October 31, 2024, 5:26 am
সংঘবদ্ধ মানবপচার চক্রের সক্রিয় সদস্য আজিজুল হককে (৬২) আটক করেছে সিআইডি পুলিশ। গত ৭ সেপ্টেম্বর শনিবার শ্যামনগরের বুড়িগোয়ালীনি ইউনিয়নের আবাদচন্ডিপুর পানখালী গ্রাম থেকে তাকে আটক করা হয়। সে একই গ্রামের মৃত আব্দুল লতিফ গাজীর ছেলে।দুই পুত্র আশিক গাজী (৩২), আশরাফ গাজী(২৪), পানখালীর শহীদ গাজী, ঝিকরগাছার বাঁকড়া গ্রামের আব্দুল বারেকসহ কয়েক সহযোগীকে নিয়ে তার নেৃতত্বে সংঘবদ্ধ চক্রটি দীর্ঘদিন ধরে মানবপাচার করছে বলে অভিযোগ রয়েছে।
এদিকে আজিজুলকে আটকের পর ভারত থেকে তার ছেলে আশিক জানিয়েছে এক বছর আগে পাচার হওয়া গৃহবধু বিলকিস খাতুন তানিয়াকে সাত দিনের মধ্যে পরিবারের হাতে উঠিয়ে দেয়া হবে। বিলকিছ খাতুন তানিয়াকে ভারতে পাচার এবং পতিতা পল্লীতে বিক্রির ঘটনায় এক বছর আগে দায়ের হওয়া মামলার সূত্র ধরে সিআইডি বৃহস্পতিবার আজিজুলকে আটক করে।সিআইডি ও স্থানীয় সুত্রে জানা যায় ২০১৮ সালের ২৩ জুলাই ঝিকরগাছার মহেশপাড়া গ্রামের রফিকুল ইসলামের মেয়ে বিলকিছ খাতুন তানিয়া (২১) কে সংঘবদ্ধ চক্রটি ভাল চাকরির প্রলোভন দেখিয়ে ভারতে পাচার করে। চক্রের অন্যতম সদস্য শহীদ গাজী ও আব্দুল বারেকের মাধ্যমে ভারতে নিয়ে যাওয়ার পর আজিজুল হকের ছেলে আশিক প্রথমে তানিয়াকে মুম্বাই এর একটি পতিতালয়ে বিক্রি করে। পরবর্তীতে সেখান থেকে তানিয়াকে দিল্লির অপর একটি পতিতালয়ে নিয়ে যাওয়ার পর পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করে। এসময় ভারতে অবস্থানরত সংঘবদ্ধ চক্রের সদস্যরা জামিনে মুক্ত করে এনে তানিয়াকে প্রথমে দিঘা এবং পরবর্তীতে মহারাষ্ট্রের পুনে এলাকায় আটকে রাখে।
উল্লেখ্য তানিয়াকে পাচারের ঘটনায় ২০১৮ সালের ১৫ আগষ্ট তার মা সখিনা খাতুন বাদি হয়ে একটি মামলা করে। মামলাটির তদন্তভার শুরুতে পুলিশের উপর থাকলেও সম্প্রতি তা সিআইডি’র উপর ন্যস্ত করা হয়। সিআইডি মামলা তদন্তের দায়িত্ব পেয়ে এজাহার নামীয় একজনকে আটক করলেও অল্প দিনের মধ্যে পাচার ঘটনার রহস্য উম্মোচন করে পাচার চক্রটিকে চিহ্নিত করে।
এবিষয়ে সিআইডির পরিদর্শক মো. জাকির হোসেন জানান, পাচার চক্রের সদস্যরা অত্যন্ত চতুর। তারা তানিয়াকে পাচার করে নিষিদ্ধ পল্লীতে বিক্রি করলেও কৌশলে নিজেদের প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে মামলা করতে বাধ্য করে।
তানিয়া পাচার ঘটনার রহস্য উম্মোচনকারী এ পুলিশ কর্মকর্তা আরও জানান, পিতা আজিজুল হককে আটকের পরপরই তানিয়াকে পরিবারের কাছে হস্তান্তরের বিষয়ে সম্মত হয়েছে ভারতে অবস্থানরত আশিক।
প্রসঙ্গত: সংঘবদ্ধ এ চক্রটি দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে নারী ও শিশুদের ভাল চাকরিসহ নানা প্রলোভন দেখিয়ে ভারতে পাচার করে আসছিল। তানিয়ার মতো আরও অন্তত ৭ জন নারী এ পাচার চক্রের মাধ্যমে ভারতে পাচার হয়ে বিভিন্ন নিষিদ্ধ পল্লীতে আটক রয়েছে বলে জানিয়েছে আজিজুল হক। পিতাকে আট করা গেলেও তার দুই পুত্রসহ চক্রটির সদস্য আব্দুল বারেক মিস্ত্রি ভারতে অবস্থান করছে বলে তাদের পরিবারের পক্ষ থেকে নিশ্চিত করা হয়েছে।
Comments are closed.