September 7, 2024, 11:39 pm

সাংবাদিক আবশ্যক
সাতক্ষীরা প্রবাহে সংবাদ পাঠানোর ইমেইল: arahmansat@gmail.com
বাকপ্রতিবন্ধী রত্মা পেলো স্বামীর স্বীকৃতি \ বিজ্ঞ জেলা ও দায়রা জজ শেখ মফিজুর রহমানের মানবিক ও আলোকিত সিদ্ধান্ত

বাকপ্রতিবন্ধী রত্মা পেলো স্বামীর স্বীকৃতি \ বিজ্ঞ জেলা ও দায়রা জজ শেখ মফিজুর রহমানের মানবিক ও আলোকিত সিদ্ধান্ত

মেয়েরা মায়ের জাত, নারী মানেই মা, আদর, ভালবাসা, মহানুভবতা, আন্তরিকতা, সরলতা, স্বামী, সংসার, সন্তান যেমন একজন নারীর পরম চাওয়া, পাওয়ার ক্ষেত্র অনুরুপ ভাবে নারী নির্যাতিতা, নিষ্পেষিতা, সংগ্রামী, প্রতিবাদী অধিকার বঞ্চিত, প্রতারনার শিকার আবার অধিকার রক্ষার, দুর্দান্ত ইচ্ছা শক্তি, এসবের সব কিছুর উর্ধে নারীর সাথে অন্তঃরাত্মার সম্পর্ক স্বামী আর সন্তান। স্বামী ব্যতিত, সন্তান মাতৃত্ব ব্যতিত নারী তথা মা যেন অসম্পূর্ণ এক মানবী, আমাদের সমাজ ব্যবস্থায় প্রতিনিয়ত নারী প্রতারনার শিকার হচ্ছে, বিশ্বাস, আস্থা, সরলতা নারীকে বারবার অধিকার খর্ব করে, কিন্তু কোন কোন সময় কোন না কোন মাধ্যম, আলোক বর্ণিতা অধিকার হারা নারীকে কেবল অধিকার পেতে পথিকৃত হয় তা নয় নারীকে তার নার্য্য পাওনা আদায় করে দেয়। সাতক্ষীরার বাস্তবতায় বিজ্ঞ সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ শেখ মফিজুর রহমানের এক অবিস্বরনীয়, যুগান্তকারী, মানবিক সেই সাথে বাস্তব সময় আদেশে বাক প্রতিবন্ধী ফুলমতি ওরফে রত্মা নারীর পরম ধন স্বামীর স্বীকৃতি পেলো। বিজ্ঞ আদালতের দুরদর্শি আর ন্যায় বিচারের ফসল স্বামীর অধিকার বঞ্চিত স্বামী কর্তৃক স্ত্রীর নার্য্য অধিকারে অভিসিক্ত হলো। রত্মার অধিকার প্রতিষ্ঠা আর প্রতারনার বিষয়টি যে ভাবে উন্মোচিত হলো পিতামাতা হারা এতিম বাক প্রতিবন্ধী ফুলমতি ওরফে রত্মা খুলনা জেলার পাইকগাছা উপজেলার খাটুয়ামারী গামের সন্তান, জীবন সংগ্রামে বেঁচে থাকবার প্রানন্তকর প্রচেষ্টার অংশ হিসেবে সাতক্ষীরা শহরের বন্ধু চুলা কারখানায় শ্রমজীবী হিসেবে যোগদান করে, আশাশুনি উপজেলার বাহাদুর পুর দক্ষিনপাড়া গ্রামের জিয়াদ আলী সরদারের পুত্র আল আমিন সর্দার এর সাথে পূর্ব পরিচয়ের সূত্র ধরে ভাল কাজ দেওয়ার আশ্বাস এবং প্রলোভন দেখালে বাকপ্রতিবন্ধী রত্মা সরল বিশ্বাসে আল আমিন এর কথামত গত ১৮/৮/১৯ তারিখে রত্মাকে গাবতলা আশ্রয়কেন্দ্রে যাওয়ার পথে মনোহরপুর ওয়াপদা রাস্তার পাশে ইচ্ছার বিরুদ্ধে রত্মাকে ধর্ষন করে। এক দিকে বাকপ্রতিবন্ধী অন্যদিকে ইচ্ছার বিরুদ্ধে ধর্ষন এবং লোকজানাজানি সব মিলে রত্মাসহ তার পরিবারের মাঝে জমা হয় কালো মেঘ, প্রত্যাশা ন্যায় বিচার এবং ভবিষ্যত জীবন। ঘটনার পরের দিন ধর্ষিতার ভাই জিয়ারুল গাজী বাদী হয়ে আশাশুনি থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের ৯ (১) ধারায় মামলা করলে পুলিশ আসামীকে গ্রেফতার করে, ইত্যবসরে রত্মা সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট ইয়াসমিন নাহারের নিকট ২২ ধারায় জবনাবন্দী প্রদান করে। বিচারিক আদালতের বিজ্ঞ বিচারক মানবিক জজ খ্যাত শেখ মফিজুর রহমানের আদালত বিবাহ করার শর্তে আল আমিনকে জামিন মঞ্জুর করেন। আদালতের বিবেচনা প্রসূত নারীর তথা প্রতিবন্ধী নারীর অধিকার রক্ষায় প্রতিমুখ হিসেবে আবির্ভূত হয়ে অতি মানবিক সিদ্ধান্তের বহিঃপ্রকাশ ঘটে বিবাহ বন্ধনের মধ্যমে। গত ১৮/০৩/২০ তারিখে রেজিঃ বিবাহ সুসম্পন্ন হয়, এবং নারীর স্বাভাবিকতা, চাওয়া পাওয়া স্বামীর সাথে বসবাস করতে থাকে বাকপ্রতিবন্ধী রত্মা, আদালতের কল্যানেই ধর্ষক আল আমিন রত্মার পরম নির্ভরতার প্রতিক স্বামী হিসেবে ভরন পোষন সহ একত্রে বসবাস শুরু করে। একজন প্রতিবন্ধী নারীর কাছে এক সময়ের অসহনীয় পৃথিবী পূর্ণ সুখময় হয়ে ওঠে, অধিকার প্রতিষ্ঠার সফল সমাপ্তি ঘটে। বিবাহ সহ সুখে দিন যাপন সব কিছুই বিজ্ঞ আদালতের পর্যবেক্ষনে থাকে। অবশেষে মানবিক দুরদৃষ্টি সম্পন্ন, ন্যায় বিচারক বিজ্ঞ সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ শেখ মফিজুর রহমানের আদালত গত ৯/৩/২১ তারিখে মামলাটি নিষ্পত্তি করেন সেই সাথে ধর্ষিতা ফুলমতি ওরফে রত্মা বিভিষিকাময় জীবনের পরিবর্তে আলোক উজ্জ্বল জীবনের ধারাবাহিকতার সুন্দর সৌন্দর্যময় সুখময় জীবন সংসারের সুত্রপাত ঘটলো। সা¤প্রতিক সময়ে কেবল সাতক্ষীরার নয় বিজ্ঞ আদালতের এমন আদেশ দেশের জন্য দৃষ্টান্ত বলে মনে করছেন সচেতন মহল, দেশের বিচার বিভাগের প্রতি অধিকতর শ্রদ্ধা এবং বিশ্বাস এর বহিঃপ্রকাশ আল আমিন রত্মা মামলা এবং নিষ্পত্তি মামলাটি নিষ্পত্তির দিনে কাঠগড়ায় দাড়ানো রত্মার চোখেমুখে যে খুশির ঝিলিক, তা যেন দেশের মা বোনদেরকে অধিকার আর ন্যায় বিচারের যথার্থতাই বলছিল। আদালতের এজলাসে উপস্থিত আইনজীবী, বিচার প্রার্থী সকলেই পরম কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছিল বিজ্ঞ আদালতকে। আলোচিত মামলাটি আসামী পক্ষে ছিলেন এ্যাড: আঃ বারী ও রাষ্ট্র পক্ষে ছিলেন বিজ্ঞ স্পেশাল পিপি জহুরুল হায়দার বাবু।


Comments are closed.

ইমেইল: arahmansat@gmail.com
Design & Developed BY CodesHost Limited
Raytahost Facebook Sharing Powered By : Raytahost.com