December 11, 2024, 7:18 am
মশা নিয়ন্ত্রণে সকল প্রচেষ্টাই যেন ব্যর্থ হয়েছে। দিনে বা রাতে মাশার কামড়ে অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছেন খুলনা নগরবাসী। যদিও এজন্য জনসচেনতাকে দায়ী করছেন খুলনা সিটি কর্পোরেশনের প্রধান বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তা। তার মতে, গৃহস্থলির ময়লা আবর্জনা ড্রেনে ফেলানোর কারণে সেখানে পানি জমে মশার উৎপত্তি হচ্ছে।
শীতের মৌসুম শুরু হওয়ার আগেই খুলনা মহানগরীতে অস্বাভাবিক আকারে মশা বেড়েছে। দিন কি রাতে মাশার হাত থেকে নিস্তার পাওয়া খুবই কঠিন। রাতে মশারি টানিয়ে ঘুমাতে গেলেও যেন রক্ষা নেই!
বৃহস্পতিবার (২৬ নভেম্বর) সকালে কথা হয় ব্যবসায়ী তৌহিদুল আলমের সাথে। তিনি জানান, সারা দিন ব্যবসা নিয়ে ব্যস্ত থাকতে হয়। রাতে বাসায় আসলে মশার উৎপাতে শান্তিতে একটু বসাও যায় না। মশা তাড়ানোর ব্যাট ব্যবহার করলে আরো বেশী আসে। মশা তাড়নোর জন্য কয়েল ব্যবহার করলে যায়ও না। মাঝে মধ্যে সিটি কর্পোরেশন থেকে ফগার মেশিন নিয়ে ধোয়া দিয়ে যায়, কিন্তু তাতে মশার হাত থেকে নিস্তার পাওয়া যায় না। আবার দু’দিন পরে মশা তাড়ানোর জন্য স্প্রে নিয়ে আসেন স্প্রেম্যান। সেটি দিয়েও কাজ হয় না।
খুলনা মহানগরীর বানরগাতির মেটোপোল এলাকা থেকে সুফিয়া খানম (গৃহিনী) খুলনা গেজেটকে জানান, গত কয়েকদিন মশার উৎপাত খুব বেড়েছে। মশার আক্রমণ থেকে রক্ষা পেতে ঘরে কয়েল জ্বালিয়েও কোন লাভ হচ্ছে না। ছেলে মেয়েরা মশার যন্ত্রণায় ঠিকমতো লেখাপড়াও করতে পারছে না।
সিটি কর্পোরেশনের প্রধান বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তা আব্দুল আজিজ জানান, মশা প্রজননের মৌসুম এখন। মশা তাড়ানোর উদ্যোগ সিটি কর্পোরেশন থেকে নেয়া হয়েছে। মশক নিধনের জন্য তেল আমদানিরর জন্য টেন্ডার হয়ে গেছে, এখন তা অনুমোদনের অপেক্ষায় রয়েছে। ৩১ টি ওয়ার্ডে কেন্দ্রীয়ভাবে নতুন করে ২০ জন স্প্রে ম্যান নিয়োগ দেওয়া হয়েছে ও ৭০ টি স্প্রে এবং ১৩ টি নতুন ফগার মেশিন সংযোজন করা হয়েছে। প্রত্যেকটি ওয়ার্ডে সকালে কালো তেল এবং মশার লার্ভা শেষ করার জন্য আমরা ঔষুধ ব্যবহার করছি।
সিটি কর্পোরেশনের ঐ কর্মকর্তা আরও জানান, জনগনকে সচেতন হতে হবে। বাড়ির আশপাশ আমাদের পরিস্কার রাখতে হবে। ড্রেনে মায়লা আবর্জনা যাতে না পড়ে সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। কারণ পানি জমে থাকলে সেখানে মশার লার্ভা সৃষ্টি হবেই। আর সেখান থেকে উৎপত্তি হবে মশা।
এদিকে সম্প্রতি কেসিসির কনজারভেন্সি বিভাগের এক সভায় সিটি মেয়র তালুকদার আবদুল খালেক মশক নিধন কার্যক্রম জোরদার করার পাশাপাশি নগরীতে পরিচ্ছন্ন ও স্বাস্থ্যকর পরিবেশ নিশ্চিত করার নির্দেশনা দিয়েছেন। সভায় নগরবাসীর সচেতনতা, বাড়ির আঙিনা পরিচ্ছন্ন ও ড্রেনে ময়লা-আবর্জনা ফেলা থেকে বিরত থাকার আহ্বান জানানো হয়।
অন্যদিকে খুলনা বিএনপি নেতৃবৃন্দ এক বিবৃতিতে নগরবাসীকে মশার উৎপাত থেকে রক্ষা করতে নগরীতে দ্রুত মশক নিধন অভিযান পরিচালনার পদক্ষেপ গ্রহণ করার জন্য সিটি কর্পোরেশনের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। সেক্ষেত্রে নগরীর আবর্জনা পরিস্কার, এই শীত মৌসুমে নগরীর সকল ড্রেন থেকে সকল আবর্জনা অপসারণ, মশার বংশ বিস্তার রোধে ড্রেনে ঔষধ দেয়া ও উড়ন্ত মশারোধে তিনমাস অব্যাহতভাবে স্প্রে করা। একই সাথে নগরীর বাড়ীতে যেয়ে ময়লা সংগ্রহ কার্যক্রম আরও গতিশীল করার জন্য ব্যবস্থাপনাকে ঢেলে সাজানোর দাবি জানানো হয়েছে।
Comments are closed.