November 21, 2024, 8:32 am
স্টাফ রিপোর্টার: মায়ের পাশে রাতভর ঘুমিয়ে থাকলেও মা ঘুনাক্ষরেও জানতে পারেনি সেখান থেকে উঠে গিয়ে পাশের রুমে মেয়েটি ঝুলে থাকতে পারে সিলিং ফ্যানের সাথে। সদাহাস্যজ্জল মেধাবী স্বর্ণার লাশ দেখে হতবিহব্বল পরিবারের সবাই। ব্যারিস্টার হবার সাধ মিটলো না স্বর্নার। আগামী রোববারের পরীক্ষায়ও বসা হলো না তার। এরই মধ্যে সকালেই বাড়ির কাজের মেয়ে তার ঘর ঝাড়ু দিতে এসেই দেখতে পান স্বর্নার নিথর দেহ ঝুলছে ছাদের সিলিংয়ের হুকের সাথে। সাতক্ষীরা শহরের খুলনা মোড়ের পাশে মধুমোল্লারডাঙ্গীতে বাবা ভূমি অফিসার আব্দুস সেলিমের বাড়িতে মর্মান্তিক এই ঘটনা ঘটে। মেধাবী ছাত্রী সুমাইয়া মেহজাবিন স্বর্না ঢাকার জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রী। বৃহস্পতিবার একটি পরীক্ষার জন্য বাবার সাথে তার ঢাকায় যাবার কথা ছিল। তার আগেই সব শেষ হয়ে গেল। রোববারের সেই পরীক্ষায় বসা হলো না তার।
স্বর্নার বাবা নড়াইল জেলার কালিয়া উপজেলার ভূমি অফিসার আব্দুস সেলিম জানান, আমি ছিলাম কর্মস্থলে। মঙ্গলবার রাতে পড়া শেষ করে স্বর্না তার মায়ের সাথে ঘুমিয়ে ছিল। ভোরে কোন এক সময়ে মায়ের পাশ থেকে উঠে নিজের ঘরে যায় সে। আজ ছুটির দিন হওয়ায় সবাই বেশীক্ষন ঘুমিয়ে ছিলেন। সকাল ১০ টার দিকে কাজের মেয়ে ঝাড়– দিতে স্বর্নার ঘরে ঢুকতেই দেখতে পায় তার মরদেহ। নিকটেই সদর হাসপাতালে তাকে নিয়ে যাওয়া হলে ডাক্তার স্বর্নাকে মৃত ঘোষনা করেন। পরে বিষয়টি পুলিশকে জানানো হয়। প্রতিবেশীরা জানান, স্বর্না খুব মেধাবী মেয়ে ছিল। খুব হাসিখুশী সরল সহজ স্বভাবের মেয়েটি থাকতো লেখাপড়া নিয়েই ব্যস্ত। তার লক্ষ্য ছিল ব্যারিস্টার হবার। ওর কথা অনুযায়ী আমরা জানতাম স্বর্না একদিন ব্যারিস্টার হবে। কিন্তু এখন সবই হারিয়ে গেল।
স্বর্নার বোন সাতক্ষীরা সরকারী বালিকা বিদ্যালয়ের সদ্যযোগদানকারী শিক্ষিকা সাদিয়া মেহেজাবিন সাথী জানান, তারা দুই বোন। স্বর্না ছিল ছোট। বৃহস্পতিবার সকালে তার ঢাকায় যাওয়ার কথা ছিল। সেভাবে বাড়ীতে সকল প্রয়োজনীয় কাপড়চোড় সব গুছিয়ে রেখেও ছিল সে। বিশ^বিদ্যালয়ে তার রোববারের পরীক্ষা ছিল। এরই মধ্যে তার মৃত্যুতে পরিবারের সকল স্বপ্ন্ ভেঙ্গে গেল।
সাতক্ষীরা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জানান দেলয়ার হুসেন জানান, খবর পেয়ে পুলিশ হাসপাতাল থেকে লাশ গ্রহন করি। ময়নাতদন্ত শেষে তার মরদেহ বাবা মায়ের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। তিনি বলেন, তার গলায় ফাঁসের দাগ ছিল। প্রাথমিকভাবে আমি এটাকে আত্মহত্যা বলে মনে করছি। পরিবারের দাবিও তাই। এ নিয়ে আরও তদন্ত হবে। এ ব্যাপারে সাতক্ষীরা সদর থানায় একটি অপমৃত্যু মামলা হয়েছে।
Comments are closed.