July 27, 2024, 2:27 am

সাংবাদিক আবশ্যক
সাতক্ষীরা প্রবাহে সংবাদ পাঠানোর ইমেইল: arahmansat@gmail.com
সাতক্ষীরা সরকারি শিশু পরিবারে শিশুদের নির্যাতনের অভিযোগে ছয় কর্মচারির নামে মামলা

সাতক্ষীরা সরকারি শিশু পরিবারে শিশুদের নির্যাতনের অভিযোগে ছয় কর্মচারির নামে মামলা

স্বাপন দাশ: সাতক্ষীরা সরকারি শিশু পরিবার বা এতিমাখানায় যৌন হয়রানি ও নির্যাতনসহ বিভিন্ন অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগে থানায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। সাতক্ষীরা সদর উপজেলার লাবসা গ্রামের এক এতিমের মা বাদি হয়ে গত সোমবার সাতক্ষীরা সদর থানায় এ মামলা দায়ের করেন মামলার আসামীরা হলেন সাতক্ষীরা সরকারি এতিমখানা বা শিশু পরিবারের এমএলএসএস গোপালগঞ্জ জেলার কাশিয়ানি উপজেলার সিংগা গ্রামের বিমল বৈরাগীর ছেলে বিমল বৈরাগী, ওই প্রতিষ্ঠানের বাবুর্চি কৌশিক ফরহান, কর্মচারি নওগাঁ জেলা সদরের উকিলপাড়ার মোজাফফর হোসেনের ছেলে আব্দুলাহ আল মাহমুদ বিন (বড় ভাইয়া), সাতক্ষীরার আশাশুনি উপজেলার প্রতাপনগর গ্রামের খলিলুর রহমানের ছেলে তানভির হোসেন ও একই উপজেলার মাড়িয়ালা গ্রামের আব্বাস আলীর ছেলে মোস্তফা মো. নুরুজ্জামান। এদিকে ২০১৭ সালের ২ জুলাই বলাৎকার, নির্যাতন ও নিপীড়নের ঘটনার দু’বছর তিন মাস আঠারো দিন পরে মামলা হলেও তাকে স্বাগত জানিয়েছে সাতক্ষীরার সচেতনমহল। একই সাথে তারা দোষীদের অবিলম্বে গ্রেপ্তার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন।ঘটনার বিবরণে জানা যায়, ২০১৭ সালের ২ জুলাই রাত সাড়ে সাতটার দিকে সাতক্ষীরা সরকারি এতিমখানা বা শিশু পরিবারের শিশু এক শিশুকে কর্মচারি আব্দুলাহ আল মাহমুদ বিন (বড় ভাইয়া) তার নিজের কক্ষে ডেকে বলাৎকারের চেষ্টা করেন। বাঁধা দেওয়ায় তাকে মারপিট করে জখম করা হয়। একপর্যায়ে তাকে জোরপূর্বক বলাৎকার করা হয়। বিষয়টি কাউকেনা জানানোর জন্য এতিমখানার অন্য কর্মচারিরা তাকে জীবননাশের হুমকি দেয়। একইভাবে কর্মচারি তানভির হোসেন ওই শিশুকে বলাৎকার করে। এ ছাড়া ওই এতিমাখানায় তেল মশলা বিহীন রান্না, শিশুদের পঁচা ও বাসী খাবার খাওয়ানো হয়। আপত্তি করলে ওই খাবার জোর করে খাওয়ানো হতো। তাদেরকে পুরাতন জামা কাপড় পরতে বাধ্য করা হতো। এ সব ঘটনার প্রতিবাদে গত ২০১৭ সালের ২ জুলাই রাতে এতিমাখানার শিশুরা ফুঁসে ওঠে। একপর্যায়ে কর্মচারি ও এতিমদের মধ্যে সংঘাত শুরু হয়। খবর পেয়ে ছুঁটে যান সাংবাদিকরা। বিষয়টি নিয়ে সাতক্ষীরা সচেতন নাগরিক সমাজের ব্যানারে শহরে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ কর্মসুচি পালিত হয়। প্রতিবাদ সমাবেশে নেতৃত্ব দেন জেলা নাগরিক মঞ্চের আহবায়ক অ্যাড. ফাহিমুল হক কিসলু, সাংবাদিক হাফিজুর রহমান মাসুম প্রমুখ। বিষয়টি নিয়ে ২০১৭ সালের পহেলা আগস্ট পত্রিকায় সাতক্ষীরায় শিশু নির্যাতনের প্রতিবাদে সমাবেশ শীর্ষক এক প্রতিবেদন দেখে জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান মো. নজরুল ইসলাম তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিলের জন্য সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসককে নির্দেশ দেন। ২০১৭ সালের ৬ সেপ্টেম্বর জেলা প্রমাসক তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করেন। প্রতিবেদনে ছয় শিশুকে বলাৎকারের কথা উল্লেখ করা হয়। অভিযোগ করলেই সেই সব শিশুদের মারপিট করা হতো বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়। প্রতিবেদনে বিমান বৈরাগীর বিরুদ্ধে শিশুদের যৌন নির্যাতনের অভিযোগ ও আব্দুলাহ আল মাহমুদ বিন, তানভির হোসেন মোস্তফা মোহাম্মদ নুরুজ্জামান ও কৌশিক ফাহাদ আলীর বিরুদ্ধে শিশুদের নির্যাতনের অভিযোগ ওঠে। প্রতিবেদনে বিমান বৈরাগীর বিরুদ্ধে বদলীসহ শাস্তিমূলক বিভাগীয় ব্যবস্থা অপর দোষীদের বিরুদ্ধে জেলার বাইরে বদলীর সুপারিশ করা হয়।অভিযোগ, প্রতিবেদন ও পারিপার্শ্বিক অবস্থা বিবেচনায় অভিযুক্ত বিমান বৈরাগীর বিরুদ্ধে শিশুর প্রতি যৌন নিপীড়নের ও শিশুর প্রতি বর্বরতার অভিযোগ প্রাথমিকভাবে প্রমাণিত হওয়ায় কমিশন কর্তৃক জেলায় নিয়োজিত প্যানেল আইনজীবীর মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট জেলার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে অথবা জেলা শিশু আদালতে মামলা দায়েরের ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশনা দেওয়া হয়।সে অনুযায়ি জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের নিযুক্ত প্যানেল আইনজীবী শেখ মোস্তাফিজুর রহমান শাহনেওয়াজ বলাৎকার হওয়া শিশুর পক্ষে সোমবার সাতক্ষীরা সদর থানায় এ মামলা করান। মামলা নং ৬১ তারিখ ২১.১০.১৯ জিআর ৬৮১/১৯ (সদর)।মামলার তদন্তকারি কর্মকর্তা পুরাতন সাতক্ষীরা ফাঁড়ির ইনচার্জ উপপরিদর্শক রবীন ম-ল জানান, আসামীদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।


Comments are closed.

ইমেইল: arahmansat@gmail.com
Design & Developed BY CodesHost Limited
Raytahost Facebook Sharing Powered By : Raytahost.com