January 15, 2025, 11:32 am

সাংবাদিক আবশ্যক
সাতক্ষীরা প্রবাহে সংবাদ পাঠানোর ইমেইল: 1linenewsagency@gmail.com
তিনি অসম্ভব দৃঢ়চেতা মানুষ ছিলেন : ঋতুপর্ণা

তিনি অসম্ভব দৃঢ়চেতা মানুষ ছিলেন : ঋতুপর্ণা

‘আলো’ দিয়ে শুরু তাদের পথচলা। এরপর ‘চাঁদের বাড়ি’ এবং ‘ভালোবাসার বাড়ি’তে তরুণ মজুমদারের নায়িকা হিসাবে দেখা যায় ঋতুপর্ণা সেনগুপ্তকে। প্রিয় পরিচালকের অসুস্থতার খবর পেয়েই উদ্বেগ প্রকাশ করেছিলেন নায়িকা। আজ তার প্রয়াণের খবরে শোকবিহ্বল তিনি। অসংখ্য স্মৃতি ঘর করে আছে মনের মধ্যে। ভারাক্রান্ত মন, তবুও বিদেশে থাকায় শেষবারের মতো দর্শন করতে পারলেন না পরিচালকের। এ দিন, তিনি কলকাতার সংবাদমাধ্যমকে জানান, তরুণ মজুমদার নেই, এই কথাটা ভাবতেও খুব কষ্ট হচ্ছে। কারণ তিনি ছিলেন একটা প্রতিষ্ঠান। অনেক বড় মাপের কাজ দিয়ে তিনি দিয়ে গিয়েছেন আমাদের। তার কীর্তিতে, তার সৃষ্টিতে, মননে আমরা সমৃদ্ধ। ভারতীয় সিনেমাজগৎতে এক অন্য নিদর্শন সৃষ্টি করেছেন তরুণ মজুমদার। সিনেমাকে নতুন করে কীভাবে আবিষ্কার করতে হয়, সম্পর্ককে নতুন নিরিখে দেখতে হয়, পারিবারিক গভীরতা কতটা, প্রেমকে কী ভাবে স্পর্শ করতে হয়—আমার মনে হয় তার মতো দৃষ্টিভঙ্গি খুব কম মানুষের আছে।

তরুণ মজুমদারের সঙ্গে তিনটি সিনেমায় অভিনয় করতে পারায় নিজেকে ‘প্রিভিলেজড’ বলে উল্লেখ করে ঋতুপর্ণা বলেন, তিনি অসম্ভব দৃঢ়চেতা মানুষ ছিলেন। আমি যে তাকে কাছ থেকে দেখতে পেয়েছি, এই আমার পরম পাওনা। তরুণদার সঙ্গে তিনটি সিনেমা করেছি, যার প্রত্যেকটাই দর্শকদের মনে গভীর ছাপ ফেলে গেছে। ‘আলো’ বাংলা সিনেমার ইতিহাসে একটা নজির গড়েছে, একটা নতুন দিক সৃষ্টি করেছিল। আজও অনেকে আমায় জিজ্ঞেস করেন, আর একটা ‘আলো’ হয় না?

তার পর অসম্ভব সুন্দর একটি সিনেমা ‘চাঁদের বাড়ি’ তৈরি করেছিলেন তরুণ মজুমদার। তাতে অনেক শিল্পী ছিলেন, আমিও ছিলাম। পারিবারিক বন্ধন, ভালবাসার কীভাবে মূল্যায়ন করতে হয়, সেটা তরুণ মজুমদারের থেকে ভালো বোধ হয় কেউ জানতেন না। আর সঙ্গীত! তরুণ মজুমদারের সিনেমায় সঙ্গীতের ব্যবহার। কী অসাধারণ! রবি ঠাকুরের গানকে তিনি অন্য মাত্রা দিয়েছিলেন। তার পর তার সঙ্গে করেছিলাম ‘ভালবাসার বাড়ি’। ভালবাসার সংসার। তার ভেতরের গল্প। কী যে অসাধারণ ছিল। তাছাড়া আমার অনেক প্রিয় সিনেমা আছে যেগুলো তরুণ মজুমদারের তৈরি। যেমন- ‘দাদার কীর্তি’, ‘ভালবাসা ভালবাসা’, ‘পলাতক’, ‘গণদেবতা’। তিনি একজন অন্যমাপের পরিচালক।

কত বিষয় নিয়ে কাজ করেছেন, মানুষকে কত কিছু বুঝিয়েছেন সিনেমার মাধ্যমে। আমি অন্তর থেকে দুঃখিত। মর্মাহত। আজ অনেক দূরে আছি, বিদেশে। তাই ছুটে যেতে পারলাম না। কিন্তু আমার মন ছুটে গেছে তার কাছে। তাকে প্রণাম করে তার, আশীর্বাদ নিতে চাই এবং বলতে চাই—তুমি আবার ফিরে এসো। আবার অনেক কিছু সৃষ্টি করো। তুমি আমাদের গর্ব। তুমি আমাদের শিক্ষক। তোমাকে প্রণাম। সোমবার (৪ জুলাই) সকাল ১১টা ১৭ মিনিটে এসএসকেএম হাসপাতালে শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন তরুণ মজুমদার। দীর্ঘদিন ধরে কিডনি এবং হৃদ্‌যন্ত্রের সমস্যায় ভুগছিলেন তিনি। অবশেষে শেষ রক্ষা হল না তার। ৯১ বছর বয়সি এই গুণী নির্মাতার প্রয়াণে বাংলা চলচ্চিত্রে এক বর্ণময় অধ্যায়ের ইতি ঘটল।


Comments are closed.

ইমেইল: arahmansat@gmail.com
Design & Developed BY CodesHost Limited
Raytahost Facebook Sharing Powered By : Raytahost.com