July 27, 2024, 2:36 am
প্রতিটি গল্প থেকেই কিছু না কিছু শেখার আছে, ব্যাপার হচ্ছে আপনি শিখতে চাচ্ছেন কিনা। নতুন করে যারা উদ্যোক্তা-জীবন শুরু করতে চাচ্ছেন, তারা চাইলেই গল্পটি থেকে কিছু শিখতে পারেন। আসুন গল্প শুনি-
ছোটবেলা থেকেই মেয়েটি স্বনির্ভর হয়ে থাকতে পছন্দ করতো। নিজেই নিজের কাজ করতে ভালোবাসতো। বাবা-মায়ের আদরের মেয়ে হয়েও অন্যের কাছে কিছু চেয়ে নেওয়ার থেকে সেটা নিজেই করে নিতো ভালোবাসতো। ইংরেজিতে আমরা যেটাকে বলি সেল্ফডিপেন্ডেন্ট।
আর দশটা মেয়ের মতোই মেয়েটির স্বপ্ন ছিলো বড়ো হয়ে ডাক্তার হওয়ার। সমাজ-বাস্তবতার কাছে হার মেনে অল্প বয়সেই বিয়ের পিঁড়িতে বসে ডাক্তার হওয়ার স্বপ্ন বিসর্জন দেওয়া। সব খারাপেরও একটা ভালো দিক থাকে। এই যে ডাক্তার না হতে পারা যদি খারাপ দিক হয় তাহলে ভালো দিক হলো মেয়েটির উদ্যোক্তা হয়ে ওঠা।
জীবনের অনাকাঙ্ক্ষিত কিছু ঘটনার কারনে মেয়েটি একসময় ডিপ্রেশনে ভুগতে শুরু করে।এটা থেকে বের হওয়ার জন্য মেয়েটি নিজেকে কাজের ভিতর ডুবিয়ে রাখতে শুরু করে।তাছাড়া ছোটবেলা থেকে স্বনির্ভর থাকতে চাওয়া মেয়েটি চাইছিলো নিজেও কিছু করতে।এই স্বনির্ভর থাকতে চাওয়া আর কিছু করতে চাওয়ার তাড়না থেকেই মেয়েটির উদ্যোক্তা জীবন শুরু করা।
প্রথমে ৭/৮ হাজার টাকার বেকিং এর জিনিস এবং সাথে আরো কিছু জিনিস কিনে মেয়েটির পথচলা শুরু।
কিন্তু সেগুলা কোনো কাজে লাগেনি। পরে ভালো করে সবকিছু বুঝে নতুন করে ২ হাজার টাকা দিয়ে শুরু।
নতুন যারা উদ্যোক্তা হতে চাচ্ছেন তারা চাইলে এটা থেকে শিক্ষা নিতে পারেন। নতুন যারা উদ্যোক্তা জীবন শুরু করতে চাচ্ছেন তাদের উচিত মার্কেট যাচাই করে, নিজে যে কাজ পারেন সেই বিষয়ে দক্ষ হয়ে তারপর শুরু করা। না হলে হেরে যাওয়ার সম্ভাবনাই বেশি। মেয়েটি প্রথমে ৭ হাজার টাকা দিয়ে শুরু করেও কিছুই করতে পারেনি,কারন মেয়েটি তখন না বুঝেই শুরু করেছিলো, পরে বুঝে দক্ষ হয়ে ২ হাজার টাকায় শুরু করেই মেয়েটি এখন একজন সফল উদ্যোক্তা। এখন পর্যন্ত মেয়েটির মোট সেল (বিক্রি) প্রায় দুই লাখ টাকার কাছাকাছি। তবে সব থেকে আনন্দের বিষয় মেয়েটির এখন সঞ্চয়ও আছে, যেটা মেয়েটির একান্ত নিজেস্ব উপার্জনের টাকা।
প্রথম তেমন কোনো সমস্যা না হলেও মেয়েটি যখন অনলাইন থেকে উপার্জন করতে শুরু করে, তখন আশে-পাশের কিছু লোক মেয়েটির ফ্যামিলিতে এমন কিছু কথা বলতে শুরু করে, যার জন্য একসময় মেয়েটির পাশ থেকে সবাই সরে যায়, এমনকি মেয়েটির স্বামীও। এর ফলে মেয়েটি এমন কিছু সমস্যায় পড়েছিলো যে কারনে ১৫-২০ দিনের মতো অনলাইন বিজনেস ছেড়ে দিতে হয়েছিলো। তারপর মেয়েটি ইমরান স্যারের পরামর্শ নিয়ে ফ্যামিলির ইচ্ছের বিরুদ্ধে গিয়েই আবার শুরু করে।
এখন আলহামদুলিল্লাহ সবাই মেয়েটির পাশে আছে।
এই সব কিছুর কৃতিত্ব মেয়েটি দিয়েছে তার স্বামীকে যে না থাকলে হয়তো মেয়েটির উদ্যোক্তা হওয়াই হতো না। পাশাপাশি ধন্যবাদ জানিয়েছে শেখ ইমরান হোসেন স্যারকে। যিনি বারবার সাহস যুগিয়েছেন, থেমে না গিয়ে কাজ করার জন্য প্রেরণা যুগিয়েছেন।
মেয়েটি বর্তমানে কাজ করছে নাডু, মিষ্টি, বিভিন্ন ধরনের ডেজার্ট আইটেম,খাঁটি ঘি,মাখন এবং শাড়ি, থ্রি-পিছ, বোরকা, বেবি-ড্রেস, হিজাব নিয়ে।
“সাতক্ষীরা অনলাইন শপ”-গ্রুপের সাথে মেয়েটির পথচলা শুরু ১০ই আগষ্ট,২০২০ ইং তারিখে।
মেয়েটির নাম – আল আসমা উল হুসনা
পেইজ– Fresh foodie kitchen এবং ∆রিফাতুল অনলাইন কালেকশন
লিখেছেনঃ সাতক্ষীরা অনলাইন শপের উদ্যোক্তা নার্গিস সুলতানা
নার্গিসের পেজের নামঃ লিপির আয়োজন
কৃতজ্ঞতায়ঃ
শেখ ইমরান হোসেন
এডমিনঃ ফেইসবুক গ্রুপ Satkhira Online Shop
পরিচালকঃ সাতক্ষীরা অনলাইন শপ
Comments are closed.