December 30, 2024, 5:45 pm
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুশেখ মুজিবুর রহমানকে ঘাতকচক্র হত্যা করতে পারলেও তার নীতি ও আর্দশকে মুছে ফেলতে পারেনি মন্তব্য করে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ বলেছেন, জাতির পিতার নাম বাঙালির অন্তরে চির অমলিন, অক্ষয় হয়ে থাকবে।আগামী রোববার (১৫ আগস্ট) জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে শনিবার (১৪ আগস্ট) দেয়া এক বাণীতে এ কথা বলেন রাষ্ট্রপতি। আবদুল হামিদ বলেন, বঙ্গবন্ধুও বাংলাদেশ আজ অভিন্ন সত্তায় পরিণত হয়েছে। ঘাতকচক্র জাতির পিতাকে হত্যা করলেও তার নীতি ও আদর্শকে মুছে ফেলতে পারেনি। যতদিন বাংলাদেশ থাকবে ততদিন জাতির পিতার নাম এ দেশের লাখো-কোটি বাঙালির অন্তরে চির অমলিন, অক্ষয় হয়ে থাকবে।
বাঙালি জাতি র ইতিহাসে ১৫ আগস্ট এক কলঙ্কজনক অধ্যায় উল্লেখ করে রাষ্ট্রপতি বলেন, এমন ন্যাক্কারজনক ঘটনা কেবল দেশের ইতিহাসে নয়, পৃথিবীর ইতিহাসেও বিরল। বঙ্গবন্ধুর অবদানের কথা তুলে ধরে আবদুল হামিদ বলেন, বঙ্গবন্ধুছিলেন বাঙালি জাতির স্বপ্নদ্রষ্টা ও মহান স্বাধীনতার রূপকার। ১৯৪৮ সালে ভাষার দাবিতে গঠিত সর্বদলীয় রাষ্ট্রভাষা সংগ্রাম পরিষদের নেতৃত্বসহ ১৯৫২ এর মহান ভাষা আন্দোলন, ’৫৪ এর যুক্তফ্রন্ট নির্বাচন, ’৫৮ এর সামরিক শাসনবিরোধী আন্দোলন, ’৬২ এর গণবিরোধী শিক্ষা কমিশনবিরোধী আন্দো লন, ’৬৬ এর ৬-দফা , ’৬৯ এর গণঅভ্যুত্থান ও ’৭০ এর নির্বাচনসহ বাঙালির মুক্তি ও অধিকার আদায়ে পরিচালিত প্রতিটি গণতান্ত্রিক ও স্বাধিকার আন্দোলনে তিনি নেতৃত্ব দেন। এজন্য তাকে বারবার কারাবরণ করতে হয়। তিনি বলেন, বাঙালির অধিকারের প্রশ্নে বঙ্গবন্ধুছিলেন আপসহীন। ফাঁসির মঞ্চেও তিনি বাংলা ও বাঙালির জয়গান গেয়েছেন। দীর্ঘচড়াই-উৎরাই পেরিয়ে এ মহান নেতা ১৯৭১ সালের ৭ মার্চতৎকালীন পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠীর রক্তচক্ষু উপেক্ষা করে রেসকোর্সময়দানে লাখো জনতা র উদ্দেশে বজ্রকণ্ঠে ঘোষণা করেন ‘এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম’, যা ছিল মূলত স্বাধীনতারই ডাক। এরই ধারাবাহিকতায় ১৯৭১ সালের ২৬ মার্চ তিনি বাংলাদেশের স্বাধীনতার ঘোষণা দেন এবং তারই নেতৃত্বে দীর্ঘনয় মাস সশস্ত্র মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে জাতি বিজয় অর্জন করে। রাষ্ট্রপতি বলেন, তরুণ বয়স থেকেই বঙ্গবন্ধুর চিন্তা-চেতনায় ছিল জনগণের কল্যাণ। ১৯৪৩ সালের অবিভক্ত বাংলার দুর্ভিক্ষ, ১৯৪৭-এ দেশভাগের সময় সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা ও ১৯৭০ এর প্রলয়ংকরী ঘূর্ণিঝড়সহ দেশ ও জনগণের যেকোনো সংকটকালে বঙ্গবন্ধু সব সময় তাদের পাশে দাঁড়িয়েছেন। করোনার এ সংকটময় সময়ে বঙ্গবন্ধুর আর্দশকে অনুসরণ করে সবাইকে দেশবাসীর পাশে দাঁড়ানোর আহ্বান জানিয়ে আবদুল হামিদ বলেন, একবিংশ শতাব্দীতে এসে আজ জাতি আরও একটি দুঃসময়ের মুখোমুখি দাঁড়িয়েছে। বাংলাদেশসহ গোটাবিশ্ব আজ করোনা মহামারির বিরুদ্ধে যুদ্ধ করছে। বাংলাদেশ সরকার করোনা পরিস্থিতি মোকাবিলায় সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। এ পরিস্থিতি মোকাবিলায় সরকারের পাশাপাশি দেশবাসীকে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিতে হবে। নিজে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে এবং অন্যরাও যাতে মেনে চলে সে ব্যাপারে উদ্যোগী হতে হবে।
রাষ্ট্রপতি বলে ন, সময় এসেছে বঙ্গবন্ধুর নীতি-আদর্শও জীবনী থেকে শিক্ষা নিয়ে দেশবাসীর সংকটময় এ মুহূর্তেতাদের পাশে দাঁড়ানোর। আর এটাই হবে মুজিববর্ষে বঙ্গবন্ধুর প্রতি শ্রদ্ধা জানানোর একটি উত্তম প্রয়াস। ১৫ আগস্টের কর্মসূচি বাস্তবায়নে দলমত নির্বিশেষে সবাইকে একযোগে কাজ করার আহ্বান জানিয়ে আবদুল হামিদ বলেন, এসব কর্মসূচি বাস্তবায়নে আমি দলমত নির্বিশেষে সবাইকে একযোগে কাজ করার আহ্বান জানাই। আসুন, জাতীয় শোক দিবসে আমরা জাতির পিতাকে হারানোর শোককে শক্তিতে রূপান্তর করি এবং তার স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়তে আত্মনিয়োগ করি।
Comments are closed.