October 31, 2024, 3:11 am
ঢাকায় অবৈধ ক্যাসিনো পরিচালনার অভিযোগে গ্রেফতার হয়ে কারাগারে যুবলীগ (বহিষ্কৃত) নেতা খালেদ মাহমুদ ভূঁইয়া। জুয়ারিরা তাকে ‘ক্যাসিনো খালেদ’ হিসেবে চিনেন। গ্রেফতার হওয়ার পর একে একে বেরিয়ে আসছে খালেদের অতীত-বর্তমানের অপকর্মের চাঞ্চল্যকর নানা তথ্য।খালেদ মাহমুদ ভূঁইয়া ফ্রিডম পার্টির নেতা ছিলেন। আওয়ামী লীগ রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় এলে পল্টি দিয়ে যুবলীগে যোগ দেন তিনি। রাতারাতি হয়ে যান যুবলীগের প্রভাবশালী নেতা। তিনি সবশেষ ঢাকা মহানগর যুবলীগ দক্ষিণের সাংগঠনিক সম্পাদক ছিলেন।প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে হত্যার উদ্দেশ্যে তার ওপর হামলা চালিয়েছিলেন এ জুয়ারি। তিনি শেখ হাসিনাকে হত্যা চেষ্টায় সশরীরে অংশ নেন। এ ঘটনায় মামলার চার্জশিটে (অভিযোগপত্র) তাকে মৃত দেখানো হয় এবং তার নাম বাদ দেওয়া হয়।১৯৮৯ সালে শেখ হাসিনাকে হত্যার উদ্দেশে রাজধানীর ধানমণ্ডির ৩২ নম্বর বাড়িতে ফ্রিডম পার্টির নেতাদের নেতৃত্বে হামলা চালানো হয়। ওই হামলায় শীর্ষ সন্ত্রাসী সৈয়দ নাজমুল মাহমুদ মুরাদ, জাফর আহম্মদ মানিক ও এদের ঘনিষ্ঠ সহযোগী খালেদ মাহমুদ ভূঁইয়া সশরীরে অংশগ্রহণ করেন।ঘটনার আট বছর পর মুরাদ ও মানিকের সঙ্গে খালেদের সংশ্লিষ্টতার কথা উল্লেখ করে চার্জশিট দাখিল করে সিআইডি (পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ)। কিন্তু ঢাকার সূত্রাপুর থানার একটি হত্যা মামলার সূত্রের বরাত দিয়ে চার্জশিটে বলা হয়, ‘খালেদের মৃত্যু হয়েছে। তবে খালেদ কখন কীভাবে মারা গেছেন তা উল্লেখ করা হয়নি।
শুধু তা-ই নয়; খালেদের বাবার নাম ও পূর্ণাঙ্গ ঠিকানা পাওয়ার কথা বলা হলেও চার্জশিটে এসবের কোনো রাখা হয়নি। ক্যাসিনো খালেদের দীর্ঘ দিনের সহযোগী মোহাম্মদ আলী। একটি জাতীয় দৈনিক পত্রিকাকে মোহাম্মদ আলী বলেন, বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে হত্যার উদ্দেশে ফ্রিডম পার্টির নেতাদের ওই হামলায় সরাসরি অংশ নেন খালেদ।
সূত্র জানায়, ১৯৯৭ সালে ওই মামলার চার্জশিট দেন সিআইডি। দীর্ঘ ২২ বছর পর অভিযোগ উঠেছে- ক্যাসিনো খালেদই ওই হামলায় জড়িত খালেদ। কিন্তু বলা হয়েছিল, তিনি মারা গেছেন। ওই মামলার বিচার কাজ সমাপ্ত হয়েছে। ২০১৭ সালে ওই হামলা মামলার রায় হয়। রায়ে খালেদের দুই সহযোগী সন্ত্রাসী মুরাদ ও মানিকসহ ১১ জনকে ২০ বছর করে কারাদণ্ড দেওয়া হয়। সময়ের ব্যবধানে ফ্রিডম পার্টির সেই খালেদ যুবদলের প্রভাবশালী নেতা হন।রাজধানীর ফকিরাপুলের ইয়ংমেন্স ক্যাসিনোর মালিক খালেদ মাহমুদ ভূঁইয়াকে অস্ত্রসহ আটক করেছে র্যাব। গত ১৮ সেপ্টেম্বর রাতে তাকে তার গুলশানের বাসা থেকে আটক করা হয়। একই সময় ফকিরাপুলের ইয়ংমেন্স ক্লাবে ক্যাসিনোতে অভিযান চালায় র্যাব। এসময় ওই ক্যাসিনোর ভেতর থেকে ২৫ লাখ টাকাসহ ১৪২ জন নারী-পুরুষকে আটক করা হয়। অভিযান শেষ করার পরই খালেদের বাড়িতে ঢুকে র্যাব।ঢাকা দক্ষিণ যুবলীগ নেতা খালেদ মাহমুদ ভূঁইয়ার বিরুদ্ধে অভিযোগের শেষ নেই। মতিঝিল-ফকিরাপুল ক্লাবপাড়ায় ক্যাসিনো থেকে শুরু করে কমপক্ষে সাতটি সরকারি ভবনে ঠিকাদারি নিয়ন্ত্রণ ও সরকারি জমি দখলের মতো নানা অভিযোগ এ নেতার বিরুদ্ধে। তার বিরুদ্ধে রয়েছে একাধিক মামলাও। রিয়াজ মিল্কি ও তারেক হত্যার পর পুরো এলাকা নিয়ন্ত্রণে নেন খালিদ মাহমুদ ভূঁইয়া।এ যুবলীগ নেতা রাজধানীর মতিঝিল, ফকিরাপুল এলাকায় কমপক্ষে ১৭টি ক্লাব নিয়ন্ত্রণ করেন। এর মধ্যে ১৬টি ক্লাব নিজের লোকজন দিয়ে আর ফকিরাপুল ইয়াং ম্যানস নামের ক্লাবটি সরাসরি তিনি পরিচালনা করেন। প্রতিটি ক্লাব থেকে প্রতিদিন কমপক্ষে এক লাখ টাকা নেন তিনি। এসব ক্লাবে সকাল ১০টা থেকে ভোর পর্যন্ত ক্যাসিনো বসে।
Comments are closed.