October 31, 2024, 3:12 am
প্রাণঘাতী করোনাভাইরাস সংক্রমণ প্রতিরোধে অ্যান্টিভাইরাল ওরাল পিল বা মুখে খাওয়ার ওষুধ ‘মলনুপিরাভির’ দেশের বাজার পাওয়া যাচ্ছে। দেশের শীর্ষস্থানীয় ওষুধ প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান বেক্সিমকো ফার্মা এ ওষুধ বাজারে এনেছে, যার জেনেরিক সংস্করণের নাম হবে ‘এমোরিভির’।
মঙ্গলবার (৯ নভেম্বর) দুপুরে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বেক্সিমকো ফার্মার চিফ অপারেটিং অফিসার (সিওও) রাব্বুর রেজা।
তিনি বলেন, প্রতিটি ওরাল পিলের বাজার মূল্য ধরা হয়েছে ৭০ টাকা। চিকিৎসকের পরামর্শে ১৮ বছরের বেশি বয়সী করোনা আক্রান্ত রোগীকে সংক্রমণ প্রতিরোধে ৪০টি পিল খেতে হবে। যার বাজার মূল্য হচ্ছে ২ হাজার ৮০০ টাকা।
এর আগে গতকাল (৮ নভেম্বর) দেশে মলনুপিরাভির অ্যান্টিভাইরাল ট্যাবলেটের জরুরি ব্যবহারের অনুমোদন দেয় ওষুধ প্রশাসন অধিদফতর। প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠানের দাবি, এ ওষুধ করোনাভাইরাসের বংশবিস্তার অকার্যকর করতে সক্ষম। পাশাপাশি, করোনায় আক্রান্ত রোগীর মৃত্যু ও হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার ঝুঁকি ৫০ শতাংশ পর্যন্ত কমানোর সক্ষমতা মলনুপিরাভিরের রয়েছে।
ওষুধের প্রাপ্তিস্থান প্রসঙ্গে রাব্বুর রেজা বলেন, রাজধানীর ১৫০টি ফার্মেসিতে গত রাতে (সোমবার) আমরা এ ওষুধ পাঠিয়ে দিয়েছি। চট্টগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন বিভাগে আজ পাঠানো হবে।
তিনি বলেন, করোনা আক্রান্তের পরিসংখ্যান দেখে বিভিন্ন জায়গায় ওষুধ পাঠানো হবে। যে সব এলাকার মানুষ এখন বেশি করোনায় বেশি আক্রান্ত হচ্ছে, সেই সব এলাকায় এ ওষুধ পাঠানো হবে।
এর আগে সকালে বেক্সিমকো ফার্মার পক্ষ থেকে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক নাজমুল হাসান বলেন, মহামারির শুরুতে আমাদের প্রথম জেনেরিক রেমডিসিভির উৎপাদনের পর এবার করোনার চিকিৎসায় বিশ্বের প্রথম ওরাল অ্যান্টিভাইরাল ওষুধ মলনুপিরাভিরের জেনেরিক সংস্করণ চালু করা হয়েছে। করোনা সংক্রমণে আক্রান্ত রোগীদের জন্য সাশ্রয়ী মূল্যের চিকিৎসা সহজলভ্য করতে বেক্সিমকো ফার্মার দ্রুত সাড়া দেওয়ার সামর্থ্যের আরেকটি উদাহরণ এটি।
তিনি আরও বলেন, এটি আমাদের কোম্পানির জন্য একটি বড় অর্জন। আমরা বিশ্বাস করি, মহামারি মোকাবিলায় এটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে, বিশেষ করে নিম্ন ও মধ্যম আয়ের দেশগুলোতে যেখানে ভ্যাকসিনের সরবরাহ সীমিত।
পিল প্রসঙ্গে প্রতিষ্ঠানটির কর্মকর্তারা জানান, মলনুপিরাভির মানবদেহের প্রবেশকারী করোনাভাইরাসের জেনেটিক কোডে সমস্যা সৃষ্টির মাধ্যমে ভাইরাসটির বংশবৃদ্ধি প্রায় স্থবির করে দেয়। আর এর ফলে কমতে থাকে করোনারোগীর গুরুতর অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হওয়া ও এ রোগে মারা যাওয়ার সম্ভাবনা।
কর্মকর্তারা আরও জানান, বাজারে বর্তমানে করোনা রোগীদের চিকিৎসার জন্য যেসব ওষুধ ব্যবহার করা হচ্ছে, সেগুলোর মূল কাজ মানুষের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাকে শক্তিশালী করা, ভাইরাসকে অকার্যকর করা নয়।
এক্ষেত্রে মলনুপিরাভিরই বিশ্বে প্রথম এবং এখন পর্যন্ত একমাত্র ওষুধ, যেটি মানুষের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাকে শক্তিশালী করার পাশাপাশি ভাইরাসের প্রজনন ক্ষমতা অকার্যকর করতে সক্ষম।
জানা গেছে, এ পর্যন্ত তিনটি মেডিকেল ট্রায়াল পার করেছে মলনুপিরাভির। প্রতিটি ট্রায়ালেই রোগীদের শারীরিক অবস্থার লক্ষ্যণীয় উন্নতি দেখা গেছে বলে জানিয়েছেন কোম্পানির কর্মকর্তারা।
Comments are closed.