October 23, 2024, 7:07 pm

সাংবাদিক আবশ্যক
সাতক্ষীরা প্রবাহে সংবাদ পাঠানোর ইমেইল: arahmansat@gmail.com
ভারত জুড়ে বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ছে, নিহত ২২

ভারত জুড়ে বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ছে, নিহত ২২

 নাগরিক আইনের প্রতিবাদে বেশি উত্তপ্ত অবস্থা বিরাজ করছে ভারতের উত্তর প্রদেশ ও দিল্লিতে। এ দুই রাজ্যে শনিবারও সহিংস বিক্ষোভ হয়েছে। উত্তর প্রদেশের রামপুরে বিক্ষোভ-সংঘর্ষে শনিবার এক ব্যক্তি নিহত হয়েছেন। এ নিয়ে এই রাজ্যে গত বৃহস্পতিবার থেকে টানা সহিংসতায় প্রাণ হারিয়েছেন ১৬ জন। নাগরিক আইন নিয়ে রাস্তায় প্রতিবাদ জানাতে এসে এর আগে পশ্চিমবঙ্গ, দিল্লিসহ বিভিন্ন রাজ্যে সহিংসতায় মারা গেছেন ছয়জন। সব মিলিয়ে শনিবার পর্যন্ত নিহতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ২২ জনে।আন্দোলনকালে সহিংসতায় জড়িত অভিযোগে আটক করা হয়েছে অন্তত এক হাজার জনকে। এর মধ্যে উত্তর প্রদেশেই ৭০৫ জন আটক হয়েছেন। দিল্লির জামিয়া মিলিয়া ইসলামিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা গত রোববার পুলিশি হামলার পর থেকে টানা আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন। এ ছাড়া পশ্চিমবঙ্গ, আসাম, ত্রিপুরা, বিহার, গুজরাট, কেরালা, মেঘালয়সহ বিভিন্ন রাজ্যে নাগরিক আইনের প্রতিবাদে নানা কর্মসূচি পালিত হচ্ছে।এদিকে দেশজুড়ে প্রতিবাদ কর্মসূচি চলার মধ্যেই দেশটির ১১০০ গবেষক, বুদ্ধিজীবী ও শিক্ষক আইনটির সমর্থনে বিবৃতি দিয়েছেন। বিবৃতিতে তারা বলেছেন, নতুন নাগরিকত্ব আইন দীর্ঘদিনের দাবি। যেসব মানুষ পাকিস্তান, আফগানিস্তান এবং বাংলাদেশ থেকে এসেছে, তাদের কথা বিবেচনা করেই এই সংশোধনী। যদিও এরই মধ্যে এ আইনের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়ে প্রতিবাদ জানাচ্ছেন বিভিন্ন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী ও নাগরিকরা। এই প্রথম শনিবার নাগরিক আইনের পক্ষে রাস্তায় নেমে প্রচার চালানোর ঘোষণা দিয়েছে ক্ষমতাসীন বিজেপি। ১০ দিনব্যাপী কর্মসূচিতে তারা মিছিলের পাশাপাশি তিন কোটি পরিবারকে আইনটি সম্পর্কে বোঝাবে। খবর এনডিটিভি, হিন্দুস্তান টাইমস ও এএফপির।গত শুক্রবার জুমার নামাজের পর উত্তর প্রদেশে সহিংসতা ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়ে। এর আগে বৃহস্পতিবার লক্ষেষ্টৗ ও সামভালে একজন করে নিহত হন। পুলিশের তথ্যানুযায়ী, মিরুত এলাকায় চারজন, ফিরোজাবাদ ও বিজনুর এলাকায় দু’জন করে, সামভাল, কানপুর, বারাণসী ও লক্ষেষ্টৗতে একজন করে মারা গেছেন। পুলিশের অন্তত দুই শতাধিক সদস্য আহত হয়েছেন। এ রাজ্যের ১৩ জেলায় গত বৃহস্পতিবার থেকেই বিক্ষোভ শুরু হয়।শনিবার সহিংসতার আবহেই নতুন করে বিক্ষোভ দেখা যায় উত্তর প্রদেশের রামপুরে। পুলিশি ব্যারিকেড ভেঙে বিক্ষোভকারীরা এগোতে থাকলে পুলিশ লাঠিচার্জ করে ও কাঁদানে গ্যাস ছোড়ে। পুলিশের ওপর পাথর ছোড়ে বিক্ষোভকারীরা। সংঘর্ষের পর থেকে এখানে মোবাইল ইন্টারনেট বন্ধ আছে। এদিকে নিহত ব্যক্তিদের পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে রোববার উত্তর প্রদেশের লক্ষেষ্টৗ যাচ্ছে তৃণমূল কংগ্রেসের একটি প্রতিনিধি দল।রাজ্যের পুলিশপ্রধান ওমপ্রকাশ সিং পুলিশের গুলিতে নিহতের বিষয়টি অস্বীকার করেছেন। তিনি বলেছেন, বিক্ষোভকারীদের গুলিতেই নিহতের ঘটনা ঘটেছে। কোনো পুলিশ গুলি চালায়নি।নাগরিকত্ব সংশোধনী বিলে রাষ্ট্রপতির স্বাক্ষরের পর থেকেই উত্তেজনা শুরু হয় ভারতজুড়ে। পশ্চিমবঙ্গ, আসাম, ত্রিপুরা, মেঘালয়, দিল্লি হয়ে পুরো দেশেই রাস্তায় নামেন বিক্ষুব্ধ লোকজন। দিল্লির জামিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের পর অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরাও আন্দোলন শুরু করেন। শনিবার দিল্লি পুলিশের কাছে আত্মসমর্পণ করেন দলিতদের সংগঠন ভীম আর্মির প্রধান চন্দ্রশেখর আজাদ। গত শুক্রবার তার নেতৃত্বে জামা মসজিদে বিশাল মিছিল বের হয়। সেদিন পুলিশের হাতে আটক হলেও তিনি পালিয়ে গিয়েছিলেন।নাগরিকত্ব আইনের বিরোধিতায় এবার কলকাতার রাজপথে নামলেন কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। শত শত ছাত্রছাত্রী মিছিলে অংশ নিয়েছেন। বাম, কংগ্রেস এবং তৃণমূল রাস্তায় নেমে নাগরিকত্ব আইনের বিরোধিতা করছে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তিন দিন ধরে শহরের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে মিছিল করেছেন। শনিবার আসামের গুয়াহাটিতে বিক্ষোভ করেন বহু নারী। তামিলনাড়ূর চেন্নাইয়েও নারীরা পোস্টার নিয়ে মাঠে নামেন।এদিকে দেশজুড়ে বিক্ষোভের মধ্যেই কেন্দ্রীয় সংখ্যালঘু মন্ত্রী মুক্তার আব্বাস নাকভি বলেছেন, সারাদেশে জাতীয় নাগরিক নিবন্ধন তালিকা বা এনআরসি করার কোনো পরিকল্পনাই হয়নি। সরকারি কোনো পর্যায়ে এনআরসি নিয়ে এখনও কোনো আলোচনা হয়নি। এতে এনআরসি নিয়ে মোদি সরকারের পিছু হঠার ইঙ্গিতই পাওয়া যাচ্ছে বলে মনে করছেন অনেকে।


Comments are closed.

ইমেইল: arahmansat@gmail.com
Design & Developed BY CodesHost Limited
Raytahost Facebook Sharing Powered By : Raytahost.com