November 21, 2024, 8:41 am
ধর্মঘট প্রত্যাহারের পর সোমবার থেকে সড়ক-মহাসড়কে যথারীতি চলছে গণপরিবহন। রাজধানী থেকে মফস্বল অবধি এরই মধ্যে পৌঁছেছে ভাড়া বৃদ্ধির খবর। তবে নতুন ভাড়া সম্পর্কে এখনো স্পস্ট ধারণা হয়নি চালক, হেলপার বা যাত্রীদের। নীতিনির্ধারক পর্যায়ে নতুন ভাড়া নির্ধারণ হলেও এখনো তৈরি হয়নি রেট।
এরই মধ্যে ভাড়া বাড়িয়ে চলতে শুরু করেছে সব গণপরিবহণ। ভাড়া বৃদ্ধির কারণে যাত্রীদের মধ্যে কিছুটা ক্ষোভ রয়েছে। অপরদিকে টানা তিনদিন পর পর্যাপ্ত পরিবহণ মেলায় রয়েছে কিছুটা স্বস্তিও।
ডিজেল ও কেরোসিন তেলের দাম বাড়ায় গত তিন দিন বাস চলাচল বন্ধ রাখে বাস মালিকরা। গতকাল রোববার বিকেলে রাজধানীর বনানীতে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহণ কর্তৃপক্ষের (বিআরটিএ) সঙ্গে পরিবহণ মালিকদের বৈঠকে ভাড়া বাড়ানোর সিদ্ধান্ত হয়। এতে বাস মালিকপক্ষ ধর্মঘট প্রত্যাহার করে।
সভায় জানানো হয়, দূরপাল্লায় বাসে প্রতি কিলোমিটারে ১ দশমিক ৮০ টাকা এবং ঢাকা ও চট্টগ্রাম মহানগরীতে বাসে ২ দশমিক ১৫ টাকা করে যাত্রীভাড়া নির্ধারণ করা হয়। মিনিবাসের ক্ষেত্রে এ ভাড়া কিলোমিটারে ১ দশমিক ৬০ টাকা থেকে বেড়ে হচ্ছে ২ দশমিক ৫ টাকা। এছাড়া বাসের সর্বনিম্ন ভাড়া ১০ টাকা এবং মিনিবাসে আট টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। তবে সিএনজিচালিত বাসের ক্ষেত্রে এ ভাড়া প্রযোজ্য হবে না। এ ভাড়া শুধু ডিজেলচালিত বাসের জন্য নির্ধারিত হয়েছে বলে সভায় জানানো হয়।
এর আগে, দূরপাল্লার বাসের ক্ষেত্রে ১ দশমিক ৩৯ টাকা এবং মহানগরের ক্ষেত্রে ১ দশমিক ৭০ টাকা ভাড়া নির্ধারিত ছিল। এ হিসাবে দূরপাল্লার বাসের ভাড়া ২৭ শতাংশ এবং মহানগরীতে ২৬ দশমিক ৫ শতাংশ ভাড়া বাড়ছে।
এদিকে ঢাকা মহানগরীতে আজ সোমবার সকাল থেকে নতুন ভাড়ায় বাস চলাচলে দেখা গেছে কিছু অসামঞ্জস্যতা। সুনির্দিষ্ট কোনো রেটচার্য না থাকায় চালক-হেলপারদের মনগড়া ভাড়া নেয়া হচ্ছে। কোথাও কোথাও ১০টাকার ভাড়া ২০ টাকা, ২০ টাকার ভাড়া ৩৫ থেকে ৪০ টাকা নেয়া হচ্ছে।
যাত্রীদের অভিযোগ, সরকারের পক্ষ থেকে যত ভাড়া বাড়ানো হয়েছে, বাসগুলোতে নানা অজুহাতে তার চেয়ে বেশি ভাড়া নিচ্ছে। এছাড়া শুধু ডিজেলচালিত বাসগুলোতে নতুন ভাড়া সংযোজন করা হলেও সিএনজিচালিত বাসেও বেশি ভাড়া নেয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ যাত্রীদের।
ডিজেলের মূল্যবৃদ্ধির প্রতিবাদে গত শুক্রবার ভোর থেকে সারাদেশে পণ্য ও যাত্রীবাহী সড়ক পরিবহণে ধর্মঘট শুরু করে মালিক-শ্রমিকেরা। এর মধ্যে শনিবার বিকেল থেকে লঞ্চ চলাচলও বন্ধ করে দেন মালিকরা। তবে গতকাল রোববার রাজধানীর মতিঝিলের বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহণ কর্তৃপক্ষের (বিআইডব্লিউটিএ) কার্যালয়ে লঞ্চ মালিকদের বৈঠকে ভাড়া বাড়ানো ও ধর্মঘট প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত হয়।
ডিজেল ও কেরোসিনের দাম শতকরা ২৩ ভাগ বাড়ানোর পরিপ্রেক্ষিতে এবার লঞ্চভাড়া ৩৫ দশমিক ২৯ শতাংশ বাড়ানো হয়েছে। ভাড়া বাড়ানোর সিদ্ধান্ত হওয়ার পর লঞ্চ ধর্মঘট প্রত্যাহার করা হয়।
বিআইডব্লিউটিএ জানিয়েছে, লঞ্চ ভাড়া ১০০ কিলোমিটার পর্যন্ত এক টাকা ৭০ পয়সার পরিবর্তে দুই টাকা ৩০ পয়সা করা হয়েছে। এক্ষেত্রে ভাড়া বেড়েছে ৬০ পয়সা।
বিআইডব্লিউটিএ’র সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, ১০০ কিলোমিটারের বেশির ক্ষেত্রে এক টাকা ৪০ পয়সা থেকে বাড়িয়ে দুই টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। এক্ষেত্রেও ৬০ পয়সা করে বেড়েছে। জনপ্রতি সর্বনিম্ন ভাড়া ১৮ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৩০ টাকা করা হয়েছে।
Comments are closed.