November 21, 2024, 10:25 am
মহামারি করোনার মধ্যেই এলো এবারের শারদীয় দুর্গা উৎসব। এই উৎসবে ষষ্ঠী থেকে দশমী, পূজার দিনগুলোতে প্রতিদিনই চাই ভিন্ন সাজ আর আকর্ষণীয় লুক। ষষ্ঠী থেকে দশমী এই পাঁচ দিন সাজা যাবে ইচ্ছামতো। পোশাকটি হতে পারে দেশি কিংবা পাশ্চাত্য ঢঙের। তবে সাজতে হবে আপনার স্বাচ্ছন্দ্যবোধ, রুচি ও ব্যক্তিত্বের সঙ্গে মিলিয়ে। আধুনিক, ঐতিহ্যবাহী, সনাতনী যেভাবেই নিজেকে সাজান তবে তা হতে হবে স্নিগ্ধ। তাই জেনে নিন শেষ তিনদিনের পূজার সাজের প্রস্তুতি —
অষ্টমীর সাজ
অষ্টমীতে বেনারসি, সিল্ক, কাতানের মতো ভারী শাড়ি পরতে পারেন অনায়াসে। এদিন সাধারণত দিনের হালকা আর রাতে ভারী সাজা হয়। রাতে ভারী সাজের ক্ষেত্রে সাজার আগে মুখ টোনিং করে ওয়াটার বেইজ ফাউন্ডেশন দিন। এরপর ফেস পাউডার ও ব্রাউন ব্লাশন লাগান। চোখের সাজে এখন উজ্জ্বল রং খুব চলছে। পোশাকের বিপরীত রঙের বা রং মিলিয়ে দুই শেডের আইশ্যাডো লাগাতে পারেন। সবশেষে পছন্দমতো লিপস্টিক দিয়ে সাজ সম্পন্ন করুন। হেয়ারস্টাইলে চুল কোঁকড়া করার ধারা এখন জনপ্রিয়। শাড়ির সঙ্গে চুল কোঁকড়া করে খুলে বা খোঁপা করে রাখতে পারেন। আলতা, টিপ আর সিঁদুর পরে সাজে পূর্ণতা আনুন।
জমকালো সাজে নবমী
নবমীর সাজ হবে গর্জিয়াস। অষ্টমীর মতো এদিনও জামদানি, কাতান বা সিল্কের শাড়ি কিংবা সালোয়ার কামিজ পরতে পারেন। এ ধরনের পোশাকের সঙ্গে চোখে কনট্রাস্ট আইশ্যাডো এবং ম্যাচিং করে সোনালি কিংবা রুপালি হাইলাইট ভালো লাগবে।
ঐতিহ্যের সাজে দশমী
পূজার প্রাণ বিজয়াদশমী। দশমীতে সবাই সিঁদুর খেলায় মেতে ওঠে। দশমীতে লাল শাড়ি, সাদা শাড়ি লাল পাড়ের ঐতিহ্য লক্ষ করা যায়। দশমীর আয়োজনের মতো সাজপোশাকও হয় জমকালো। এদিন চোখজোড়া উজ্জ্বল রঙে কিংবা স্মোকি লুকে সাজাতে পারেন। সঙ্গে মোটা করে কাজল, আইলাইনার, মাশকারা পরুন। আবার আইলাইনার এড়িয়ে শুধু আইশ্যাডোতে চোখে গর্জিয়াস কিন্তু স্নিগ্ধ লুক আনা যায়। গালে ব্লাশন আর ঠোঁটে গাঢ় রঙের লিপস্টিক দিন। খোঁপা কিংবা খোলা চুলে জড়িয়ে নিন তাজা ফুল। চাইলে খোঁপায় গাঁজরা পরতে পারেন। হাত ভর্তি চুড়ি পরতে ভুলবেন না একেবারেই।
তবে শাড়ির সঙ্গে যেমন ভারী মেকআপ ছাড়া ভালো লাগে না তেমনি কুর্তির সঙ্গে ভারী মেকআপ বেমানান। এবারের পূজায় বৃষ্টি, গরম মিলিয়েই। তাই যারা শাড়ি পরতে চাচ্ছেন না তারা কুর্তি বা সেলোয়ার কামিজ অনায়াশেই পরতে পারেন। বেশ মানিয়ে যাবে আপনাকে। এর সঙ্গে একটু হালকা মেকআপ রাখলেই ভালো। চুলগুলো ছেড়ে রাখতে পারেন আবার একপাশে বেণী করে নিতে পারেন। আবার চাইলে খোঁপা করে প্লাস্টিকের ফুলের গাঁজরা পরে নিন। সঙ্গে কানে পরুন এন্টিকের একজোড়া দুল। ঠোঁটে গাঢ় মেরুন, ম্যাজেন্ডা কিংবা ব্রাউন লিপস্টিক। কপালে ছোট্ট একটি টিপ আপনার সৌন্দর্য বাড়িয়ে দেবে বহুগুণ।
সাজের ক্ষেত্রে মেয়েদের সাথে সাথে ছেলেরাও কিন্তু পিছিয়ে নেই। পূজার শুরুর দিন গুলোতে তারা হালকা রং এর পাঞ্জাবী ও পায়ে আরামদায়ক ফিতে যুক্ত স্যান্ডেল পরতে পারেন। আর শেষ দিন গুলোতে জমকালো পাঞ্জাবী, ফতুয়া পছন্দ করতে পারেন। যারা একটু অন্যভাবে নিজেকে উপস্থাপন করতে চান তারা ধুতি পরতে পারেন।
ছেলেরা চুলে জেল ব্যবহার করে এ দিন ভিন্ন লুক আনতে পারেন। বাজারে বিভিন্ন স্টাইলের আংটি ও ব্রেসলেট পাওয়া যায়, পরতে চাইলে হাতের জন্য পছন্দমতো ও মানানসই বেছে নিতে পারেন। তবে সাজ যেন দৃষ্টিকটু না হয় সে দিকে লক্ষ্য রাখবেন। ব্যক্তিত্বের সাথে মানানসই এমন পোশাকেই প্রাধান্য দিবেন। মনে রাখবেন, সাজসজ্জা ব্যক্তিকে কখনই বড় করে না, বরং ব্যক্তিই সাজসজ্জাকে ছাপিয়ে অনন্য সাধারণ হয়ে ওঠে।
Comments are closed.