ওরা কারা? কী ওদের পরিচয়? কী ওদের উদ্দেশ্য? স্ট্যান্ড ও ক্যামেরা নিয়ে যখন তখন সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে গিয়ে ওরা হানা দিয়ে আতঙ্কের সৃষ্টি করছে? তথ্য সংগ্রহের অজুহাতে ওরা দাবি করছে মোটা অঙ্কের টাকা? দলবেঁধে ওরা ভীতি ছড়িয়ে বেড়াচ্ছে শহর থেকে গ্রামে। ওদের রুখবে কে? এমনই প্রশ্নবানে জর্জরিত জেলার সাধারণ মানুষ। কয়েকটি মটরসাইকেলে ১০/১১ জনের একটি দল কালো পোশাক পরে ওরা দাপিয়ে বেড়াচ্ছে শহরের অলিগলি থেকে গ্রামের মেঠোপথেও। এলাকার সাধারণ মানুষের মনে করছে, ওরা কী র্যাব নাকি অন্য কোন বাহিনীর সদস্য। সোমবার দুপুরের দিকে মটরসাইকেলে বিকট শব্দে হুইসেল বাজিয়ে দ্রুত গতিতে সাতক্ষীরা সদর উপজেলার বল্লী ইউনিয়নের আমতলা খানজাহান আলী আলিম মাদ্রাসায় প্রবেশ করে ৯সদস্যের একটি দল। তারা নিজেদেরকে কেউ এনপিএস’র সদস্য, কেউ সাংবাদিক, কেউ মানবাধিকার কর্মী বলে পরিচয় দিয়ে ত্রাস সৃষ্টি করে। এসময় তাদের কেউ কেউ স্যান্ড ও ক্যামেরা নিয়ে মাদ্রাসার শিক্ষার্থীদের সামনে মাদ্রাসার অধ্যক্ষকে ক্যামেরায় ভিডিও করার ভয়ভীতি প্রদর্শন করে। এসময় তারা মাদ্রাসার শিক্ষকদের নিয়োগ যোগদানের কাগজপত্র দেখতে চায়। এসব বিষয় ছাড়াও মাদ্রাসার আয় ব্যয় অডিট ইত্যাদি বিষয়ে তথ্য ও কাগজপত্র চেয়ে শিক্ষকদের নাজেহাল করে ফেলে। তাদের পরিচয় জানতে চাইলে তাদের একজন সেলিম ও আজিজুর রহমান বলে জানায়। সেলিম নাকি ‘অভিযোগ’ অফিসের কর্মকর্তা এবং আজিজুর মানবাধিকার কর্মী। তারা এসময় ০১৭৬০ ১০৫৮৪৭ একটি মোবাইল ফোন দিয়ে পরবর্তীতে যোগাযোগ করতে বলে। মাদ্রাসার অধ্যক্ষ এসময় বিষয়টি জানা বোঝার জন্য বিভিন্ন স্থানে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করার চেষ্টা করলে তারা দ্রুত স্থান ত্যাগ করে একই গ্রামের আব্দুস সামাদ গাজীর বাড়িতে যায়। আব্দুস সামাদ গাজীর স্ত্রী মর্জিনা বেগমের আহ্বানে তারা নাকি ওই মহড়া দিয়েছে বলে জানায় এলাকাবাসি। দুপুরের খানাপিনার ব্যবস্থাও করে রেখেছিলেন মর্জিনা বেগম। বিকাল ৫টার দিকে এ চক্রটি মর্জিনার বাড়ি ত্যাগ করে হুইসেল বাজিয়ে গ্রামে আতঙ্ক সৃষ্টি করে শহরের দিকে চলে আসে বলে জানায় গ্রামবাসি।এদিকে অপর এক সূত্র জানায়, এ চক্রটি জেলার ইটেরভাটার মালিক, পোল্ট্রি ফার্মের মালিক, বিভিন্ন গ্রাম্য ডাক্তার ও ফার্মেসী, ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে গিয়ে প্রথমেই আতঙ্ক সৃষ্টি করছে। পরে কৌশলে ভিডিও ও ছবি তুলে দাবি করছে মোটা অঙ্কের টাকা। পত্র-পত্রিকায় কোন খবর প্রকাশিত হলে সেই খবরের সূত্র ধরে এ চক্রটি সরকারি-বেসরকারি অফিসে গিয়ে আতঙ্কের সৃষ্টি করছে। এতে করে গ্রামের সাধারণ মানুষ থেকে শুরু করে সরকারি-বেসকারি কর্মকর্তারা নাজেহাল হচ্ছেন বলে অভিযোগ পাওয়া যাচ্ছে।পুলিশ ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী থাকতে এরা কীভাবে দাপিয়ে বেড়ায় সে প্রশ্ন সাধারণ মানুষের। তারা জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারের জরুরী হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।