October 31, 2024, 3:12 am
পঞ্চম ধাপের ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে সাতক্ষীরার আশাশুনি, শ্যামনগর ও কলারোয়া উপজেলার মোট ১৬ ইউপিতে উৎসবমূখর পরিবেশে শান্তিপূর্ণভাবে ভোট গ্রহন অনুষ্ঠিত হয়েছে। কোথাও কোন অপ্রীতিকর ঘটনার খবর পাওয়া যায়নি। সকাল ৮ টায় ভোট গ্রহন শুরুর আগেই কেন্দ্রে মহিলা ভোটারদের দীর্ঘ লাইনে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যায়। পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দিতে ভোটাররা ভোট কেন্দ্র গুলিতে ভিড় করে। জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে অবাধ সুষ্ঠ ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশে ভোট গ্রহনের লক্ষে আইনশৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের ব্যপাক তৎপরতা লক্ষ্য করা যায়। জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট এর পাশাপাশি নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও বিজিবি ও র্যাব সদস্যরা কেন্দ্র গুলিতে টহল দিতে দেখা যায়। বিকেল চার টায় ভোট গ্রহন শেষে ভোট গননা শুরু হয়। সন্ধ্যার পরপরই ভোটের ফলাফল প্রকাশ হতে শুরু করে। ততক্ষনে কেন্দ্রের বাইরে প্রার্থীদের কর্মী সমর্থকরা অপেক্ষার প্রহর গুনতে থাকে। সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ হুমায়ুন কবির ও পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মোস্তাফিজুর রহমান সকাল থেকে আশাশুনি উপজেলার বিভিন্ন ভোট কেন্দ্র পরিদর্শন করেন। এদিকে রাতে ভোট গননা শেষে ফলাফলে সাতক্ষীরা তিন উপজেলার ১৬ ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনের প্রাথমিক বেসরকারী ফলাফলে আওয়ামী লীগ ৯, আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী ৪, বিএনপি সমর্থিত ১ এবং জামায়াত সমর্থিত প্রার্থী ২ টিতে বিজয়ী হওয়ার খবর পাওয়া যায়।
শ্যামনগর উপজেলার ১নং ভুরুলিয়া ইউনিয়নে আওয়ামী লীগের প্রার্থী জাফরোল আলম বাবু (আওয়ামী লীগ), ৩ নং শ্যামনগর সদর ইউনিয়নে এড. জহুরুল হায়দার বাবু (আওয়ামী লীগ), ৮নং ঈশ্বরীপুর ইউনিয়নে জিএম শৌকর আলী (আওয়ামী লীগ), কলারোয়া উপজেলার কেরালকাতা ইউনিয়নে স,ম মোরশেদ আলী (আওয়ামী লীগ), কুশোডাংগা ইউনিয়নে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী সাইদ আলী গাজী (বিদ্রোহী), আশাশুনি উপজেলার বুধহাটা ইউনিয়নে প্রভাষক মাহবুবুল হক ডাবলু (আওয়ামী লীগ), আশাশুনি সদর ইউনিয়নে হাসানুজ্জামান (আওয়ামী লীগ), কুল্যা ইউনিয়নে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী ওমর সাকী ফেরদৌস পলাশ (বিদ্রোহী), কাদাকাটি ইউনিয়নে দীপংকর কুমার দীপ (আওয়ামী লীগ), দরগাহপুর ইউনিয়নে শেখ মিরাজ আলী (আওয়ামী লীগ), প্রতাপনগর ইউনিয়নে জামায়াত সমর্থিত স্বতন্ত্র প্রার্থী আলহাজ্ব আবু দাউদ (জামায়াত সমর্থিত), খাজরা ইউনিয়নে শাহ নেওয়াজ ডালিম (আওয়ামী লীগ), আনুলিয়া ইউনিয়ন বিএনপি সমর্থিত স্বতন্ত্র প্রার্থী রুহুল কুদ্দুস (বিএনপি), শ্রীউলা ইউনিয়নে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী দীপংকর কুমার বাছাড় (বিদ্রোহী), শোভনালীতে আবু বকর সিদ্দিক (জামায়াত সমর্থিত), বড়দল ইউনিয়নে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী জগদিশ সানা (বিদ্রোহী)চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন।
আমাদের শ্যামনগর সংবাদদাতা শেখ মাহমুদুল ফিরোজ বাবুল জানান, শ্যামনগর উপজেলার ৮ নং ঈশ্বরীপুর ইউনিয়নের প্রতিটি কেন্দ্রের ভোটার উপস্থিতি ছিলো সন্তোষ জনক। তবে ৬ নং ওয়ার্ডে দুই মেম্বার প্রার্থীর সমর্থকদের সংঘর্ষের ঘটনায় ৪ জন আহত হওয়ার খবর নিশ্চিত হওয়া গেছে। ১,৩ ও ৮ নং ইউনিয়নের মেম্বার, মহিলা মেম্বার, ও অন্যান্য প্রার্থীদের পোলিং এজেন্টদের সাথে কথা বলে জানা যায়, কোন প্রকার বাঁধা-ভয় ভীতি ছাড়াই নির্বিঘেœ তারা দায়িত্ব পালন করছেন। ভোটাররাও নির্বিঘেœ ভোট দিয়েছেন। ভুরুলিয়া ৪ নং ওয়ার্ডে ১০৩ বছর বয়সী আহম্মদ গাইন কে ভোট কেন্দ্রে ভোট দিতে দেখা যায়।
শ্যামনগর উপজেলার নির্বাচন কর্মকর্তা মো. রবিউল ইসলাম জানান, ১নং ভুরুলিয়া ইউনিয়নের নৌকা প্রতীকের একে এম জাফরুল আলম বাবু ৬৫৫৩ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বি চশমা প্রতীকের মাও. মো: ফারুক হুসাইন পেয়েছেন ২৩৪৩ ভোট। ৩নং শ্যামনগর ইউনিয়নে নৌকা প্রতীকের এড. জহুরুল হায়দার বাবু ৮ হাজার ৪২২ ভোট পেয়ে বেসরকারী ভাবে পুনরায় নির্বাচিত হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বি স্বতন্ত্র প্রার্থী আনারস প্রতীকের শেখ লিয়াকত আলী বাবু পেয়েছেন ৭ হাজার ৮৬৩ ভোট। ৮নং ঈশ্বরীপুর ইউনিয়নে নৌকার প্রার্থী এড. জিএম শোকর আলী ১০৫৩৫ ভোট পেয়ে পুনরায় নির্বাচিত হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বি জিএম সাদেকুর রহমান সাদেক আনারস প্রতীকে ১০২৪৬ ভোট পেয়েছেন।
Comments are closed.