July 27, 2024, 4:27 am

সাংবাদিক আবশ্যক
সাতক্ষীরা প্রবাহে সংবাদ পাঠানোর ইমেইল: arahmansat@gmail.com
দখলের কবলে সাতক্ষীরার নদীগুলো

দখলের কবলে সাতক্ষীরার নদীগুলো

“নদী জীবন্ত সত্তা-নদী বাঁচলে, বাঁচবে মানুষ-বাঁচবে দেশ” এই শ্লোগানকে ধারন করে বিশ্ব নদী দিবস ২০১৯ উপলক্ষ্যে এক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। “জনগণের জন্য জলপথ” এই প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে বুধবার সকাল ১০ টায় সাতক্ষীরা সার্কিট হাউজ মিলনায়তনে সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসন ও হেড সংস্থার আয়োজনে এবং এসোসিয়েশন ফর ল্যান্ড রিফর্ম ডেভেলপমেন্ট (এএলআডি) এর সহযোগীতায় এ আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়। বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ প্রফেসর আব্দুল হামিদ সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি ছিলেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মোঃ বদিউজ্জামান। বিশেষ অতিথি ছিলেন নদ-নদী বাঁচাও আন্দোলন কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি এবিএম শফিকুল ইসলাম, সাতক্ষীরা পানি উন্নয়ন বোর্ড পওর বিভাগ-২ এর নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ আরিফুজ্জামান ও সহকারী কমিশনার জুবায়ের হোসেন। স্বদেশের নির্বাহী পরিচালক মাধব চন্দ্র দত্তের সঞ্চালনায় শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন হেড সংস্থার নির্বাহী পরিচালক লুইস রানা গাইন। ভিডিও প্রজেক্টরের মাধ্যমে সাতক্ষীরার নদ-নদীর চিত্র তুলে ধরেন এএলআরডি’র প্রোগাম অফিসার মির্জা মোঃ আজিম হায়দার। বক্তব্য রাখেন সাতক্ষীরা নাগরিক কমিটির আহবায়ক মোঃ আনিসুর রহিম, প্রথম আলোর নিজস্ব প্রতিনিধি কল্যান ব্যানার্জী, এটিএন বাংলার জেলা প্রতিনিধি এম, কামরুজ্জামান, রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব শুধাংসু শেখর সরকার, সামস্ এর নির্বাহী পরিচালক কৃষ্ণপদ মুন্ডা ও সুশীলনের সহকারী পরিচালক জি,এম মনিরুজ্জামান প্রমুখ। সভায় কিনোট পেপার এর তথ্য মোতাবেক জানা গেছে, ১৯৭১ সালের আগে বাংলাদেশে নদীপথের দৈর্ঘ্য ছিল ২৪ হাজার ১০০ কিলোমিটার। কিন্তু বর্তমানে রয়েছে ৫ হাজারের নিচে। নিয়মিত খনন না করায় পলি পড়ে অস্তিত্ব হারাচ্ছে নদ-নদী। ভাটির দেশ হওয়ায় বাংলাদেশের প্রধান নদ-নদীগুলোয় প্রতিবছর ১২০ কোটি ঘনমিটার পলি প্রবাহিত হয়। এর বড় অংশই নদ-নদীর তলদেশে জমে সৃষ্টি করছে নাব্যতা। দেশে গত ৪৮ বছরে নদ-নদী গুলোয় পলি জমেছে প্রায় ১৮০ কোটি টনের বেশি। শুধুমাত্র পলির কারনেই মানচিত্র থেকে হারিয়ে গেছে প্রায় ৩০০ নদ-নদী। মাত্রাতিরিক্ত হারে পলি জমা, নদ-নদী সংরক্ষণে অবহেলা, অবকাঠামো নির্মান, খনন যন্ত্রপাতি ও দক্ষ জনবলের অভাবে এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। সাতক্ষীরা জেলায় ২৭টি নদ-নদীর তীরে গড়ে উঠেছে শহর বন্দর ও জনপদ। জেলার ২/১টি নদী ব্যথিত অধিকাংশ নদীতে জোয়ার ভাটা বন্দ হয়ে গেছে ফলে সাতক্ষীরার কপোতাক্ষ, বেতনা, কাকশিয়ালী, খোলপেটুয়া, কালিন্দি, মরিচ্চাপ, যমুনা, সোনাই, বলুয়া, গলঘেরিয়া, গুতিয়াখালী, সাপমারা নদীসহ ছোট-বড় প্রায় ২৭টি নদীর অস্তিত্ব নেই বললেই চলে। তাছাড়া মরিচ্চপ নদীর ২৭ কিঃমিঃ এর প্রায় পুরোটাই দখল হয়ে গেছে প্রবাভশালীদের হাতে। এছাড়া আদী যমুনা নদীর ৩২ কিঃমিঃ ধ্বংস ও দখলের প্রক্রিয়ায় রয়েছে। শুধুমাত্র বেতনা নদীর তীরে ২ কিঃমিঃ এর মধ্যে নদী দখল করে গড়ে উঠেছে ৭টি ইটভাটা। বিনেরপোতা ব্রীজের পর থেকে প্রায় ৫ থেকে ৭ বিঘা নদীর যায়গা অদৃশ্য শক্তির বলে দখল করে পাকাঘর তৈরি করে সীমানা বেড়া দিয়ে নিজের দখলে রেখেছে স্থানীয় ব্যক্তিরা। তাছাড়া অনেকে নদীর মধ্যে নেট পাটা ও বিভিন্ন পন্তায় বাঁধদিয়ে মাছ চাষ করছে নির্দ্ধিধায়।সভায় বক্তারা সাতক্ষীরার নদ-নদী সুরক্ষার দাবি সম্বলিত আন্দোলন জোরদার করা; নদী সুরক্ষায় উচ্চ আদালতের রায় নিয়ে জনগণকে সচেতন করা; অবৈধ নদী দখল কারীদের অনতি বিলম্বে উচ্ছেদ করে নদীর নাব্যতা ফিরেয়ে আনাসহ সকল নদ-নদী সুরক্ষার দাবিতে স্থানীয় পর্যায়ে, জনগণ, নাগরিক সমাজ ও সরকারের মধ্যে সমন্বয় তৈরি করে নদী সুরক্ষায় কাজ করার দাবি তুলেছেন।


Comments are closed.

ইমেইল: arahmansat@gmail.com
Design & Developed BY CodesHost Limited
Raytahost Facebook Sharing Powered By : Raytahost.com