October 31, 2024, 3:12 am

সাংবাদিক আবশ্যক
সাতক্ষীরা প্রবাহে সংবাদ পাঠানোর ইমেইল: 1linenewsagency@gmail.com
ডিসি কোলে তুলে নিলেন মায়ের ফেলে যাওয়া শিশুকে

ডিসি কোলে তুলে নিলেন মায়ের ফেলে যাওয়া শিশুকে

‘মা’ ছোট্ট এই শব্দটার মধ্যে লুকিয়ে আছে অকৃপণ ও নিঃস্বার্থ ভালোবাসার অসীম ও আশ্চর্য রকমের এক ক্ষমতা। সন্তানের জন্য মায়ের আত্মত্যাগের কথা কে না জানে? আর সেই সন্তানকেই রাস্তায় ফেলে রেখে তার মা পালিয়ে গেছেন। বৃহস্পতিবার (১৭ অক্টোবর) পঞ্চগড় জেলা শহরের কামাতপাড়া এলাকার একটি গলি থেকে এক মাস বয়সী ফুটফুটে এক কন্যা শিশুকে উদ্ধার করেছে পুলিশ।খবর পেয়ে জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার, সদর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যানসহ জনপ্রতিনিধিরা হাসপাতালে শিশুটিকে দেখতে যান। এ সময় জেলা প্রশাসক (ডিসি) সাবিনা ইয়াসমিন শিশুটিকে কোলে তুলে নেন। তিনি বেশ কিছুক্ষণ শিশুটিকে কোলে করে রাখেন।

প্রাথমিকভাবে পুলিশ জানায়, শিশুটির মা রিমু আক্তার নামে এক নারী। তার স্বামীর বাড়ি দিনাজপুর জেলার পার্বতীপুর এলাকায়। ওই নারীর বাবার বাড়ি পঞ্চগড় সদর উপজেলার ভিতরগড় এবং নানার বাড়ি পঞ্চগড় জেলা শহরের কামাতপাড়া এলাকায়। এক দেড় বছর পর রিমু তার শিশু সন্তান নিয়ে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় হঠাৎ তার নানার বাড়ি এলাকায় আসে। কামাতপাড়া এলাকার পেয়ারা মজুমদার নামে এক গৃহবধূকে তার কন্যা সন্তানটি রাখতে বলেন। এই সময় তিনি বিরক্তি প্রকাশ করে তাকে পরে আসতে বলেন।

রাত ৮ টার দিকে কামাতপাড়া এলাকার অশোক চন্দ্র মদকের বাড়ির সামনে ওই কন্যা শিশুটিকে ফেলে যায় তার মা। শিশুটিকে পড়ে থাকতে দেখে ওই এলাকার জুয়েল ও তার মা জুলেখা খাতুন। পরে তারা পুলিশকে বিষয়টি জানায়। খবর পেয়ে পুলিশ শিশুটিকে উদ্ধার করে পঞ্চগড় আধুনিক সদর হাসপাতালে ভর্তি করে।

খবর পেয়ে পঞ্চগড় জেলা প্রশাসক সাবিনা ইয়াসমিন ও পুলিশ সুপার ইউসুফ আলী শিশুটিকে দেখতে হাসপাতালে যান। এ সময় জেলা প্রশাসক শিশুটিকে কোলে নিয়ে আদর করেন এবং রক্ষণাবেক্ষণে প্রয়োজনীয় সকল ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দেন।

এদিকে শিশুটিকে দত্তক নেওয়ার জন্য হাসপাতালে নিঃসন্তান দম্পত্তিদের ভিড় পড়ে যায়। তবে এখন পর্যন্ত শিশুটির মাকে খুঁজে পাওয়া যায়নি। পুলিশ তাকে খুঁজে বের করার জন্য বিভিন্নভাবে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।

কামাতপাড়া এলাকার পেয়ারা মজুমদার বলেন, রিমু আগে এই এলাকায় থাকতো। মানুষের বাড়িতে কাজ করতো। দেড় থেকে দুই বছর পর হঠাৎ সন্ধ্যার পর সে এসে আমাকে বলে তার কন্যা শিশুটিকে রাখতে। আমি বললাম আমার বাড়িতে মেহমান আসছে তুই পরে আসিস। এ সময় তার সাথে তিন/চার বছরের একটি ছোট ছেলেও ছিল। তারপর শুনলাম একটা শিশু পাওয়া গেছে। ছবি দেখে বুঝলাম রিমু যে শিশুটিকে নিয়ে আসছিল এ সেই শিশু।

পঞ্চগড় আধুনিক সদর হাসপাতালের আবাসিক মেডিক্যাল অফিসার ডা. সিরাজউদ্দৌলা পলিন বলেন, শিশুটি বর্তমানে সুস্থ আছে। শিশুটিকে সিসিইউ ইউনিটে রাখা হয়েছে। নিরাপত্তার জন্য একজন নারী পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।

পঞ্চগড় পুলিশ সুপার ইউসুফ আলী বলেন, শিশুটির মা নিজেই শিশুটিকে রেখে পালিয়ে গেছে বলে আমরা প্রাথমিকভাবে নিশ্চিত হয়েছি। আমরা শিশুটির মাসহ তার পরিবারের লোকজনের সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করছি। তাদের পাওয়া গেলেই শিশুটিকে মায়ের কাছে তুলে দেওয়া হবে। দত্তকের বিষয় নিয়ে এখনো ভাবার সময় আসেনি।

পঞ্চগড় জেলা প্রশাসক সাবিনা ইয়াসমিন জানান, কোনো মা যদি নিরাপত্তার অভাবে বা কোনো কারণে শিশুটিকে এভাবে রেখে যায় তবে তা খুবই দুঃখজনক। এই ফুটফুটে শিশুটির ভবিষ্যতকে সুন্দর করা আমাদের দায়িত্ব, রাষ্ট্রের দায়িত্ব আমরা সবাই মিলে এই দায়িত্ব পালন করবো। আমরা চাই শিশুটি তার মায়ের কোল ফিরে পাক।


Comments are closed.

ইমেইল: arahmansat@gmail.com
Design & Developed BY CodesHost Limited
Raytahost Facebook Sharing Powered By : Raytahost.com