November 21, 2024, 8:47 am
দীর্ঘদিন ধরেই বিএনপিকে বলা হচ্ছিলো যে জামায়াতের সঙ্গে সম্পর্ক ত্যাগ করার জন্য। জামায়াতের সঙ্গে সম্পর্কের কারণেই বিএনপি আন্তর্জাতিক সমর্থন পাচ্ছিলো না। গত নির্বাচনের আগে বিএনপির নেতৃবৃন্দ যখন ভারত সফরে গিয়েছিলো তখন ভারতের পক্ষ থেকে সাফ জানিয়ে দেয়া হয়েছিলো জামায়াতের সঙ্গে সম্পর্ক ত্যাগ করতে হবে এবং তারেক জিয়াকে নেতৃত্ব থেকে বাদ দিতে হবে। দেশে ফিরে বিএনপি নেতৃবৃন্দ যখন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রসহ ইউরোপ সফর করেছিলেন সেখান থেকেও তাদেরকে জানিয়ে দেয়া হয়েছিলো জামায়াতের সঙ্গ ত্যাগ করতে।
আনুষ্ঠানিভাবে বিএনপি কখনও জামায়াতকে ত্যাগ করতে পারে নি। ২০০৮ এর নির্বাচনে জামায়াতকে ১৯টি আসন দিয়ে বিএনপি প্রমাণ করে দেয় যে, জামায়াতই বিএনপির সবচেয়ে বড় সহযোগী মিত্র। এছাড়া ওই নির্বাচনে জামায়াতের কোনো প্রতীক ছিলো না এবং জামায়াতের রাজনৈতিক দল হিসেবে নিবন্ধনও ছিলো না। ওই অবস্থায় জামায়াতকে কেন এতোগুলো আসন দেয়া হয়েছিলে সেটিও একটি বিস্ময়কর ব্যাপার।
ওই নির্বাচনের পর থেকে বিএনপি প্রকাশ্যে জামায়াতের সঙ্গে সম্পর্ক রাখছে না। ২০ দলের দুটি বৈঠকের পর গত দুবছরে আর কোনো বৈঠক অনুষ্টিত হয়নি। প্রকাশ্য সম্পর্ক না থাকলেও গোপনে জামায়াতের সঙ্গেই সম্পর্ক রাখছে এবং জামায়াতের দেখানো পথেই হাটছে তারা। গতকাল ঢাকা শহরে যে ১০টি বাসে আগুন দেয়ার ঘটনা ঘটেছে এরপর বিএনপি-জামায়াতের সম্পর্ক নতুন করে আলোচনায় এসেছে।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, জামায়াতের চিন্তাভাবনা বাস্তবায়ন করছে বিএনপি। আর বিএনপি যে জামায়াতের সঙ্গ ছাড়তে পারবে না তার প্রমাণ হলো এই বাসের আগুন লাগানোর ঘটনা।
বিএনপি মনে করছে যে, তাদের সিদ্ধান্ত এবং রাজনৈতিক কৌশল গ্রহণের দক্ষতার অভাব রয়েছে। তাছাড়া স্বাধীনতা বিরোধী ভোট ব্যাংকের জন্য জামায়াতকে তাদের প্রয়োজন। এই অবস্থায় অস্তিত্বের সংকটে থাকা জামায়াত মরিয়া হয়েছে যে বিএনপিকে দিয়ে যদি রাজপথ উত্তপ্ত করা যায় তাহলে সরকারকে কোণঠাসা করা যাবে। আর সেই পরিকল্পনা নিয়ে এগোচ্ছে তারা। এই পরিকল্পনায় রাজপথ হয়তো উত্তপ্ত হবে কিন্তু বিএনপির রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ কি হবে সেটি এক বড় প্রশ্ন বটে।
Comments are closed.