July 26, 2024, 11:58 pm

সাংবাদিক আবশ্যক
সাতক্ষীরা প্রবাহে সংবাদ পাঠানোর ইমেইল: arahmansat@gmail.com
জমি রেজিস্ট্রি না করে ক্রেতাকে হয়রাণীর অভিযোগ

জমি রেজিস্ট্রি না করে ক্রেতাকে হয়রাণীর অভিযোগ

শহরের ইটাগাছায় তুলসী দে ও হরিপদ দে এর হয়রানী থেকে প্রতিকার পেতে দ্বারে দ্বারে ঘুরে বেড়াচ্ছে একই গ্রামের মাজেদ গাজীর ছেলে মনিরুল ইসলাম (মনি)। সূত্রে জানা যায়, গত ১ বছর পূর্বে ইটাগাছা (মানিকতলা) গ্রামের মৃত চিত্তরঞ্জন দে এর ছেলে তুলসী দে ও হরিপদ দে টাকার প্রয়োজনে মনিরুল ইসলাম মনিকে সাড়ে ১৯ শতক জমি বিক্রয় করার জন্য বলে। তখন মনি তাদের কাছ থেকে ৩ কাঠা জমি নেওয়ার কথা বললে তারা জানান সম্পূর্ণ জমি একসাথে ছাড়া বিক্রয় করবো না। এরপর মনি ডা. রনজিৎ কুমার রায় এর সাথে উক্ত জমির বিষয়ে আলোচনা করলে তিনি ১২.৬০ শতক এবং মনি ৪.৬০ শতক জমি কেনার আগ্রহ প্রকাশ করেন। অতঃপর, সাড়ে ১৯ শতক জমি ৪৯ লক্ষ টাকায় ক্রয়ের জন্য তুলসী দে এর সাথে মৌখিক চুক্তি সম্পন্ন হয়। ৪৯ লক্ষ টাকা দিয়ে উক্ত জমি সাতক্ষীরা সদর সাব রেজিস্ট্রি অফিস থেকে রেজিস্ট্রি করার সিদ্ধান্তও হয়। এরপর তুলসী দে ও হরিপদ দে উক্ত জমি থেকে ২.৩০ শতক জমি কম দিয়ে ৪৪ লক্ষ টাকায় বিক্রয়ের জন্য ডা. রনজিৎ ও মনির সাথে চুক্তি করে। গত ১৩ মার্চ ২০২১ তারিখে সাতক্ষীরা সদর সাব রেজিস্ট্রি অফিসে হাজির হয়ে ব্যাংকের মাধ্যমে ৪০ লক্ষ ও নগত ৪ লক্ষসহ মোট ৪৪ লক্ষ টাকা বুঝিয়ে দিয়ে পলাশপোল মৌজার জেএল নং-৯৪ ও ১৩০৪১ দাগে রনজিৎ কুমার রায় এর নামে ১২.৬০ শতক এবং একই মৌজার ১৩০৪৩ দাগে মনিরুল ইসলাম মনির নামে ৪.৬০ শতক জমি পৃথক পৃথক দলিলে স্বাক্ষর করেন। ঐদিন রনজিৎ কুমার এর নামে ১২.৬০ শতক জমির দলিলটি রেজিস্ট্রি হয়। তবে ১৩০৪৩ দাগের ৪.৬০ শতক জমি খাস খতিয়ানের অন্তর্ভুক্ত থাকায় রেজিষ্টার মনির নামের দলিলটি রেজিস্ট্রি করেননি। রেজিষ্টার জানান, ডিপি খতিয়ান সংশোধন না করলে এই জমি রেজিস্ট্রি করা যাবে না। অতঃপর, তুলসী দে ও হরিপদ দে এক সপ্তাহের মধ্যে ওই ডিপি খতিয়ান সংশোধন করে রেজিস্ট্রি করে দেবেন বলে আশ্বস্ত করেন এবং মৌখিক চুক্তিতে একটি ল্যাপটপের বিনিময়ে আবারও .৩৫ পয়েন্ট জমি মনিকে লিখে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেয়। পরবর্তীতে তারা সদর সাব রেজিস্ট্রি অফিসে হাজির হয়ে পূর্বের স্বাক্ষরকৃত দলিলটি রেজিস্ট্রি না করে একই টাকার বিনিময়ে (পুর্বের চুক্তি মোতাবেক ৪.৬০শতক+.৩৫ শতক) নতুন করে ৪.৯৫ শতক জমির দলিলে নিজ নিজ নামের স্বাক্ষর করেন। ওই সময়ে ৪.৯৫ শতক জমি সাব রেজিস্টার রেজিস্ট্রি করতে যেয়ে দেখেন ৩৭০৮ ডিপি খতিয়ানের ১৩০৪৩ দাগের জমি খাস খতিয়ানে অন্তর্ভুক্ত আছে। ফলে রেজিস্টার জমি রেজিস্ট্রি করেন নি। তুলসী দে ও হরিপদ দের এই হয়রানী ও প্রতারণা থেকে মুক্তি পেতে এখন দ্বারে দ্বারে ঘুরে বেড়াচ্ছে মনিরুল ইসলাম মনি। বর্তমানে উক্ত জমির ডিপি খতিয়ান সংশোধন করে রেজিস্ট্রি করে না দিয়ে ২০ এপ্রিল তুলসী দে ও হরিপদ দে মনিরুল ইসলাম মনিকে হয়রানী করতে সাতক্ষীরা সদর থানায় একটি সাধারণ ডায়েরী করেছে। বাধ্য হয়ে মনিরুল ইসলাম (মনি) ১৯ মে সাতক্ষীরা পৌরসভায় একটি লিখিত অভিযোগ করেন এবং অভিযোগের প্রেক্ষিতে নোটিশ করে উভয় পক্ষের শুনানীর জন্য ২৪ মে দিন ধার্য্য করেন সাতক্ষীরা পৌর কর্তৃপক্ষ। কিন্তু বিবাদীগণ হাজির হননি। এরপর পৌর কর্তৃপক্ষ ৩ জুন শুনানীর দিন ধার্য্য করেন কিন্তু সেদিনও তারা উপস্থিত হননি। পরবর্তীতে সাপৌ/সাধাঃ শাঃ/অভিযোগ নং- ১৩৭/২১ নং স্বারকে ১৫ জুন সাতক্ষীরা পৌরসভার ৭নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর শেখ জাহাঙ্গীর হোসেন কালু স্বাক্ষরিত একটি তদন্ত প্রতিবেদন দিয়েছেন। ওই প্রতিবেদন সূত্রে জানা যায়, পলাশপোল মৌজার এস,এ ১৬৪৫ খতিয়ানে এস,এ ১২৭৫৯ দাগে ১৯.৫০ শতক সম্পত্তি ৪৯ লক্ষ টাকা দরে বিক্রয়ের সিদ্ধান্ত হয়। ১৯.৫০ শতক জমি থেকে ২.৩০ শতক জমি কম আছে বিধায় ৪৪ লক্ষ টাকা দাম নির্ধারণ করা হয়। এরপর ১২.৬০ শতক জমি রেজিস্ট্রি করে দেন কাগজপত্র ঠিক করিলেও বাকি ৪.৬০ শতক জমি রেজিস্ট্রি করে দেন নি। অথচ জমির সম্পূর্ণ টাকা অগ্রিম নিয়েছেন। এখন জমি রেজিস্ট্রি করে দেওয়ার কথা বলে টালবাহানা করছে। সুতরাং যাহাতে জমি রেজিস্ট্রি করে দেন সেজন্য দরখাস্ত করেছিল মনিরুল ইসলাম (মনি)। ২ বার দিন ধার্য্য করা হলেও বিবাদীগণ উপস্থিত হয়নি। টাকা লেনদেনের বিষয়টি ৭নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর শেখ জাহাঙ্গীর হোসেন কালু নিজে জানেন। পৌরসভার গ্রাম আদালতে বিষয়টি নিস্পত্তি না হওয়ায় আইনের আশ্রয় নেওয়ার জন্য তদন্ত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে। বর্তমানে ভুক্তভোগী মনিরুল ইসলাম মনি এ ধরনের হয়রানী থেকে মুক্তি পেতে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের আশু হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।


Comments are closed.

ইমেইল: arahmansat@gmail.com
Design & Developed BY CodesHost Limited
Raytahost Facebook Sharing Powered By : Raytahost.com