জেলার উন্নয়ন ও সম্ভাবনার নবদিগন্ত হিসেবে বিবেচিত রূপসী দেবহাটা ম্যানগ্রোভ পর্যটন কেন্দ্রটি পূর্ণাঙ্গ পর্যটন কেন্দ্র হিসেবে গড়ে তুলতে অদ্যাবধি অবৈধ দখলে থাকা দখলদারদের উচ্ছেদ সহ ম্যানগ্রোভের মোট জমি মাপ জরিপে জারিকৃত জেলা প্রশাসনের লিখিত অফিস আদেশ ৫ মাসেও বাস্তবায়িত হয়নি। এতে করে একদিকে ম্যানগ্রোভ পর্যটন কেন্দ্রটির উন্নয়নে ব্যবহার উপযোগী প্রায় ১০০ বিঘা সরকারি সম্পত্তি এখনও বিভিন্ন অজুহাতে মৎস্য ঘের হিসেবে ভোগদখল করে যাচ্ছে দখলদাররা। আর অন্যদিকে জমি থাকা স্বত্তেও দখলমুক্ত না হওয়ায় পর্যটন কেন্দ্রটির উন্নয়নে সরকারি বরাদ্দকৃত কোটি কোটি টাকার প্রকল্প বাস্তবায়নে প্রয়োজনীয় জমি ব্যবহারে ক্রমশ ছোট আকার ধারন করবে পর্যটন কেন্দ্রটি। রূপসী দেবহাটা ম্যানগ্রোভ পর্যটন কেন্দ্রটির অবস্থান দেবহাটার ইছামতি নদীর চরভরাটি রাজনগর তথা শিবনগর মৌজাতে। চলতি বছরেই ম্যানগ্রোভ পর্যটন কেন্দ্রটির উন্নয়ন সরকারীভাবে বরাদ্দ দেয়া হয়েছে ২০ কোটি টাকা। যার ভিত্তিতে পর্যটন কেন্দ্র ঘিরে বেশ কয়েকটি মেগা প্রকল্প হাতে নিয়েছে প্রশাসন। পাশাপাশি জনপ্রশাসন পদকে ভূষিত হয়ে দেশব্যাপী ইতোমধ্যেই নজর কেড়েছে উন্নয়নের অপেক্ষায় থাকা পর্যটন কেন্দ্রটি। বছরের শুরুতেই রূপসী দেবহাটা ম্যানগ্রোভ পর্যটন কেন্দ্রটির মোট জমি নির্ধারণসহ অবৈধ দখলদারদের উচ্ছেদে রাজনগর তথা শিবনগর মৌজার সরকারী খাস খতিয়ানের অন্তভুক্ত সম্পতি মাপ জরিপের উদ্যোগ নেয় সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসন। এরই অংশ হিসেবে রূপসী দেবহাটা ম্যানগ্রোভ পর্যটন কেন্দ্রের জমি মাপ জরিপের জন্য চার সদস্য বিশিষ্ট একটি সার্ভেটিম গঠন করে দেবহাটা ইউনিয়ন ভুমি সহকারী কর্মকর্তাকে সিএস ও বিএস নকশা অনুযায়ী রেজিষ্টার হালনাগাদের জন্য ২২ মে সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসকের কার্যালয় থেকে রেভিনিউ কালেক্টর আমিনুল ইসলাম স্বাক্ষরিত এক লিখিত আদেশ দেয়া হয়। হালনাগাদকৃত রেজিষ্টারে দেখা গেছে রূপসী দেবহাটা ম্যানগ্রোভ পর্যটন কেন্দ্রে সব মিলিয়ে প্রায় ২০০ বিঘা সরকারী ব্যবহার উপযোগী জমি রয়েছে। যার মধ্য থেকে বর্তমানে মাত্র ১০৩ বিঘা জমি প্রশাসনিকভাবে পর্যটন কেন্দ্রটির দখলে রয়েছে। অবশিষ্ট প্রায় ১শ বিঘা জমি এখনও নামে বে-নামে বিভিন্ন অজুহাতে রয়েছে অবৈধ দখলদারদের মধ্যে। আর অবশিষ্ট প্রায় ১০০ বিঘার জমির মধ্যে প্রায় ৮০বিঘা জমিই রয়েছে দেবহাটার শিবনগর গ্রামের সুরত আলী মোল্যার ছেলে অহিদুল ইসলামের দখলে। তবে অহিদুল ইসলাম বিভিন্ন ব্যাক্তির নামে বন্দোবস্তের কাগজ দেখিয়ে বাঁধাহীন ভাবেই ম্যানগ্রোভ পর্যটন কেন্দ্রের জমিতে ৮০ বিঘার মৎস্য ঘের করছেন বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা। তাছাড়া বর্তমানে ভারতে অবস্থানরত চিত্তরঞ্জন ঘোষ নামের এক ব্যাক্তির রেখে যাওয়া জমিও নিজের ঘেরের মধ্যে দখল করে রাখার অভিযোগ রয়েছে অহিদুলের বিরুদ্ধে। কিন্তু অজ্ঞাত কারনে জেলা প্রশাসকের কার্যালয় থেকে লিখিত আদেশ দেয়ার ৫ মাস পেরিয়ে গেলেও তা বাস্তবায়ন করতে পারেনি প্রশাসন। তাই অবিলম্বে ম্যনগ্রোভ পর্যটন কেন্দ্রটির বৃহৎ উন্নয়নের স্বার্থে মাপ জরিপ কার্য সম্পাদন সহ অবৈধ দখলদার থেকে সরকারী জমি পুনরুদ্ধারের জন্য জেলা প্রশাসকের কাছে দাবী জানিয়েছে দেবহাটার সকল শ্রেণি পেশার মানুষ।