December 26, 2024, 9:35 pm
আওয়ামী লীগ সভাপতি এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে যে শুদ্ধি অভিযান শুরু হয়েছে, তা শুধুমাত্র আওয়ামী লীগের মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকবে না।
বরং সমাজের বিভিন্ন ক্ষেত্রে যারা বিভিন্ন অপরাধকর্ম এবং অনৈতিক তৎপরতার সঙ্গে জড়িত, তাদের বিরুদ্ধে এই অভিযান পরিচালিত হবে। প্রাথমিকভাবে যদিও মনে করা হচ্ছিলো যে এই অভিযান শুধু আওয়ামী লীগ বা যুবলীগের মধ্যেই থাকবে।
তবে এই শুদ্ধি অভিযানের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট নীতিনির্ধারকদের সূত্রে জানা গেছে, এই শুদ্ধি অভিযানের একটা কর্মপন্থা এবং ব্লুপ্রিন্ট তৈরি করা হয়েছে। এই ব্লুপ্রিন্ট অনুযায়ী, যারা বিভিন্ন অনিয়ম, অনৈতিক কর্মকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত থাকবে, তাদের সবাইকেই আইনের আওতায় আনা হবে এবং তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হব
সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে, দুর্গাপূজার কারণে আইন প্রয়োগকারী সংস্থার একটা ব্যস্ততা রয়েছে। পূজা মণ্ডপগুলোতে নিরাপত্তা দেওয়া এবং কোনোরকম অপ্রীতিকর ঘটনা যাতে না ঘটে- সেটা সরকারের প্রধান অগ্রাধিকার। এজন্যই পূজার পর থেকে এই অভিযান নতুনভাবে পরিচালিত হবে।
ইতিমধ্যে শুদ্ধি অভিযানে যাদেরকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে, তাদেরকে জিজ্ঞাসাবাদ করে অনেক চাঞ্চল্যকর তথ্য পাওয়া গেছে। তাছাড়া গত ৬ মাস প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে আইন প্রয়োগকারী সংস্থা এবং গোয়েন্দা সংস্থার একটি বিশেষ টিম সমাজের বিভিন্ন ক্ষেত্রে যারা অন্যায় অপরাধ করেছে তাদের ব্যাপারে অনুসন্ধান এবং তদন্ত করে তাদের সম্বন্ধে খোঁজখবর নেওয়া শুরু করে। সেই প্রেক্ষিতে প্রধানমন্ত্রীর নিউইয়র্ক সফরের আগে তারা একটি প্রতিবেদন জমা দিয়েছে।
দায়িত্বশীল সূত্রগুলোর মতে, শুধু রাজনীতির সঙ্গে জড়িতরাই নয়, প্রশাসন এবং আইনপ্রয়োগকারী সংস্থার অনেকেই অনৈতিক কর্মকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত। দুর্বৃত্তায়ন, দুর্নীতি এবং বিভিন্ন অপকর্মের একটি চক্র তৈরি হয়েছে। শেখ হাসিনা এই চক্রটি ভাঙতে চান বলে এই নির্দেশনা প্রদান করেছেন বলে আইন প্রয়োগকারী সংস্থার সূত্রে জানা গেছে। সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে যে, শুদ্ধি অভিযানের দ্বিতীয় পর্যায়ে ইসমাইল হোসেন চৌধুরী সম্রাট দৃশ্যমান হবে, তাকে আইনের আওতায় আনা হবে। একই সঙ্গে সম্রাট, খালেদ বা জি কে শামীমকে যারা পৃষ্ঠপোষকতা দিয়েছে, তাদেরও আইনের আওতায় আনা হবে।
জানা গেছে যে, এ পর্যন্ত ৫৪ জনের ব্যাংক হিসাব তলব করার একটি প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। এদের মধ্যে অর্ধেক আওয়ামী লীগের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতা, আর বাকিরা ব্যবসায়ী, প্রশাসনের পদস্থ কর্মকর্তা এবং আইন প্রয়োগকারী সংস্থার কর্মকর্তা। তবে এই শুদ্ধি অভিযানে যেন কোনোরকম আতঙ্ক তৈরি না হয়, সেই বিষয়টিও অবশ্যই লক্ষ্য রাখা হবে। অভিযুক্তদের আত্মপক্ষ সমর্থনের যথেষ্ট সুযোগও দেওয়া হবে। সুর্নির্দিষ্ট অভিযোগ ছাড়া কাউকে গ্রেপ্তার করা হবে না।
এই শুদ্ধি অভিযান প্রক্রিয়া যেন সুষ্ঠুভাবে পরিচালিত হয়, সেজন্য প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে একটি উচ্চ পর্যায়ের সেল ইতিমধ্যেই কাজ শুরু করেছে। ১০ অক্টোবরের পর থেকে শুদ্ধি অভিযানের নিয়মিত কার্যক্রম দৃশ্যমান হবে। এতে অনেক বড় বড় পরিচিত মুখ আইনের আওতায় আসবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
Comments are closed.