November 21, 2024, 6:36 am
ফেসবুকের হাজারো পৃষ্ঠার গবেষণাপত্র ও নথি ফাঁস করেছেন সাবেক কর্মী ফ্রান্সেস হাউগেন। এই গবেষণাগুলো ফেসবুক নিজস্ব খরচে অভ্যন্তরীণ ব্যবহারের জন্য করেছিল। ফেসবুক ছাড়ার পর গতকাল সোমবার তিনি মার্কিন টিভি চ্যানেল সিবিএসের ‘সিক্সটি মিনিটস’ অনুষ্ঠানে প্রথমবারের মতো প্রকাশ্যে আসেন।
ফ্রান্সেস হাউগেন এখন বলছেন, মুখ খোলার জন্য সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম প্রতিষ্ঠানটি তাঁকে ‘শেষ’ করে দেবে। তবে তাঁর ধারণা, ‘যত দিন ফেসবুক আড়ালে কাজ করে যাচ্ছে, তত দিন তারা কারও কাছে জবাবদিহি করবে না।’ সে কারণেই তিনি সামনে এসেছেন।
ভোক্তা অধিকার সুরক্ষা, পণ্য নিরাপত্তা ও তথ্যের সুরক্ষাবিষয়ক যুক্তরাষ্ট্রের সিনেট উপকমিটির কাছে সাক্ষ্য দেওয়ার জন্য ফ্রান্সেস হাউগেনের লিখিত বক্তব্য সংগ্রহ করেছে মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএন। আজ মঙ্গলবার সাক্ষ্য দেওয়ার কথা রয়েছে তাঁর। লিখিত বক্তব্য হাউগেন বলেন, ‘আমি যা করেছি, তা সঠিক এবং সাধারণের ভালোর জন্য বলেই আমার বিশ্বাস। তবে আমি জানি, ফেসবুকের সম্পদের শেষ নেই, যা ব্যবহার করে আমাকে নিঃশেষ করে দিতে পারে।’
হাউগেন যোগ করেন, ‘সামনে এসেছি, কারণ আমি একটি ভীতিকর সত্য দেখেছি। আর তা হলো বাইরে প্রায় কেউই জানে না ফেসবুকের ভেতরে কী চলছে।’
ফেসবুকের ৩৭ বছর বয়সী সাবেক এই কর্মী প্রতিষ্ঠানটির মিথ্যা তথ্যের প্রসার রোধে কাজ করা দলটিতে পণ্য ব্যবস্থাপক হিসেবে কর্মরত ছিলেন। ফেসবুকের কর্মকাণ্ডে ক্ষুব্ধ হয়ে চলতি বছর প্রতিষ্ঠানটিতে আর কাজ না করার সিদ্ধান্ত নেন। ফেসবুক ছাড়ার আগে বেশ কিছু অভ্যন্তরীণ নথি সঙ্গে নিয়ে যান তিনি। নথিগুলো প্রভাবশালী মার্কিন দৈনিক ওয়াল স্ট্রিট জার্নালকে দিলে তিন সপ্তাহ ধরে পর্যায়ক্রমে প্রতিবেদন প্রকাশ করে সংবাদমাধ্যমটি, যা ‘ফেসবুক ফাইলস’ হিসেবে পরিচিতি পায়।
‘সিক্সটি মিনিটস’ অনুষ্ঠানে হাউগেন বলেন, নথিগুলো থেকে জানা যায়, ফেসবুক যে মানুষের ক্ষতি করছে, সহিংসতা ও মিথ্যা তথ্য ছড়াচ্ছে, তা শীর্ষ নির্বাহীরা জানতেন। তবে জেনেও কোনো ব্যবস্থা নেননি। উল্টো প্রমাণ লুকানোর চেষ্টা করেছেন।
‘সিক্সটি মিনিটস’ অনুষ্ঠানটি প্রচারের পর ফেসবুকের এক মুখপাত্র সিএনএন বিজনেসকে বলেন, ‘ভুয়া তথ্য ও ক্ষতিকর কনটেন্টের প্রসার রোধে আমাদের অগ্রগতি নিয়মিত। খারাপ কনটেন্ট ছড়ানোয় আমরা উৎসাহ দিই—এমনটা বলা সত্য নয়।’
২০১৯ সালে ফেসবুকে ক্যারিয়ার শুরু করেন ফ্রান্সেস হাউগেন। এর আগে কাজ করেছেন গুগল ও পিন্টারেস্টে।
হাউগেনের প্রস্তাবিত বক্তৃতায় লেখা রয়েছে, ‘আমরা যখন বুঝতে পারলাম তামাকজাত পণ্য উৎপাদক প্রতিষ্ঠান তাদের ক্ষতিকর দিক লুকাচ্ছে, সরকার ব্যবস্থা নিল। যখন আমরা বুঝলাম আমাদের গাড়িগুলোয় সিটবেল্ট থাকাটা নিরাপদ, সরকার ব্যবস্থা নিল। আর এখন সরকার সেসব প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিচ্ছে, যেগুলো আসক্তিবিষয়ক তথ্য লুকাচ্ছে। এ ক্ষেত্রে (ফেসবুক) আমি ঠিক সেটাই করতে বলছি।’
Comments are closed.