November 21, 2024, 8:48 am
বাংলাদেশকে স্বল্পোন্নত দেশের কাতার থেকে উত্তরণের সুপারিশ করেছে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদ। গত ২৩ নভেম্বর পরিষদের ৭৬তম বৈঠকের ৪০তম প্লেনারি সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। অবশ্য এটা ঐতিহাসিক অর্জন এবং বাংলাদেশের উন্নয়নের এক মাইলফলক হিসেবে চিহ্নিত হয়ে থাকবে। বাংলাদেশেই একমাত্র দেশ , যে দেশ জাতিসংঘের নির্ধারিত তিনটি মানদ- পূরণের মাধ্যমে স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উত্তরণের যোগ্যতা অর্জন করেছে। এ অর্জন বিশ্ব দরবারে এদেশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করবে এবং আরো অধিকতর উন্নয়নের যাত্রা ত্বরান্বিত করবে।
এদিকে স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে ২৪ নভেম্বর জাতীয় সংসদে বিশেষ আলোচনায় সংসদ নেতা ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন , শত বাধা অতিক্রম করে দেশ এগিয়ে যাচ্ছে। আরো এগিয়ে যেতে হবে। বাংলাদেশ সারা বিশে^ মাথা উঁচু করে চলবে। সরকার দারিদ্রের হার ২০ শতাংশে নামিয়ে আনতে সক্ষম হয়েছে। করোনা মহামারী না থাকলে দারিদ্র ১৭ শতাংশে নামিয়ে আনা যেত। তারপরও বিশ্বব্যাপী অর্থনৈতিক মান্দার মধ্যেও বাংলাদেশ দক্ষিণ এশিয়ার সবথেকে বেশি প্রবৃদ্ধি অর্জনকারী দেশ। ৪১টি অর্থনৈতিক শক্তিশালী দেশের মধ্যে বাংলাদেশ একটি।
গত ২৬ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত জাতিসংঘের কমিটি ফর ডেভলপমেন্ট পলিসি(সিডিপি) ত্রিবার্ষিক পর্যালোচনা সভায় দ্বিতয়বারের মতো স্বল্পোন্নত দেশ হতে উত্তরণের মানদন্ডে পূরণের সুপারিশ লাভ করে বাংলাদেশ। সিডিপি একই সঙ্গে বাংলাদেশকে ২০২১ থেকে ২০২৬সাল পর্যন্ত পাঁচ বছর প্রস্তুতিকালীন সময় দেবার সুপারিশ করেছিল। প্রস্তুতিকালে বাংলাদেশ স্বল্পোন্নত দেশ হিসেবে যেসব সুযোগ সুবিধা পেয়ে আসছিলো ,সেগুলো অব্যাহত থাকবে । তাছাড়া বর্তমান নিয়মে ইউরোপীয় ইউনিয়নের বাজারে বাংলাদেশ ২০২৬ সালের পর আরো তিন বছর অর্থাৎ ২০২৯ সাল পর্যন্ত শুল্ক ও কোটামুকÍ সুবিধা ভোগ করতে পারবে।
আসলে দীর্ঘ একযুগ রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা ও শেখ হাসিনার যোগ্য নেতৃত্বে দীর্ঘ সময় রাষ্ট্র ক্ষমতায় থাকার কারণে দেশ উন্নয়ন ও অগ্রগতির মহাসড়কে উঠতে সক্ষম হয়েছে। জনগণের মাথাপিছু আয় বৃদ্ধিসহ দেশে মেগা প্রকল্প বাস্তবায়ন হচ্ছে। শত অর্থনৈতিক অন্চল গঠন করে দেশি বিদেশী বিনিয়োগকারীদের আকৃষ্ট করা হচ্ছে। যোগাযোগ ব্যবস্থা উন্নয়ন ও বিদ্যুতের নিরবিচ্ছিন্ন সেবা উৎপাদন, ব্যবসা বাণিজ্যে গতি এনেছে। কর্মসংস্থান বৃদ্ধির জন্য ব্যাপক পরিকল্পনা ও বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। কাজেই আশা করা যায় বাংলাদেশ অচিরেই উন্নত দেশের কাতারে পৌঁছাবে।
তবে দেশের দুর্নীতি ও স্বজনপ্রীতিসহ মানিলন্ডারিং নিয়ন্ত্রণ করতে পারলে বাংলাদেশ খুব দ্রুত উন্নত রাষ্ট্রের সারিতে পৌঁছাবে। যদিও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দুর্নীতির বিরুদ্ধে সোচ্চার। আইন প্রয়োগকারী সংস্থাকে আরো বেশি তৎপরতার মাধ্যমে দুর্নীতি নিয়ন্ত্রণ করে দেশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করতে হবে। মনে রাখতে হবে দারিদ্রতাকে কেউ পছন্দ করে না। সাবলম্বি জাতি বিশ্বে সম্মানের সাথে মাথা উঁচু করে সবার পছন্দের পাত্র হয়ে উঠে। কাজেই দেশ প্রেমে উদ্বুদ্ধ হয়ে জাতির কল্যানে সবাইকে যার যার অবস্থান থেকে বাংলাদেশের উন্নয়নে অবদান রাখতে হবে।
Comments are closed.