November 21, 2024, 8:38 am
রূপগঞ্জে সজীব গ্রুপের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান হাসেম ফুড লিমিটেড কারখানায় অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় একটি ফ্লোর থেকেই শুক্রবার ৪৯টি মরদেহ উদ্ধার করেছে ফায়ার ব্রিগেডের কর্মীরা। ফায়ার সার্ভিস হেড কোয়ার্টারের উপ-পরিচালক অপারেশন এন্ড মেইটেনেন্স দেবাশীষ বর্মণ এই তথ্য নিশ্চিত করে জানান, ৪র্থ তলা থেকে ৪৯ জনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। এমন ভাবে পুড়ে গেছে তাদের পরিচয় শনাক্ত করা সম্ভব হচ্ছে না। আমরা পর্যায় ক্রমে ৫ম ও ৬ষ্ঠ তলা তল্লাশী করে দেখবো আর কোনো মরদেহ আছে কি না। এখন বলা যাচ্ছে না। প্রতিষ্ঠানের চারতলা থেকে এই মররদেহগুলো প্যাকেট করেছেন তারা। সেখানে লাচ্ছি ও লিচু সেকশন ছিল। প্রসঙ্গত সেজান জুস কারখানায় আগুনে ৫২ মৃত্যু।
নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ উপজেলায় সজীব গ্রুপের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান সেজান জুস কারখানায় ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় কারখানার ভেতর থেকে এক এক করে মরদেহ বের করে আনা হচ্ছে। ইতোমধ্যে ৪৯টি পোড়া মরদেহ বের করা হয়েছে এবং মরদেহগুলো ফায়ার সার্ভিসের তিনটি অ্যাম্বুলেন্সে করে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে মর্গে। এর আগে, তিনজনের নিহত হওয়ার খবর নিশ্চিত হওয়া যায়। আহত হয় অন্তত ৫০ জন। শুক্রবার দুপুরে গণমাধ্যমকে এ তথ্য জানিয়েছে ফায়ার সার্ভিস। জেলা ফায়ার সার্ভিসের উপ-পরিচালক আব্দুল আল আরিফিন মরদেহ উদ্ধারের বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, ফায়ার সার্ভিসের গাড়িতে ৪৯ জনের মরদেহ উদ্ধার করে হাসপাতালে নেয়া হয়েছে। তবে এই সংখ্যা আরো বাড়বে বলে জানান তিনি।
এর আগে বেলা ১১টায় নিখোঁজ শ্রমিকদের দ্রুত সন্ধান চেয়ে ওই কারখানায় হামলা ও ভাঙচুর চালিয়েছেন নিখোঁজদের স্বজনরা। এ সময় আটটি মোটরসাইকেল ও ১৫ থেকে ২০ যানবাহন ভাঙচুর করা হয়েছে। বিক্ষুব্ধ শ্রমিকদের সাথে পুলিশের ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া ও সংঘর্ষ হয়েছে। এ সময় বিক্ষুব্ধ শ্রমিকরা হাসেম ফুড লিমিটেডের আনসার ক্যাম্পে হামলা চালিয়ে সংরক্ষণাগার থেকে তিনটি শর্টগান লুট করে নিয়ে যায়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে কাঁদানে গ্যাসের শেল নিক্ষেপ করেছে পুলিশ। এর আগে, বৃহস্পতিবার বিকাল সাড়ে ৫টার দিকে ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের কর্ণগোপ এলাকায় হাশেম ফুডস অ্যান্ড বেভারেজ কারখানায় এ আগুন লাগে। খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের ১১টি ইউনিট ঘটনাস্থলে পৌঁছে আগুন নেভানোর কাজ শুরু করে।
শ্রমিক ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, কর্ণগোপ এলাকায় সেজান জুস কারখানায় প্রায় সাত হাজার শ্রমিক কাজ করেন। সাত তলা ভবনে থাকা কারখানাটির নিচ তলার একটি ফ্লোরের কার্টন থেকে হঠাৎ আগুনের সূত্রপাত ঘটে। এক পর্যায়ে আগুন পুরো ভবনে ছড়িয়ে পড়ে। এ সময় কালো ধোয়ায় কারখানাটি অন্ধকার হয়ে যায়। এক পর্যায়ে শ্রমিকরা ছোটাছুটি করতে শুরু করে। কেউ কেউ ভবনের ছাদে অবস্থান নেন। আবার কেউ কেউ ছাদ থেকে লাফিয়ে পড়তে শুরু করেন।
কাঞ্চন ফায়ার সার্ভিসের ইনচার্জ শাহ-আলম বলেন, মধ্যরাতে আগুন কিছুটা নিয়ন্ত্রণে আসলেও সকাল ৬টার দিকে কারখানার চারতলায় আবারও আগুন বাড়তে থাকে। আগুন নিয়ন্ত্রণের আগ পর্যন্ত কিছু বলা যাচ্ছে না। আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ করছে ফায়ার সার্ভিসের ১৮টি ইউনিট।
Comments are closed.