November 21, 2024, 8:51 am
বাগেরহাটের ঐতিহাসিক হযরত খান জাহান (র.) এর মাজারের দিঘিতে থাকা ২টি কুমিরের একটি মারা গেছে। বৃহস্পতিবার (১৯ অক্টোবর) দুপুর দিঘির দক্ষিণ-পশ্চিম কোনে পুরুষ (বড়) কুমিরটির মরদেহ ভাসতে দেখেন স্থানীয়। খবর পেয়ে পুলিশ, প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর, উপজেলা প্রশাসন, মাজার কর্তৃপক্ষ, খাদেমসহ দর্শনার্থীরা মাজার প্রাঙ্গণে ভিড় করেন। পরে বিকাল ৫টার দিকে দিঘি থেকে কুমিটিকে তোলার উদ্যোগ নেয়া হয়।
কুমিরটির মৃত্যুর কারণ জানতে ময়নাতদন্ত করা হবে বলে জানিয়েছেন জেলা ভেটেনারি কর্মকর্তা মনোহর চন্দ্র মন্ডল।
এদিকে, কুমিরের মৃত্যু নিয়ে এরই মধ্যে বিভিন্ন অভিযোগ উঠেছে। চেতনা নাশসহ ঘুমের ওষুধ খাইয়ে দীর্ঘদিন এক পাড়ে আটকে রাখার অভিযোগ করেছেন কয়েকজন। ২০০৫ সালে ভারতের মাদ্রাজ ক্রোকোটাইল ব্যাংক থেকে এই কুমির এনে এখানে ছাড়া হয়েছিল। খ্রিষ্টীয় ১৪ শতকের প্রথম দিকে নিজের শাসনামলে হযরত খানজাহান এই দিঘিতে ‘কালাপাহাড়’ ও ‘ধলাপাহাড়’ নামে দুটি কুমির ছাড়েন বলে কথিত আছে। সেই থেকে কুমির এই মাজারের ঐতিহ্য। এখানকার কুমির দেখতে দেশ-বিদেশের হাজারো দর্শণার্থী নিয়মিত বাগেরহাটে আসেন। ২০১৫ সালে ৫ ফেব্রুয়ারি ঐতিহ্যবাহী হয়রত খান জাহান (র.) এর মাজারের দিঘির শতবর্ষী কুমিরের শেষ বংশধর ‘ধলা পাহাড়’ মারা যায়। এরপর থেকে ভারত থেকে আনা ২টি কুমির ছিল এখানে। কুমিরকে এই বাগেরহাটের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের অংশ উল্লেখ করে মাজারের দিঘিতে কুমির আনার উদ্যোগ নিতে দাবি জানিয়েছেন মাজারের খাদেমরা।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে মাজারের দিঘির দক্ষিণ-পশ্চিম কোণের এক বাসিন্দা বলেন, এখানে কুমির নিয়ে ব্যবসা চলে। দিঘির কুলের অংশে বাধ দিয়ে আটকে ছোট ছোট পুকুর করা হয়েছে। পাড়ের খাদেমরা এসব করেছে। এসব পুকুরে কুমির এনে আটকে রাখা হয়। দর্শনার্থীরা কুমির দেখতে এলে তাদের কাছ থেকে টাকা আদায় করা হয়। এ জন্য একঘাটে কুমিকে রাখতে দীর্ঘদিন ধরে ঘুমের ওষুধ, চেতনা নাশকসহ নানান ধরনের উপকরণ প্রয়োগের অভিযোগ রয়েছে। কুমির মোস্তফা ফকিরের বাড়িতে করা পুকুরে মারা যায়। পরে তারা টেনে দিঘির মধ্যে নিয়ে যায়।
মাজারের প্রধান খাদেম শের আলী ফকির বলেন, কুমির আটকয় রেখে মানুষের কাছ থেকে পয়সা নেয়া হতো। এতদিন ধরে কুমির এক জায়গায় থাকে না। আমরা এ বিষয়ে বিভিন্ন সময়ে অভিযোগও করেছি। এই কুমির মেরে ফেলা হয়েছে। আমি তদন্ত পূর্বক বিচার চাই।
বাগেরহাট মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কে এম আজিজুল ইসলাম জানান, খবর পেয়ে তারা ঘটনাস্থলে এসেছেন। ২টি কুমির ছিল একটি বড় একটি ছোট। বড় টি মারা গেছে। এখানে খাদেমদের অভিযোগ আছে। কুমিরের ময়নাতদন্ত করা হবে। ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়া।
Comments are closed.