October 31, 2024, 3:11 am
শ্যামনগরের শংকরকাটি তাহেরিয়া সুন্নিয়া স্বতস্ত্র ইবতেদায়ী মাদ্রাসার ৫ম শ্রেণির সমাপনী পরীক্ষায় ৭ম শ্রেণির ছাত্রী অংশ নিতে গিয়ে ধরা পড়েছে। সে কাছিহারানিয়া গ্রামের ইয়াকুব আলীর কন্যা। গত ২৪ নভেম্বর শেষ পরীক্ষা (গণিত) গোবিন্দপুর আবু হানিফ কলেজিয়েট স্কুল কেন্দ্র থেকে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে তাকে আটক করা হয়। কেন্দ্র পরীক্ষা সরকারী কর্মকর্তা উপজেলা রিসোর্স সেন্টারের ইনস্ট্রাক্টর আনোয়ার কবীর ও কেন্দ্র সচিব অধ্যক্ষ গাজী শফিকুল ইসলামের উপস্থিতিতে আরিফা খাতুন লিখিত অঙ্গীকারপত্রে ঐ মাদ্রাসার শিক্ষক মাও. রেজাউল করিমের বিরুদ্ধে অভিযোগ করে জানান, তাকে ভুল বুঝিয়ে এ পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করাতে বাধ্য করান। তার রোল নং-ম-১৬৬। আরিফা খাতুন শংকরকাটি খাদিজা বালিকা বিদ্যালয়ের ৭ম শ্রেণিতে অধ্যয়নরত থাকায় সমাপনী এ পরীক্ষা স্বেচ্ছায় ও স্বজ্ঞানে বাতিল করতে ইচ্ছা পোষণ করেন। ইয়াকুব আলী তার কন্যা আরিফাকে পরীক্ষা স্থগিত করে নিজ জিম্মায় কেন্দ্র থেকে বাড়িতে নিয়ে যান। স্থানীয়রা জানান, আরিফা ছাড়াও ইয়াছমিন, নাজমা, সাদিয়া, হাবিবুর রহমান সাজু, জারিন তাসরিন মৌরী মাধ্যমিক পর্যায়ের লেখাপড়া করেও তাদের বাড়ির ঠিকানা পরিবর্তন করা হয়েছে। পার্শ্ববর্তী কালিগঞ্জ উপজেলা থেকে কয়েকজনকে অর্থের বিনিময়ে সহকারী শিক্ষক রেজাউল করিম তার মাদ্রাসা থেকে পরীক্ষা দিতে বাধ্য করান। তদন্তে প্রকৃত ঘটনা বের হবে। মাওলানা রেজাউল করিমের বিরুদ্ধে অভিযোগের শেষ নেই। ইতোপূর্বে তার বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগের তদন্ত প্রতিবেদনে শ্যামনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. কামরুজ্জামান উল্লেখ করেন-শংকরকাটি তাহেরীয়া সুন্নিয়া স্বতন্ত্র এবতেদায়ী মাদ্রাসাটি ২০০০ সালে নাম পরিবর্তন পূর্বক শংকরকাটি সুন্নিয়া দাখিল মাদ্রাসাটি স্বীকৃতিপ্রাপ্ত হলে রেজাউল করিম ইস্তফা দিয়ে ২০০২ সালে চাকরি ছেড়ে বিদেশ চলে যান। রেজাউল করিম বিদেশে ৭ বছর থাকার পর ২০০৯ সালে দেশে এসে মাদ্রাসাটির বিরুদ্ধে শত্রুতা পোষণ করে ২০১৫ সালে স্বপ্রণোদিত হয়ে তার বসতভিটার সংলগ্ন ৪ শতক সম্পত্তিতে একই নামে শংকরকাটি তাহেরীয়া সুন্নিয়া স্বতন্ত্র এবতেদায়ী মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠা করেন। তিনি দুর্বল অবকাঠামো নির্মাণ করে যেনতেনভাবে গুটি কয়েক ছেলে মেয়ে নিয়ে শিক্ষা কার্যক্রম চালিয়ে আসছে। দাখিল মাদ্রাসাটির সাথে প্রতিযোগিতায় নেমে এবতেদায়ী মাদ্রাসায় অধিক ছাত্র-ছাত্রী সমাপনী পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করাতে রেজাউল করিম প্রতারণা ও জালিয়াতির আশ্রয় নেন। তৎকালিন শ্যামনগর এসিল্যান্ড সুজন সরকার এক প্রতিবেদনে জানান, ২০০০ সাল থেকে ২০১৫ সাল পর্যন্ত কাগজ কলম ব্যতীত শংকরকাটি তাহেরীয়া সুন্নিয়া স্বতন্ত্র এবতেদায়ী মাদ্রাসার কোন অস্তিত্ব ছিল না। এদিকে স্থানীয়রা জানান, একই নামে পাশাপাশি দুটি মাদ্রাসা থাকায় প্রশাসন ও সাধারণ জনগণ নানাবিধ সমস্যায় পড়েন। প্রতিযোগিতায় টিকতে শিক্ষক রেজাউল করিম দুর্নীতি ও জালিয়াতির আশ্রয় নিয়ে ২০১৯ সালে ইবতেদায়ী সমাপনী পরীক্ষায় ৬ জন ছাত্র-ছাত্রীকে অংশগ্রহণ করার অভিযোগে তদন্ত প্রয়োজন। এ ব্যাপারে সহ-সুপার রেজাউল করিম জানান, আরিফা খাতুন আটক হয়ে তার পিতার জিম্মায় ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। যথাযথ তদন্ত সাপেক্ষে সহ-সুপার রেজাউল করিমের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেছে সচেতন মহল।
Comments are closed.