October 31, 2024, 3:13 am

সাংবাদিক আবশ্যক
সাতক্ষীরা প্রবাহে সংবাদ পাঠানোর ইমেইল: 1linenewsagency@gmail.com
সাতক্ষীরা কেন্দ্রীয় পাবলিক লাইব্রেরি: স্বাধীনতা বিরোধীদের প্রতিষ্টা করতে মরিয়া একটি মহল

সাতক্ষীরা কেন্দ্রীয় পাবলিক লাইব্রেরি: স্বাধীনতা বিরোধীদের প্রতিষ্টা করতে মরিয়া একটি মহল

সুন্দর আয়োজনের কিছুটা হলেও ছেদ পড়েছে বিকৃত ইতিহাস প্রতিষ্ঠায় মহল বিশেষের চেষ্টার কারণে। যারা যা নয়, তাদেরকে তাই বানানোর চেষ্টার কারণে। ঊনসত্তরের উত্তাল গণআন্দোলনের সময়ে সাতক্ষীরায় পরপর দুটি প্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠিত হয়। এর একটি পাবলিক লাইব্রেরী এবং অপরটি সাতক্ষীরা প্রেসক্লাব। দুটি প্রতিষ্ঠানই সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবের বর্তমান ভবনে প্রতিষ্ঠা করা হয়। তৎকালীন সাতক্ষীরা মহাকুমা প্রশাসক জনাব সফিউর রহমানই মূলত প্রতিষ্ঠান দুটি প্রতিষ্ঠার প্রধান উদ্যোক্তা। শহরের বেশকিছু সৃজনশীল চিন্তার শিক্ষক, কবি, সাহিত্যিক, সাংবাদিক এই প্রক্রিয়ায় যুক্ত হন। আর এই উদ্যোগে এইসব পেশার লোক ছাড়া অন্যদের থাকারও কথা নয়। কিন্তু ৫০ বছর পর এসে সাতক্ষীরা কেন্দ্রীয় পাবলিক লাইব্রেরীর সুবর্ণ জয়ন্তী ও স্বাধীনতার মহান স্থপতি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশত বার্ষিকী উপলক্ষে বইমেলার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে লাইব্রেরীর প্রতিষ্ঠাকালীন সদস্য হিসেবে ১৪ জন ব্যক্তিকে সংবর্ধনা প্রদান করায় বিতর্কের সৃষ্টি হয়।যে ১৪ জন ব্যক্তিকে সংবর্ধনা দেওয়া হয়েছে লাইব্রেরীর প্রতিষ্ঠাকালীন সদস্য হিসেবে তার ভিত্তি করা হয়েছে, ২০০০ সালে সাতক্ষীরা কেন্দ্রীয় পাবলিক লাইব্রেরীর পক্ষ থেকে প্রকাশিত ¯্রােত নামের একটি সংকলন থেকে। ঐ সংকলনে লাইব্রেরীর তৎকালীন সাধারণ সম্পাদক সর্বজন শ্রদ্ধেয় অধ্যক্ষ অসীত কুমার মজুমদারের নামে ছাপানো ‘সাতক্ষীরা কেন্দ্রীয় পাবলিক লাইবেরীর পঁচিশ বছর’ শীর্ষক ‘ভূমিকার বদলে’ শিরোনামে সম্পাদকীয় কলামে লাইব্রেরীর পূর্ববর্তী ২৫ বছরের কর্মকান্ডের একটি চিত্র তুলে ধরা হয়। যদিও ঐ লেখাতেই সুস্পষ্ঠ উল্লেখ করা হয়েছে, ‘যে সভায় লাইব্রেরি প্রতিষ্ঠার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়, তার কার্যবিবরণী পাওয়া যায়নি। তারিখসহ প্রথম যে কার্যবিবরণী মেলে তার তারিখ ১৪.০৩.১৯৭০। এরপূর্বের তারিখ বিহীন যে কার্যবিবরণীটি পাওয়া যায় (কা. বি. ব. প্রথম পৃষ্টাটি নেই)। তাতে একটি এডহক কমিটি গঠনের সিদ্ধান্ত আছে।’ ঐ লেখায় বলা হয়েছে ‘সম্ভবত এটিই লাইব্রেরির প্রতিষ্ঠাকালীন কমিটি।’ সেখানে তৎকালীন এসডিওসহ আরো ১১ জনের নাম রয়েছে। কিন্তু এই কমিটিই প্রতিষ্ঠাকালীন কমিটি সেটা ‘সম্ভবত’ শব্দটি ব্যবহারের মধ্যদিয়ে এবং ‘যে সভায় লাইব্রেরি প্রতিষ্ঠার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়, তার কার্যবিবরণী পাওয়া যায়নি।’ এ দুটি শব্দ ও বাক্য ব্যবহারের মধ্য দিয়ে সেটি নাকচই করা হয়েছে। তারপরও লাইব্রেরীর প্রতিষ্ঠা নিয়ে আরও তথ্য সংগ্রহ ও গবেষণা করা যেতো। কিন্তু সেটা না করে নিজেদের ইচ্ছা মতো ১৪জন ব্যক্তিকে প্রতিষ্ঠাকালীন সদস্যের মর্যাদা দিয়ে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষ ও বিপক্ষ শক্তিকে এক করে ফেলার প্রচেষ্টা চালানো হয়েছে। আর সেই প্রচেষ্টায় এবারের সুবর্ণ জয়ন্তীর প্রকাশনা ‘¯্রােত’ এ সাধারণ সম্পাদকের কথা হিসেবে ৯ পাতার যে লেখা প্রকাশিত হয়েছে তার প্রায় সবটুকুই ২০০০ সালে ছাপানো তৎকালীন সাধারণ সম্পাদক অসীত কুমার মজুমদারের নামে ছাপানো লেখা। এখানে পরবর্তী ২৫ বছরের (১৯৯৪-২০১৯) লাইব্রেরীর কার্যক্রম নিয়ে কোন তথ্য উপস্থাপন করা হয়নি। অর্থাৎ অসীত কুমার মজুমদারের নামে ছাপানো লেখাটি কতিপয় স্বাধীনতা বিরোধীকে লাইব্রেরীর প্রতিষ্ঠাকালীন সদস্য হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করতে ছাপানো হযেছে সেটি স্পষ্ট। তাছাড়া ঐ লেখাতেও এসডিও ছাড়া ১১জনের নাম রয়েছে। কিন্তু সংবর্ধনার তালিকায় আনা হলো ১৪ জনের নাম। এই অতিরিক্ত দু’জনের নাম কোন তথ্যের ভিত্তিতে এবং কেন প্রতিষ্ঠাকালীন সদস্যের তালিকায় অন্তর্ভূক্ত করা হলো তার কোন ব্যাখ্যা বর্তমান সাধারণ সম্পাদকের কলামে উল্লেখ নেই। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়টি হচ্ছে বিএনপি জামায়াত জোট সরকারের আমলেও লাইব্রেরীতে যাদের অস্তিত্ব ছিলো না মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বিরোধী সেই সমস্ত লোককে প্রতিষ্ঠিত করার জন্য লাইব্রেরির বর্তমান কমিটির বেশ কিছু সদস্য তৎপর হয়ে উঠেছেন। কিন্তু মহামান্য আদালতের সুস্পস্ট নির্দেশনা রয়েছে স্বাধীনতা বিরোধীদের নামে প্রতিষ্ঠিত স্থাপনার নাম মুছে ফেলার। সেখানে সাতক্ষীরা কেন্দ্রীয় পাবলিক লাইব্রেরীতে তাদেরকে নতুন করে প্রতিষ্ঠিত করার প্রচেষ্টায় হতবাক হয়েছেন সাতক্ষীরার সচেতন মহল। তাছাড়া বিতর্কিত ঐসব ব্যক্তিরা সৃজনশীল চিন্তার শিক্ষক, কবি, সাহিত্যিক, সাংবাদিক কোনটি নন।
এদিকে যে লেখাকে ভিত্তি হিসেবে ধরে লাইব্রেরির প্রতিষ্ঠাকালীন সদস্য হিসেবে কিছু ব্যক্তির নাম অর্ন্তভুক্তির চেষ্টা করা হলো ২০০০ সালে প্রকাশিত ¯্রােতের সেই সংখ্যা সাতক্ষীরা কেন্দ্রিয় পাবলিক লাইব্রেরিতে পাওয়া যায়নি। মেলা উদ্বোধনের পর ঐ কপি খুজতে গেলে লাইব্রেরির একজন স্টাফ জানান, দুটি কপি ছিল। তারমধ্যে একটি সাধারণ সম্পাদকেন কাছে। অপরটি কোথায় রাখা আছে তিনি জানেন না। ২৪ নভেম্বর রোববার পুনরায় ঐ কপিটি খুজতে গেলে লাইব্রেরিতে সেটি পাওয়া যায়নি।
এদিকে সুবর্ণ জয়ন্তী অনুষ্ঠানে সাতক্ষীরা কেন্দ্রীয় পাবলিক লাইব্রেরির প্রতিষ্ঠাকালিন সদস্য হিসেবে যাদের সম্মাননা দেয়া হয়েছে তারা হলেন, এমএ গফুর, আব্দুল বারী খান, এড. মনসুর আহমেদ, এড. সামছুল হক (১), এড. সামছুল হক (২), অধ্যক্ষ মো. মতিউর রহমান, এড. হাসান আওরঙ্গী, রুহুল আমিন, শেখ তবিবুর রহমান, এড. শামসুর রহমান, সাবেক চেয়ারম্যান নূর মোহাম্মদ খাঁ, আব্দুল মোতালেব, সাবেক কমিশনার এনছার আলী সরদার ও ডা. আফতাবুজ্জামান।


Comments are closed.

ইমেইল: arahmansat@gmail.com
Design & Developed BY CodesHost Limited
Raytahost Facebook Sharing Powered By : Raytahost.com