July 27, 2024, 4:10 am

সাংবাদিক আবশ্যক
সাতক্ষীরা প্রবাহে সংবাদ পাঠানোর ইমেইল: arahmansat@gmail.com
১৪ বছর ধরে আইনের মারপ্যাঁচে আটকে আছে সাংবাদিক শামছুর রহমান কেবল হত্যা মামলা

১৪ বছর ধরে আইনের মারপ্যাঁচে আটকে আছে সাংবাদিক শামছুর রহমান কেবল হত্যা মামলা

নিজস্ব প্রতিনিধি: যশোরের শহীদ সাংবাদিক শামছুর রহমান কেবল হত্যাবার্ষিকী আজ। দীর্ঘ ১৯ বছরেও এ হত্যা মামলার বিচার সম্পন্ন হয়নি। গত ১৪ বছর ধরে আইনের মারপ্যাঁচে আটকে আছে বিচার প্রক্রিয়া। এ হত্যাকান্ডের বিচার না হওয়ায় ক্ষুব্ধ নিহতের পরিবার ও যশোরের সাংবাদিক সমাজ। যদিও সরকার চাইলেই এ হত্যাকান্ডের বিচার প্রক্রিয়া শুরু করা সম্ভব বলে মন্তব্য আইনজীবীদের। এরই মধ্যে দিয়ে আজ (১৬ জুলাই) নির্মম এ হত্যাকান্ডের ১৯তম বার্ষিকী উপলক্ষে নানা কর্মসূচী গ্রহণ করা হয়েছে। প্রথিতযশা সাংবাদিক শামছুর রহমান কেবল ২০০০ সালের ১৬ জুলাই রাতে জনকন্ঠ যশোর অফিসে কর্মরত অবস্থায় সন্ত্রাসীদের গুলিতে নিহত হন।মামলা সূত্রে জানা গেছে, ২০০০ সালের ১৬ জুলাই রাতে সাংবাদিক শামছুর রহমান খুন হবার পর ২০০১ সালে সিআইডি পুলিশ এই মামলায় ১৬ জনকে অভিযুক্ত করে আদালতে চার্জশিট জমা দেয়। পরবর্তীতে বিএনপি-জামায়াত জোট সরকার ক্ষমতায় আসার পর কয়েক আসামির আগ্রহে মামলার বর্ধিত তদন্ত করে শামছুর রহমানের ঘনিষ্ট বন্ধু সাংবাদিক নেতা ফারাজী আজমল হোসেনকে অভিযুক্ত করে আদালতে সম্পুরক চার্জশিট জমা দেয় হয়।একইসাথে মামলার গুরুত্বপূর্ণ সাক্ষীকে বাদ দিয়ে সাক্ষী করা হয় আসামিদের ঘনিষ্টজনদের। এতে মামলার বিচার প্রক্রিয়া বিলম্বিত হয়। এরপর বিতর্কিত ওই বর্ধিত তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেয়ার পর ২০০৫ সালের জুন মাসে যশোরের স্পেশাল জজ আদালতে এই মামলার চার্জ গঠন হয়। ওই বছরের জুলাই মাসে বাদীর মতামত ছাড়াই মামলাটি খুলনার দ্রুত বিচার আদালতে স্থানান্তর করা হয়। এ অবস্থায় মামলার বাদী শহীদ শামছুর রহমানের সহধর্মিনী সেলিনা আকতার লাকি বিচারিক আদালত পরিবর্তনের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে ২০০৫ সালের সেপ্টেম্বরে হাইকোর্টে আপিল করেন।আপিল আবেদনে তিনি উল্লেখ করছেন, মামলার অন্যতম আসামি খুলনার শীর্ষ সন্ত্রাসী হিরক পলাতক রয়েছে। হিরকসহ সংশ্লিষ্ট মামলার অন্যান্য আসামিদের সাথে খুলনার সন্ত্রাসীদের সখ্যতা রয়েছে। ফলে বাদীর পক্ষে খুলনায় গিয়ে সাক্ষী দেয়া খুবই ঝুঁকিপূর্ণ। বাদীর এই আপিল আবেদনের প্রেক্ষিতে হাইকোর্ট মামলাটি কেন যশোরে ফিরিয়ে দেয়া হবে না তার জন্য সরকারের উপর রুলনিশি জারী করেন। এরপর মামলায় বর্ধিত তদন্তে সংযুক্ত আসামি ফারাজী আজমল হোসেন উচ্চ আদালতে একটি রীট করেন। সেই রীটের নিষ্পত্তি না হওয়ায় মামলার সমস্ত কার্যক্রম স্থগিত রয়েছে।যশোরের পাবলিক প্রসিকিউটর এড. রফিকুল ইসলাম পিটু জানান, উচ্চ আদালতের নির্দেশের কারণে শামছুর রহমান হত্যা মামলার বিচারকাজ বন্ধ হয়ে আছে। আমাদের প্রত্যাশা আপিলের দ্রুত নিষ্পত্তি হয়ে মামলার কার্যক্রম আবার শুরু হবে।বর্তমানে এ মামলার চার্জশিটভুক্ত ১৬ জনের মধ্যে খুলনার শীর্ষ সন্ত্রাসী মুশফিকুর রহমান হিরক পুলিশের খাতায় পলাতক রয়েছে। আরেক আসামি খুলনার ওয়ার্ড কমিশনার আসাদুজ্জামান লিটু র‌্যাবের ক্রসফায়ারে, কোটচাঁদপুর উপজেলা চেয়ারম্যান নাসির উদ্দিন কালু হার্টস্ট্রোকে এবং যশোর সদরের চুড়ামনকাটির আনারুল প্রতিপক্ষের হামলায় মারা গেছেন। বাকী আসামিরা জামিনে আছে।এদিকে দীর্ঘদিনেও চাঞ্চল্যকর এ মামলাটির বিচার না হওয়ায় নিহতের পরিবার ও সাংবাদিক সমাজে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। বর্তমান সরকার ক্ষমতাসীন হবার পর নিহতের পরিবার ও সাংবাদিক সংগঠনগুলোর পক্ষ থেকে দাবি তোলা হয় পুরনো বিতর্কিত তদন্ত বাতিলপূর্বক মামলাটি পুনঃতদন্তের।শামছুর রহমানের ১৯তম হত্যাবার্ষিকী উপলক্ষে যশোর সাংবাদিক ইউনিয়ন (জেইউজে) দিনব্যাপি কর্মসূচি গ্রহণ করেছে। এছাড়া প্রেসক্লাব যশোরের উদ্যোগে দোওয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হবে। যশোর সাংবাদিক ইউনিয়নের কর্মসূচিতে প্রধান অতিথি হিসেবে প্রধানমন্ত্রীর সাবেক তথ্য উপদেষ্টা ইকবাল সোবহান চৌধুরী এবং বিশেষ অতিথি বিএফইউজে’র মহাসচিব শাবান মাহমুদের উপস্থিত থাকার কথা রয়েছে।


Comments are closed.

ইমেইল: arahmansat@gmail.com
Design & Developed BY CodesHost Limited
Raytahost Facebook Sharing Powered By : Raytahost.com