October 31, 2024, 3:13 am

সাংবাদিক আবশ্যক
সাতক্ষীরা প্রবাহে সংবাদ পাঠানোর ইমেইল: 1linenewsagency@gmail.com
তুজুলপুরে বৃদ্ধা রাবেয়ার হাতে বয়স্ক ভাতার কার্ড তুলে দিলেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা দেবাশীষ চৌধুরী

তুজুলপুরে বৃদ্ধা রাবেয়ার হাতে বয়স্ক ভাতার কার্ড তুলে দিলেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা দেবাশীষ চৌধুরী

 বয়সের ভারে ভালোভাবে ঠিকমত চলাফেরা করতে পারিনা, এক চোখে দেখতে পাইনা, অন্য চোখে ঝাপসা দেখি। চলাফেরা করতে কষ্ট হলেও দু-মুঠো ভাতের জন্য গ্রামের মানুষের বাড়িতে বাড়িতে যেয়ে চাল সংগ্রহ ও সাহায্য নিয়ে কোন রকমে দিন পার করি। পৃথিবীতে আমার কেউ জীবিত নেই, আমি একা ছোট একটি কুঠি ঘরে থাকি। প্রতিদিন সকাল হলেই সাহায্যের জন্য গ্রামের বিভিন্ন বাড়িতে যেতে হয়। জীবনের শেষ বয়সে এভাবে দিন পার করতে কষ্ট হলেও নিজের ভাগ্যকে মেনে নিয়েছি। শুনেছি সরকার গরীব মানুষের অনেক সহায়তা দিচ্ছে। কিন্তু এই বৃদ্ধ বয়সেও আমাকে কেউ কোন সহযোগিতা করেনি। তবে, কয়েক বছর আগে স্থানীয় ইউপি মেম্বরের কাছে অনেক অনুরোধ করার পর তিনি ব্যবস্থা করবেন বলে জানালেও আজ পর্যন্ত আর কোন খোঁজ নেয়নি। দুই চোখে অশ্রু সজল কথাগুলো বলছিলেন সদর উপজেলার ঝাউডাঙ্গা ইউনিয়নের পাথরঘাটা গ্রামের ৭৫ বছরের বৃদ্ধা রাবেয়া খাতুন। তিনি আরো বলেন, অধিকাংশ দিনই দুপুরের খাবার অন্যের বাড়িতে একটু ভালো-মন্দ খেতে পারি। গত কয়েকদিন আগে ভিক্ষা করতে তুজুলপুর গ্রামের এক বাড়িতে গেলে একটি ছেলে আমার ছবি তোলে ও বাড়ি কোন গ্রামে, আমার নামসহ বিভিন্ন বিষয়ে খোঁজখবর নেয়। বৃস্পতিবার সকালে সেই ছেলেটি আমাকে তুজুলপুর গ্রামে তার বাড়িতে যেতে বলে। অসহায় বৃদ্ধা রাবেয়া খাতুন বলেন, বিকেলে আমি অনেক কষ্ট করে সেখানে যাই, পরে সে বাজারের একটি ক্লাবে নিয়ে যায়, সেখানে থাকা অনেক বড় বড় স্যারেদের দেখে ভয় পেয়েছিলাম। পরে বড় স্যারেরা আমাকে ভাল কথা বলে বসতে বলে। কিছু সময় পর স্যারেরা আমার হাতে একটি সরকারের ভাতার (বয়স্ক) কার্ড দেয়। আর ভিক্ষা করতে হবে না জেনে কার্ড পেয়ে আনন্দে চোখ দিয়ে পানি ঝরতে থাকে বৃদ্ধা রাবেয়া খাতুনের। এসময় তিনি প্রধানমন্ত্রী ও কার্ড দেয়া বড় স্যারদের জন্য দোয়া করেন।

তুজুলপুর গ্রামের গাছের পাঠশালায় বয়স্ক ভাতার কার্ড দিতে আসা সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা দেবাশীষ চৌধুরী জানান, বৃদ্ধা অসহায় রাবেয়া খাতুনকে নিয়ে স্থানীয় গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশ হলে বিষয়টি জেলা প্রশাসক স্যার এসএম মোস্তফা কামাল স্যারের নজরে আসে। পরে তিনি তাৎক্ষণিকভাবে এ বিষয়ে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য আমাকে নির্দেশ দেন। নির্দেশ পেয়ে আমি তুজুলপুর গ্রামের সাংবাদিক ইয়ারব হোসেনের সাথে যোগাযোগ করে বৃদ্ধা রাবেয়া খাতুনের ঠিকানা সংগ্রহ করি এবং বিকালে গাছের পাঠশালায় বৃদ্ধা রাবেয়া খাতুনকে নিয়ে আসার জন্য অনুরোধ করি। তিনি বলেন, উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তার মাধ্যমে একটি বয়স্ক ভাতার কার্ড প্রস্তুত করে বিকালে তুজুলপুর গ্রামে সাংবাদিক ইয়ারব হোসেনের গাছের পাঠশালায় যেয়ে বৃদ্ধা রাবেয়া খাতুনের হাতে একটি বয়স্ক ভাতার কার্ড তুলে দেওয়া হয়েছে। এসময় তিনি স্থানীয় গণমাধ্যমে এভাবে অসহায় মানুষের সংবাদ প্রকাশ করা হলে প্রশাসন ও সরকারের কাজ করতে সহজ হয় বলে জানান।

এসময় উপস্থিত ছিলেন, সদর উপজেলা সমাজসেবা ককর্মকর্তা রফিকুল ইসলাম, কৃষক ক্লাবের সভাপতি ও সাংবাদিক ইয়ারব হোসেন, সাধারণ সম্পাদক গোলাম রহমানসহ স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ।


Comments are closed.

ইমেইল: arahmansat@gmail.com
Design & Developed BY CodesHost Limited
Raytahost Facebook Sharing Powered By : Raytahost.com