July 27, 2024, 3:03 am

সাংবাদিক আবশ্যক
সাতক্ষীরা প্রবাহে সংবাদ পাঠানোর ইমেইল: arahmansat@gmail.com
মাঠে মাঠে কচুরি ফুলের নান্দনিক সমাহার…………

মাঠে মাঠে কচুরি ফুলের নান্দনিক সমাহার…………

শহিদুল ইসলামঃফসলহীন আদিগন্ত মাঠ জুড়ে কচুরি ফুলের সমাহার। যতদূর দৃষ্টি যায় ততদূর সবুজ গালিচার বুকে সাদা রঙের আলপনা। শহরতলীর ইটাগাছা পূর্বপাড়া হাবুকুড় নামক বিলে থোকায় থোকায় ফুটেছে কচুরিফুল। চোখ জুড়ানো অপরূপ দৃশ্যে মুগ্ধ হচ্ছেন প্রাকৃতিক সৌন্দর্য পিপাসু মানুষ। আষাঢ়ের বৃষ্টিহীন নির্মল নীলাকাশের নিচে মাঠ জুড়ে এমন নান্দনিক শোভা উপভোগ করতে আসছেন অনেকে। সৌন্দর্যের পাপড়ি মেলে ধরা কচুরিফুলের এ আহ্বানে সাড়া দিয়ে অনেকেই তুলছেন সেলফি। ছবির ক্যানভাসে একই ফ্রেমে আবদ্ধ হচ্ছেন তরুণ-তরুণীরা। চির সবুজের বুকে রূপালী রঙের এমন নান্দনিক সৌন্দর্য় উপভোগ করতে এসে সুমাইয়া বিনতে সোহেল নামের এক তরুণী বলেন, কচুরি পানার ফুলের যে এমন সৌন্দর্য থাকে তা চোখে না দেখলে হয় তো জানাই হতো না। গলা ছেড়ে বলতে ইচ্ছে করছে-এ কী অপরূপ রূপে মা তোমায় হেরিনু পল্লী জননী। আঁখি রহমান নামের আরেক তরুণী বলেন, বাড়ির পাশে এমন অপরূপ শোভা চিত্তবিনোদনে খুলে দেয় আনন্দের দুয়ার। দৃষ্টিহরা এমন দৃশ্য দেখে বলতে ইচ্ছে করে-কী শোভা কী ছায়া গো, কী স্নেহ কী মায়া গো…। আফরিদি হোসেন, সেলিম হোসেনসহ কয়েকজন জানান, বিকেল হলেই অনেকে বেরিয়ে পড়েন সৌন্দর্যের খোঁজে। বিলের মধ্যে ফুটে থাকা এমন সৌন্দর্যে মুগ্ধ। প্রকৃতির রঙ্গমঞ্চ বোধ হয় এভাবে সেজে হাতছানি দেয়।বিশিষ্ট কবি সৌহার্দ সিরাজ বলেন, ফুল সৌন্দর্যের প্রতীক। পবিত্রতার প্রতীক তো বটেই। সব ফুল যখন দল মেলে ফোটে তখন মনে হয় চারিদিকে যেন সুন্দরের আগুন লেগেছে।উদ্ভিদ বিষয়ক গবেষক সাতক্ষীরা সরকারি কলেজের উপাধ্যক্ষ আমান উল্যাহ হাদি বলেন, কচুরিপানা জলজ উদ্ভিদ। নদ-নদী, পুকুর, জলাশয়ে কচুরি দেখা যায়। এটি একটি বহু-বর্ষজীবী ভাসমান জলজ উদ্ভিদ। এর বৈজ্ঞানিক নাম ঊরপযযড়ৎহরধ পৎধংংরঢ়বং। অনেকে একে বাংলাদেশের স্থানীয় উদ্ভিদ মনে করলেও আসলে এর আদি নিবাস দক্ষিণ আমেরিকার ব্রাজিলে। নয়নাভিরাম, মনোমুগ্ধকর, চিত্তাকর্ষক ফুল যা প্রকৃতিপ্রেমীদের বিমুগ্ধ করে। ইংল্যান্ডের রাণীর মাধ্যমে ভারতবর্ষে কচুরিপানার বিস্তার ঘটে। ইংল্যান্ডের রাণী কচুরিপানার রূপে মুগ্ধ হয়ে পুকুর খনন করে তাতে কচুরিপানা লাগিয়েছিলেন। এরপর পাইক-পেয়াদা, রাজা, জমিদার সবাই সৌখিনতার বশে ওয়াটার গার্ডেনে কচুরিপানা লাগিয়ে সৌন্দর্যবর্ধন করেন। কচুরিপানা দেখতে গাঢ় সবুজ হলেও এর ফুলগুলো সাদা পাপড়ির মধ্যে বেগুনি ছোপযুক্ত এবং মাঝখানে হলুদ ফোঁটা থাকে। সাদা এবং বেগুনি রঙের মিশ্রণে এক অন্যরকম সৌন্দর্য সৃষ্টি করে। সাদা পাপড়ির স্থলে কোথাও হালকা আকাশি পাপড়িও দেখতে পাওয়া যায়। প্রতিটি ফুলে ছয়টি করে পাপড়ি দেখা যায়। বাংলাদেশে প্রায় সাত প্রজাতির কচুরি দেখতে পাওয়া যায়। প্রায় সারা বছরই কচুরি ফুল ফুটতে দেখা যায়। কচুরি ফুলের মুগ্ধতায় আমাদের মধ্যে প্রকৃতি প্রেম জাগ্রত হয়।


Comments are closed.

ইমেইল: arahmansat@gmail.com
Design & Developed BY CodesHost Limited
Raytahost Facebook Sharing Powered By : Raytahost.com