November 21, 2024, 8:43 am

সাংবাদিক আবশ্যক
সাতক্ষীরা প্রবাহে সংবাদ পাঠানোর ইমেইল: 1linenewsagency@gmail.com
জনপ্রতিনিধি বনাম প্রশাসন: নেপথ্যে কারা?

জনপ্রতিনিধি বনাম প্রশাসন: নেপথ্যে কারা?

আবার প্রশাসনের মুখোমুখি দাঁড়ালো জনপ্রতিনিধিরা। বরিশালে সিটি কর্পোরেশনের মেয়রের সমর্থকদের সঙ্গে ইউএনওর যে সহিংসতা সেটি প্রশাসন এবং জনপ্রতিনিধিদের বিরোধকে নতুন করে সামনে আনলো। বরিশালে যে ঘটনাটি ঘটেছিল তা একটি তুচ্ছ ঘটনা।প্রাথমিক যে সমস্ত তথ্য পাওয়া যাচ্ছে তাতে দেখা যাচ্ছে যে, পোস্টার ছে ড়াকে কেন্দ্র করে এরকম উত্তপ্ত পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। এইখানে উভয়পক্ষই অসহিষ্ণুআচরণ করেছেন বলেই প্রত্যক্ষদর্শীরা মনে করছেন। অনেকেই এই ঘটনাটিকে আওয়ামী লীগের কোন্দল হিসেবে দেখানোর চেষ্টা করছেন। কিন্তু পানিসম্পদ প্রতিমন্ত্রীর সঙ্গে বরিশাল সিটি কর্পোরেশনের মেয়র সাদিক আব্দুল্লাহ`র কো নো বিরোধই নেই। পানিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী বরিশাল শহরের রাজনীতির সঙ্গে মোটেও সম্পৃক্ত নন। এরকম পরিস্থিতিতে এই ঘটনা কারা ঘটালো সেটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। গত কিছুদিন ধরে জনপ্রতিনিধিদের সঙ্গে প্রশাসনের বিরোধের কথা ব্যাপকভাবে উচ্চারিত হচ্ছে। কোথাও কো থাও এই বিরোধ প্রকাশ্যে রূপ নিয়েছিল। যেমন গত বছরে ফরিদপুরে একটি নির্বাচনকে কেন্দ্র করে সেখানকার এমপি নিক্সন চৌধুরীর সঙ্গে জেলা প্রশাসকের প্রকাশ্য বিরোধ দেখা দেয়। নিক্সন চৌধুরীর কিছুকথাবার্তা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ভাইরাল হয়ে যায়। এটি আদালত পর্যন্ত গড়ায়। নির্বাচন কমিশন নিক্সন চৌধুরী এমপির বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন। পরবর্তীতে তিনি হাইকোর্ট থেকে জামিনও পান এরকম প্রকাশ্য ঘটনা ছাড়াও টুকটাক জনপ্রতিনিধিদের সাথে প্রশাসনের গোলযোগের খবর প্রায়ই পাওয়া যায়। জাতীয় সংসদের সর্বশেষ অধিবেশনে জনপ্রতিনিধিদে র পক্ষ থেকে আমলাদের ব্যাপারে তীব্র সমালোচনা করা হয়। আওয়ামী লীগের নেতা তোফায়েল আহমেদ বলেন যে, জেলার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে সচিবদের। অথচ সচিবরা যান না। তোফায়েল আহমেদের বক্তব্যের সঙ্গে সুর মিলিয়ে সরকারি দল এবং বিরোধী দলের একাধিক নেতা আমলাদের বাড়াবাড়ি এবং দাপটের তীব্র সমালোচনা করেন। একটি গণতান্ত্রিক শাসনব্যবস্থায় প্রশাসন এবং জনপ্রতিনিধির মধ্যে টানাপড়েন থাকতেই পারে এবং এই দ্বন্দ্বই গণতন্ত্রের সৌন্দর্য। কিন্তু এই দ্বন্দ্ব যেন কখনো সীমা অতিক্রম না করে সেটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। যে ঘটনাটি ফরিদপুরে ঘটেছিল এবং সর্বশেষ বরিশালে ঘটেছে। কিন্তু বিভিন্ন সূত্র থেকে প্রাপ্ত খবরে জানা গেছে যে, এই ছোট্ট ঘটনাকে কোনো কোনো মহল উসকে দিয়েছে। বড় ধরনের একটি সহিংসতার রূপ দিয়েছে। এই নেপথ্যে কারা তাদেরকে খুঁজে বের করা দরকার বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা। কারণ বর্তমান সরকারের সঙ্গে প্রশাসনের অত্যন্ত সুসম্পর্ক রয়েছে। আওয়ামী লী গ সভাপতি শেখ হাসিনা দ্বিতীয়বারের মতো ২০০৯ সালে দেশ পরিচালনার দায়িত্ব পাওয়ার পর পরই প্রশাসনের সঙ্গে একটি সুসম্পর্কতৈরি করার উদ্যোগ নেন। উন্নয়নের ধারায় সকলকে সম্পৃক্ত করার অংশ হিসেবে প্রশাসনকে সরকার পরিচালনার গুরুত্বপূর্ণস্থানে নেওয়া হয়। পাশাপাশি প্রশাসন যেনো নির্বাচনী ইশতেহার বাস্তবায়নে কাজ করে সেই উদ্যোগও নেওয়া হয়। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতন-ভাতাসহ নানা রকম সুযোগ-সুবিধা বিপুলভাবে বৃদ্ধি করেন। গত বছরের মার্চেকরোনা শুরু হলে আমলারা পাদপ্রদীপ আসেন। সরকারের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, এই সময় রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ করোনার কারণে ঘরবন্দী হয়ে পড়লে আমলারাই প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশ বাস্তবায়নে কাজ করেছিলেন এবং সেখান থেকেই প্রশাসনের ক্ষমতা এবং কর্তৃত্ব বাড়ে। কিন্তু কোনো কোনো মহল বিভিন্ন সময়ে চেষ্টা করছেন প্রশাসনের সাথে সরকারের বিরোধ বাধাতে এবং সেই ছোটখাটো ঘটনাকে উস্কে দিয়ে সেই বিরোধকে স্থায়ী রূপ দেওয়ার চেষ্টা কোনো কোনো মহল করছেন বলেও অভিযোগ পাওয়া যায়। বরিশালের ঘটনায় যারা উস্কানিমূলক কান্ড করেছেন তারা প্রশাসনের সঙ্গে সরকারের বিরোধ বাধাতে চান কিনা এবং পরিকল্পিত ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবে এটা করেছেন কিনা সেটি খতিয়ে দেখা দরকার বলে বিভিন্ন মহল মনে করছেন।


Comments are closed.

ইমেইল: arahmansat@gmail.com
Design & Developed BY CodesHost Limited
Raytahost Facebook Sharing Powered By : Raytahost.com