সাতক্ষীরা প্রবাহ ডেস্ক : ক্ষমতার অপব্যবহার করে প্রায় ১৭ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে করা মামলার আসামি সাতক্ষীরার সাবেক সিভিল সার্জন তাওহীদুর রহমানসহ ৯ জনের বিদেশযাত্রায় নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। আজ সোমবার সংস্থার উপপরিচালক জাহাঙ্গীর আলম স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে এই নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়।দুদক সূত্র জানায়, পুলিশের বিশেষ শাখার বিশেষ পুলিশ সুপার (ইমিগ্রেশন) বরাবর চিঠি পাঠানো হয়েছে। চিঠিতে বলা হয়েছে, মামলার এসব আসামি দেশ ছেড়ে পালানোর চেষ্টা করছেন বলে দুদক বিশ্বস্ত সূত্রে জেনেছে। তাই তাঁদের বিদেশযাত্রায় নিষেধাজ্ঞা দেওয়া প্রয়োজন।উল্লেখ্য, সাতক্ষীরার স্বাস্থ্যখাতের এই বিপুল পরিমাণ অর্থ লুটপাটের সাথে জড়িতদের গ্রেফতারের দাবিতে ধারাবাহিক আন্দোলন কর্মসূচির অংশ হিসেবে গত ২৪ এপ্রিল ২০১৯ তারিখে সাতক্ষীরা সিভিল সার্জন অফিস ঘেরাও করে সাতক্ষীরার নাগরিক অধিকার আদায়ের আপোষহীন গণসংগঠন হিসেবে পরিচিত নাগরিক আন্দোলন মঞ্চ, সাতক্ষীরা। দুদক আসামিদের বিরুদ্ধে মামলা করায় দুদককে ধন্যবাদ জানিয়ে এবং অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের দুর্নীতিবাজদের হুশিয়ার করে সাতক্ষীরা শহরে আনন্দ মিছিল করে সংগঠনটি।৯ জুলাই এই ৯ জনের বিরুদ্ধে দুদকের খুলনা সমন্বিত জেলা কার্যালয়ে মামলা করেন প্রধান কার্যালয়ের উপসহকারী পরিচালক জালাল উদ্দিন।
আসামিদের নাম :
১. ডাঃ তাওহীদুর রহমান , সাবেক সিভিল সার্জন, সাতক্ষীরা।
২. এ,কে, এম ফজলুল হক, স্টোর কিপার , সিভিল সার্জন অফিস, সাতক্ষীরা।
৩. মোঃ আনোয়ার হোসেন, হিসাব রক্ষক, সিভিল সার্জন অফিস, সাতক্ষীরা।
৪. মোঃ জাহের উদ্দিন সরকার, প্রোপাইটর : মেসার্স বেঙ্গল সায়েন্টিফিক এন্ড সার্জিকেল কোং।
৫. মোঃ আব্দুর ছাত্তার সরকার, ফুলবাড়ী, দিনাজপুর।
৬. মোঃ আহসান হাবিব, ফুলবাড়ী, দিনাজপুর।
৭. মোঃ আসাদুর রহমান, ফুলবাড়ী, দিনাজপুর।
৮. কাজী আবু বকর সিদ্দীক, মাদারীপুর।
৯. এ,এইচ,এম আব্দুস কুদ্দুস, সহকারী প্রকৌশলী (অব:), নিমিউ এন্ড টিসি, ঢাকা।মামলার এজাহারে বলা হয়, অভিযুক্ত ব্যক্তিরা পরস্পর যোগসাজশে ক্ষমতার অপব্যবহার করে অসৎ উদ্দেশ্যে পূর্বপরিকল্পিতভাবে সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালসহ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের যন্ত্রপাতির কোনো ধরনের চাহিদাপত্র না থাকা সত্ত্বেও যন্ত্রপাতি কেনার উদ্যোগ নেন। জাল জালিয়াতি ও প্রতারণার আশ্রয়, অপরাধজনক বিশ্বাসভঙ্গ করে দরপত্র আহ্বান, দরপত্র সংগ্রহ, দরপত্র মূল্যায়ন ও কার্যাদেশ দিয়ে তিনটি মিথ্যা বিলের বিপরীতে মোট ১৬ কোটি ৬১ লাখ ৩১ হাজার ৮২৭ টাকা তুলে নিয়ে আত্মসাৎ করেছেন।এবিষয়ে নাগরিক আন্দোলন মঞ্চ, সাতক্ষীরার সাধারণ সম্পাদক হাফিজুর রহমান মাসুম বলেন, আমরা শুরু থেকেই নাগরিকদের নিয়ে সাতক্ষীরার স্বাস্থ্য খাতের এই কোটি কোটি টাকা লুটপাটকারীদের গ্রেফতার ও বিচারের দাবিতে রাজপথে থেকেছি। দুদকের মামলা করার সিদ্ধান্তকে আমরা নাগরিক অধিকার আদায় এবং অনিয়ম ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে আমাদের আন্দোলনের সাফল্য হিসেবে দেখছি। এখন আসামিদের দেশত্যাগের নিষেধাজ্ঞাকে আমরা নাগরিকদের প্রাথমিক বিজয় হিসেবে দেখছি। অপরাধীদের বিচারের মাধ্যমে চূড়ান্ত শাস্তি নিশ্চিত করার মধ্য দিয়ে প্রৃকত বিজয় আসবে এবং সমাজে দুর্নীতিবিরোধী আন্দোলন আরও বেগবান হবে।