October 31, 2024, 3:13 am
যুবলীগের সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারনী ফোরাম প্রেসিডিয়াম সদস্যদের সভায় উপস্থিত হননি সংগঠনের চেয়ারম্যান ওমর ফারুক চৌধুরী।শুক্রবার বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে যুবলীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে তাকে ছাড়াই সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। ওমর ফারুক চৌধুরীর বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়ার ভার প্রধানমন্ত্রীকে দিয়েছে যুবলীগ। যুবলীগের প্রেসিডিয়াম সভায় এ সিদ্ধান্ত হয়েছে। সভা শেষে যুবলীগ নেতারা বলেন, ওমর ফারুক চৌধুরীর যুবলীগে থাকা না থাকা কিংবা তাকে যুবলীগে রাখা না রাখা নিয়ে যদি কোনো সিদ্ধান্ত নিতে হয় সেটি নেবেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।যুবলীগের ৭ম কংগ্রেস উপলক্ষে বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সংগঠনটির প্রেসিডিয়াম সদস্যদের বৈঠকটি হয়। জাতীয় কংগ্রেসের আগে অনুষ্ঠিত গুরুত্বপূর্ণ এ বৈঠকে সংগঠনটির অধিকাংশ প্রেসিডিয়াম সদস্য উপস্থিত ছিলেন। সভায় যুবলীগ চেয়ারম্যান ওমর ফারুক চৌধুরীর অনুপস্থিতি অনেককেই অবাক করেছে।সভায় অংশ নেয়া যুবলীগ নেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, দুই ঘণ্টাব্যাপী এই বৈঠকে গুরুত্বপূর্ণ কিছু সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। এর মধ্যে একটি হচ্ছে যুবলীগ কেন্দ্রীয় কমিটির দফতর সম্পাদক কাজী আনিসুর রহমানের বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত। শৃঙ্খলাভঙ্গের দায়ে যুবলীগ থেকে তাকে বহিষ্কার করা হয়েছে সভা শেষে এই সিদ্ধান্তের কথা জানান যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক হারুনুর রশীদ।
কাজী আনিসুর রহমান যুবলীগের দফতর সম্পাদক পদে ছিলেন। তিনি যুবলীগ অফিসের পিয়ন থেকে কেন্দ্রীয় নেতা বনে যান। তিনি যুবলীগ চেয়ারম্যান ওমর ফারুক চেৌধুরীর ঘনিষ্ঠ হিসেবে পরিচিত ছিলেন। দুর্নীতি-মাদক-ক্যাসিনোবিরোধী শুদ্ধি অভিযান শুরু হলে আড়ালে চলে যান বিতর্কিত আনিস।সভায় যুবলীগ চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগগুলো নিয়ে আলোচনা হয় বলে জানা গেছে। তবে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়ার ভার প্রধানমন্ত্রীর ওপর ছেড়ে দেয়া হয়।রাজধানীতে মাদক-ক্যাসিনোবিরোধী অভিযান শুরু হলে গ্রেফতার হন যুবলীগের কয়েকজন প্রভাবশালী নেতা। এসব নেতার সঙ্গে যুবলীগ নেতার সখ্যের তথ্য উঠে আসে বিভিন্ন গণমাধ্যমে। তার মদদে রাজধানীতে অনেক যুবলীগ নেতা ক্যাসিনো ব্যবসা করেন বলে অভিযোগ উঠে। এছাড়া তার বিরুদ্ধে নানা অনিয়মের অভিযোগও উঠে। এসবের পরিপ্রেক্ষিতে ওমর ফারুক চেৌধুীরর দেশ ত্যাগে নিষেধাজ্ঞাও জারি করা হয়। তলব করা হয় ব্যাংক হিসাব। এর পর থেকে রাজনীতি থেকে অনেকটাই আড়ালে চলে যান ওমর ফারুক। তার এসব অভিযোগের বিষয়ে আজকের সভায় আলোচনা হয়। সভা শেষে যুবলীগ নেতারা বলেন, যুবলীগ চেয়ারম্যানের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
সভায় সভাপতিত্ব করেন যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক হারুনুর রশিদ। উপস্থিত রয়েছেন- প্রেসিডিয়াম সদস্য শহীদ সেরনিয়াবাত, শেখ শামসুল আবেদীন, আলতাব হোসেন বাচ্চু, মো. সিরাজুল ইসলাম মোল্লা, মজিবুর রহমান চৌধুরী, মো. ফারুক হোসেন, মাহবুবুর রহমান হিরণ, আবদুস সাত্তার মাসুদ, মো. আতাউর রহমান, অ্যাডভোকেট বেলাল হোসাইন, আবুল বাশার, মোহাম্মদ আলী খোকন, অধ্যাপক এবিএম আমজাদ হোসেন, আনোয়ারুল ইসলাম, ইঞ্জি. নিখিল গুহ, শাহজাহান ভূঁইয়া মাখন, ডা. মোখলেছুজ্জামান হিরু, শেখ আতিয়ার রহমান দীপু প্রমুখ।জানা গেছে, যুবলীগ চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগগুলোর কারণে বিব্রত অনেক যুবলীগ নেতা। কিন্তু তারা এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করতে চান না।এদিকে মুক্তিযোদ্ধা সংসদ ক্রীড়াচক্রে অবৈধ ক্যাসিনো ও জুয়া পরিচালনায় মদদ দেয়ার অভিযোগে যুবলীগ চেয়ারম্যানকে গ্রেফতারের দাবি উঠেছে খোদ আওয়ামী লীগ ঘরানা সংগঠনগুলোর মধ্যে। ওমর ফারুক চেৌধুরীর গ্রেফতার দাবিতে মানবন্ধন করেছে মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা।বৃহস্পতিবার রাজু ভাস্কর্যের সামনে এক মানববন্ধন কর্মসূচি থেকে তার কুশপুত্তলিকা দাহ করা হয়।উল্লেখ্য, সরকারের চলমান ক্যাসিনোবিরোধী অভিযানে যুবলীগের ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সদ্য বহিষ্কৃত সভাপতি ইসমাইল হোসেন সম্রাট ও তার সহযোগী যুবলীগ নেতা আরমান গ্রেপ্তারের পর ওমর ফারুক চৌধুরীর দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয় বলে খবর রয়েছে সংবাদ মাধ্যমে। নানা আলোচনা সমালোচনা মধ্যে অনেকটা আড়ালেই আছেন যুবলীগের দাপুটে এই নেতা।
Comments are closed.