঙ্কা সত্যি খুব কম – পৃথিবীর ৭০ ভাগ জুড়েই রয়েছে মহাসাগর। তাই যদি এমন জ্বলন্ত কিছু পৃথিবীতে ঢুকে পড়ে, তাহলে এটি পানিতে পড়ার সম্ভাবনাই বেশি।” বৃহস্পতিবার যুক্তরাষ্ট্র জানিয়েছে যে তারা ধ্বংসাবশেষের গতিবিধি পর্যবেক্ষণ করছে। সেটিকে গোলা ছুড়ে নীচে নামিয়ে আনার কোন পরিকল্পনা আপাতত তাদের নেই। মার্কিন প্রতিরক্ষা সচিব লয়েড অস্টিন বলেছেন, “আমরা আশা করছি যে এটি এমন জায়গায় ধসে পড়বে যেখানে কারও কোন ক্ষতি হবে না। আশা করি সমুদ্র বা এমন কোথাও পড়বে।” ২০২০ সালের মে মাসে লং মার্চ ফাইভ-বি নামের একটি রকেট চীন থেকে উৎক্ষেপণ করা হয় – পশ্চিম আফ্রিকার আইভরি কোস্টে গ্রামগুলোয় ওই রকেটটির ধ্বংসাবশেষ পড়ে বলে জানা যায়। এরমধ্যে ১২ মিটার বা ৩৯ ফুট দীর্ঘ ধাতব পাইপও ছিল। যদিও ওই ঘটনায় কেউ আহত হননি। অস্ট্রিয়াগ্রাফ নামে একটি মানচিত্র আছে যেটি মার্কিন অর্থায়নে পরিচালিত এবং এর মাধ্যমে মহাকাশে মানুষের তৈরি সমস্ত কিছু – প্রায় ২৬ হাজার বস্তু ট্র্যাক করা যায়। টেক্সাস বিশ্ববিদ্যালয়ের এক মহাকাশ প্রকৌশলী প্রফেসর মরিবা জাহ্ এই প্রকল্পের সাথে কাজ করেছেন। তিনি বলেন: “মহাকাশে স্মার্টফোনের মতো ছোট বস্তু থেকে শুরু করে বিশাল মহাকাশ স্টেশন সবই রয়েছে এবং সম্ভবত ৩,৫০০ সক্রিয় কৃত্রিম উপগ্রহ বা স্যাটেলাইট সেখানে কাজ করছে। আর বাকি যা আছ তার সব কিছুই আবর্জনা।” বিংশ শতাব্দীর দ্বিতীয়ার্ধে মহাকাশ গবেষণা বাড়ার সাথে সাথে মহাশূন্যে ধ্বংসাবশেষের পরিমাণও বেড়ে চলছে। এই উপগ্রহগুলোর কাজের ক্ষেত্রে হুমকিস্বরূপ হতে পারে। অধ্যাপক জাহ্-এর মতে, রকেটের পুরনো টুকরোসহ মহাকাশে প্রায় ২০০ টি বড় বস্তু রয়েছে যা “টিকিং টাইম-বোম” এর মতো ভয়াবহ হতে পারে। “যেসব উপগ্রহ আমাদের বিভিন্ন সেবা দিয়ে আসছে, যেমন: অবস্থান শনাক্ত করা, ন্যাভিগেশন, সময়, আর্থিক লেনদেন, আবহাওয়ার সতর্কবার্তা ইত্যাদি – সেই গুরুত্বপূর্ণ উপগ্রহগুলোয় যেকোনও মুহূর্তে এ জঞ্জালগুলো আঘাত হানতে পারে। এর ফলে সেগুলো নষ্ট হয়ে যেতে পারে। সুতরাং মহাকাশে থাকা এমন সম্পদের কোন ক্ষতি হলে মানবতার ওপর বড় ধরণের প্রভাব পড়বে।” চীনের এই রকেট লঞ্চারটি অ্যাস্ট্রিয়াগ্রাফে পাওয়া যেতে পারে, ওই মানচিত্রে এই রকেটটি সিজেড -ফাইভবি (CZ-5B) বলা হয়। এটি প্রতি ৯০ মিনিটে একবার পৃথিবী প্রদক্ষিণ করছে, তবে রকেটটি কোন দিক বরাবর পড়তে পারে – সেটা সঠিকভাবে ধারণা করা বেশ কঠিন। কারণ এ সংক্রান্ত ধারণা প্রতিনিয়ত বদলায় এবং এটি গণনা করার পদ্ধতিও জটিল। তাই আপাতত, বিজ্ঞানীরা কেবল এর গতিবিধির ওপর উপর নজর রাখছেন।


Comments are closed.

ইমেইল: arahmansat@gmail.com
Design & Developed BY CodesHost Limited
Raytahost Facebook Sharing Powered By : Raytahost.com