November 21, 2024, 8:32 am

সাংবাদিক আবশ্যক
সাতক্ষীরা প্রবাহে সংবাদ পাঠানোর ইমেইল: 1linenewsagency@gmail.com
তীব্র শীতে ব্যাহত জীবনযাত্রা

তীব্র শীতে ব্যাহত জীবনযাত্রা

গত কয়েকদিন গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টির মতন ঘন কুয়াশা আর হিমেল হাওয়া অব্যাহত থাকায় নতুন করে জেঁকে বসেছে শীত। ঘন কুয়াশার সাথে শীতে তীব্র প্রকোপে জবুথুবু হয়ে পড়েছে তালা উপজেলার প্রত্যন্ত অঞ্চলের সাধারণ মানুষ। এতে বিপাকে পড়েছেন খেটে খাওয়া শ্রমিক ও নিম্ন আয়ের মানুষ। সেই সাথে নষ্ট হচ্ছে মাঠের ফসল। দরিদ্ররা শীতবস্ত্রের অভাবে নিদারুন কষ্ট দিননাতিপাত করছেন। সেই সাথে এ ঠান্ডায় কাহিল হয়ে শিশু ও বয়স্করা শীতবাহিত রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন। ঠান্ডায় ব্যাহত হয়ে পড়েছে উপজেলার সাধারণ মানুষের স্বাভাবিক জীবনযাত্রা। তালা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সূত্রে জানা যায়, তীব্র কনকনে শীতে তালা উপজেলায় শিশু ও বয়স্করা শীতবাহিত রোগ ডায়রিয়া, শ^াসকষ্ট, কাশি, অ্যাজমা, জ্বর, কোল্ড অ্যালার্জি, ম্যালেরিয়া, ফাইলেরিয়া রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন। এর মধ্য শাতকালীন রোগে অনেকে আক্রান্ত হয়ে তালা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন এবং চিকিৎসারত আছেন অনেকে। সে হিসাবে শীতকালীন সময়ে ডায়রিয়া রোগে ১৩৬ জন শিশু ও বয়স্ক রুগী চিকিৎসা নিয়েছেন। শ^াসকষ্ট রোগে চিকিৎসা নিয়েছেন ৩৪ জন্য রুগী। এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত ৪ জন শিশু ও ২ জন বয়স্ক রুগী চিকিৎসাধীন রয়েছেন। আবহাওয়া বিভাগ বলছে, চলতি মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহে সাতক্ষীরা জেলায় শৈত্যপ্রবাহ শুরু হয়েছে। যাহা চলতি মাসের তৃতীয় সপ্তাহ ও চতুর্থ সপ্তাহ পর্যন্ত থাকার সম্ভাবনা রয়েছে। সেই সাথে বাড়তে পারে তীব্র শীত ও কুয়াশা। সর্বশেষ তথ্যমতে শনিবার তালা উপজেলা সর্বনিন্ম তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ১১ ডিগ্রী সেলসিয়াস ও সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড হয়েছে ২০ ডিগ্রী সেলসিয়াস। রোববার তালা উপজেলায় সর্বনিন্ম তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ১৩ ডিগ্রী সেলসিয়াস ও সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড হয়েছে ২১ ডিগ্রী সেলসিয়াস। স্থানীয়রা জানান, বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত থেকে হিমেল হাওয়ার কারণে বাড়তি শীত অনুভূত হচ্ছে। এতে করে বাজারঘাট সন্ধ্যার আগেই মানুষ শূন্য হয়ে পড়ছে। খেটে খাওয়া শ্রমিক ও নিম্ন আয়ের মানুষ কাজে যেতে পাড়ছেন না। সেই সাথে অনেক দরিদ্র মানুষ শীতের কাপড়ের অভাবে কষ্টে আছেন। ভ্যানচালক করিম ও ইছাক শেখ বলেন, গত কয়েকদিন তীব্র শীত অনুভূত হচ্ছে। শীতের কারণে হাট বাজার জনশূন্য থাকায় আয় রোজগার নেই বললেই চলে। চাষী রফিকুল ইসলা ও রহমত গোলদার জানান, ঘন কুয়াশায় বিস্তীর্ণ এলাকা জুড়ে ফসল নষ্ট হচ্ছে। আমাদের ধানের চারা ও ধানের পাতা পচে গিয়েছে। সেই সাথে পচন ধরছে জমিতে লাগানো ফুলকপি, পাতা কপি, লাউ, কদু সহ বিভিন্ন ফসল। শীতের তীব্র প্রকোপ থাকায় কোন প্রতিকার মিলছে না। তাই চিন্তিত তারা। তালা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ হাজিরা বেগম জানান, তীব্র শীত ও কুয়াশায় ফসলের যাতে কোনো ধরনের ক্ষতি না হয় সেদিকে নজর রাখা হচ্ছে। ইতোমধ্যে প্রতিটি ইউনিয়ন মাঠ কর্মকর্তারা কৃষকদের সহযোগিতা করছেন। পাতা ঝরে যাওয়া রোধ, সবজি ও ফসলের পোকা আক্রামণ ঠেকাতে কৃষককে নানা রকমের পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।
তালা উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. রাজীব সরদার জানান, শীতজনিত রোগে আক্রান্ত হয়ে শিশু ও বয়স্করা চিকিৎসা নিচ্ছেন। বিশেষ করে গত এক সপ্তাহ ধরে এমন রোগীর চাপ বেশি এবং এতে শিশু ও বৃদ্ধরাই বেশি আক্রান্ত হচ্ছেন। শীতজনিত রোগে আক্রান্ত হওয়া এড়াতে বাড়িতে শিশু ও বৃদ্ধদের বিশেষ যত্ন নেওয়ার ওপর জোর দেওয়ার পরামর্শ প্রদান করা হচ্ছে।
এদিকে, অসহনীয় ঠান্ডার হাত থেকে শীতার্ত এই মানুষগুলোকে রক্ষায় সরকারের পাশাপাশি বেসরকারি পযার্য়ে সবাইকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়েছেন স্থানীয় এলাকাবাসী।


Comments are closed.

ইমেইল: arahmansat@gmail.com
Design & Developed BY CodesHost Limited
Raytahost Facebook Sharing Powered By : Raytahost.com