November 21, 2024, 9:00 am
বিনা অপরাধে তিন বছর জেলখাটায় টাঙ্গাইলের পাটকল শ্রমিক জাহালামকে ১৫ লাখ টাকা ক্ষতিপূরণ দেয়ার জন্য ব্র্যাক ব্যাংককে নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। ঋণ জালিয়াতির অভিযোগে দুদকের মামলায় ঠাকুরগাঁওয়ের সালেকের বদলে ওই জেলখাটেন নিরপরাধ জাহালাম।
এ ঘটনার জন্য ব্র্যাক ব্যাংককে দায়ী করা হয়। আর এক মাসের মধ্যে ক্ষতিপূরণের টাকা দেয়ার জন্য ব্র্যাক ব্যাংকের প্রতি নির্দেশ দেয়া হয়। ৩০ সেপ্টেম্বর, বুধবার বিচারপতি এফ আর নাজমুল আহসান ও বিচারপতি কে এম কামরুল কাদেরের বেঞ্চ এ রায় প্রদান করেন।
এ সময় ব্র্যাক ব্যাংকের পক্ষে আইনজীবী আনিসুল হাসান আদালতে উপস্থিত ছিলেন। আর সোনালী ব্যাংকের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী জাকির হোসেন। আর রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এবিএম আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ বাসার ও সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল এম সাইফুল আলম।
এই রায়ের পর দুদকের আইনজীবী খুরশীদ আলম খান জানান, জাহালমকে ক্ষতিপূরণ দেয়ার প্রশ্নে জারি করা রুল কিছু পর্যবেক্ষণ সহকারে নিষ্পত্তি করে রায় দিয়েছেন হাইকোর্ট। রায়ে ব্র্যাক ব্যাংককে দায়ী করা হয়েছে। আর ৩০ দিনের মধ্যে জাহালমকে জরিমানা বাবদ ১৫ লাখ টাকা দিতে বলা হয়েছে। এছাড়া ভবিষ্যতে এ ধরনের ভুল ভ্রান্তি যাতে না হয় সেজন্য দুদককে সতর্ক থাকতে বলা হয়।
জানা গেছে, ২০১২ সালের এপ্রিলে সোনালী ব্যাংকের সাড়ে ১৮ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে ৩৩টি মামলা করে দুদক। দুদক তদন্ত করে জানায়, জালিয়াত চক্র সোনালী ব্যাংকের ক্যান্টনমেন্ট শাখায় আবু সালেকসহ তিনজনের হিসাব থেকে ১০৬টি চেক ইস্যু করে। চেকগুলো ১৮টি ব্যাংকের ১৩টি হিসাবে ক্লিয়ারিংয়ের মাধ্যমে জমা করা হয়। এভাবে ১৮ কোটি ৪৭ লাখ টাকা আত্মসাৎ করা হয়।
আরো জানা গেছে, ওই ১৮টি ব্যাংকের একটি হলো ব্র্যাক ব্যাংক। কিন্তু তদন্ত কর্মকর্তাদের ভুলে সালেকের বদলে টাঙ্গাইলের জাহালমকে গ্রেপ্তার করা হয়। তাকে ‘আবু সালেক’ হিসেবে শনাক্ত করেছিলেন ব্র্যাক ব্যাংকের দুই কর্মকর্তা। সে কারণে ব্র্যাক ব্যাংককে এই জরিমানা দিতে বলা হয়।
প্রসঙ্গত, গত বছর ৩৩ মামলায় ‘ভুল’ আসামি জেলে ‘স্যার, আমি জাহালম, সালেক না’ শিরোনামে একটি সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদনে নিরাপরাধ জাহালমকে ফাঁসিয়ে দেয়ার অভিযোগ তুলে ধরা হয়। এই প্রতিবেদন নজরে আনার পর গত বছরের ৩ ফেব্রুয়ারি জাহালমকে মামলা থেকে অব্যাহতি দিয়ে তাকে তাৎক্ষণিক কারামুক্তির নির্দেশ দেন হাইকোর্ট। এরপর ওই রাতেই জাহালমকে কারাগার থেকে মুক্তি দেয়া হয়। এর ধারাবাহিকতায় জাহালমকে ক্ষতিপূরণ দিতে হাইকোর্ট রুল জারি করেন যে রুলের ওপর ১২ ফেব্রুয়ারি শুনানি শেষ হয়।
Comments are closed.